Ajker Patrika

বানভাসিদের সহায়তায় রাবি শিক্ষার্থীদের গান

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জুন ২০২২, ১৪: ৫১
বানভাসিদের সহায়তায় রাবি শিক্ষার্থীদের গান

দুপুরের খাবারের সময়। ক্লাস শেষে ঘর্মাক্ত দেহে যে যাঁর মতো খেতে যাচ্ছেন। এমন সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিবহন মার্কেটে চোখে পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর জটলা। তাঁদের কারও হাতে বেহালা, কারও হাতে গিটার, কারও হাতে বাঁশি। আবার একজনের কাছে একটি হারমোনিয়াম। পাশেই একটি ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন দুজন।

ব্যানারে লেখা ‘সিলেটের বন্যাদুর্গতদের সাহায্যের আহ্বানে সংগীত সমাবেশ’। তাঁরা সবাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা শুরু করেন সিলেটের বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের গান। মুহূর্তে জড়ো হতে লাগলেন শিক্ষার্থীরা। কয়েকটি ছোট ছোট বক্স নিয়ে দর্শকদের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইছেন কয়েকজন।

বাক্সে লেখা ‘সুনামগঞ্জে বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ তহবিল।’ দর্শকেরা গান শুনছেন আর যে যাঁর সাধ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এ যেন ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’র মতো ‘কনসার্ট ফর সিলেট, সুনামগঞ্জ’।

এক মাস যেতে না যেতেই দ্বিতীয়বার বন্যায় পানিবন্দী হয়ে আছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জবাসী। অসহায় সিলেটবাসী। দেখা দিয়েছে খাবার ও নিরাপদ পানির তীব্র সংকট। দেশবাসীর কাছে তাই সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন এই শিক্ষার্থীরা। আর বানভাসিদের সাহায্যের জন্য পথে পথে গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করছেন।

ফোকলোর বিভাগের রিতু খাতুন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্লাস শেষে খেতে যাচ্ছিলাম। পরিবহন মার্কেট আসতেই দেখি গান হচ্ছে। আর দর্শকেরা তাঁদের ঘিরে রেখেছে। কৌতূহল নিয়ে কাছে যেতেই বুঝতে পারলাম বন্যার্তদের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের এই ব্যতিক্রমী আয়োজন। কিছুক্ষণ গান শুনে নিজের সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য করলাম। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’

সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী আশফাক অনিক বলেন, ‘সিলেট-সুনামগঞ্জের অগণিত মানুষের বাড়িতে পানি উঠেছে। অনেক মানুষ গৃহহীন। আমরা যত দিন পারি এভাবে গান গেয়ে টাকা তুলব। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে গান গাচ্ছি। ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হেঁটে হেঁটে গান গাইব। যতটুকু পারি, দুর্গতদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করব। আমরা তাঁদের পাশে থাকব।’

ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী পাপড়ি সাহা বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ শুরু করেছি। এখানে কিছুক্ষণ গেয়ে আমরা শহরে যাব। কয়েক দিন আমরা এই কর্মসূচি চালাব। সেখান থেকে উত্তোলিত অর্থ আমরা বিশ্বস্ত কোনো সংগঠনের হাতে তুলে দিব। সবাই যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে মোটা অঙ্কের টাকা বানভাসিদের আমরা সহযোগিতা করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত