পাবনায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে এক কৃষকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে পাঁচটি গরু, স্বর্ণালংকার ও দুই লাখ টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গত সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরভবানীপুর গ্রামের নাঈম ইসলাম নায়েব।

আহত তিনজন হলেন ভুক্তভোগী কৃষকের বাবা মাজেদ আলী প্রামাণিক (৬৫), মা নাজমা খাতুন (৫৫) ও স্ত্রী সালমা আক্তার (৩৫)।

অভিযুক্ত আতাহার মণ্ডল পাবনার সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়ার হরিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নাঈম ইসলাম নায়েবের চাচা রহমত প্রামাণিকের সঙ্গে তাঁদের দাদার সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। জমি মাপা নিয়ে গত সোমবার সকালে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের জন্য রহমত প্রামাণিক অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের শরণাপন্ন হলে আতাহার মণ্ডল কৃষক নায়েবের বাড়িতে গিয়ে নানা হুমকি ও চাপ প্রয়োগ করেন।

নাঈম ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, চাপে নতি স্বীকার না করায় রাতে ইউপি সদস্য আতাহার মণ্ডলের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় পাঁচটি গরু, দুই লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেওয়া হয়। এ সময় বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা বৃদ্ধ মাজেদ প্রামাণিকসহ বাড়িতে থাকা সবাইকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আহত মাজেদ আলীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নাঈমের মা ও স্ত্রীকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

নাঈম ইসলাম আরও বলেন, এই ইউপি সদস্য পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার হলেও পাবনায় প্রভাব বিস্তার করে চলেন। জমি দখলের কথা উল্লেখ করে নাঈম ইসলাম বলেন, ‘চাচার সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ সুযোগ নিয়ে মাটি-বাণিজ্য করতে চান ওই ইউপি সদস্য। আমরা বাধা দেওয়ায় এমন হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে।’

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের ভাই-ভাতিজার মধ্যে জমিজমার বিরোধ মীমাংসা করতে গেলে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয়। পরে এ কথা যখন তাঁর লোকজন শুনতে পায় তখন তারা বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে নাঈম ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। তবে গরু, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের কথা মিথ্যা ও বানোয়াট।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী নাঈম ইসলাম নায়েব বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্তসাপেক্ষে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।