রাজকীয় ঘোড়ার দুর্দিন

সাইফুল ইসলাম সানি, সখীপুর
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ০২
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৮

এক সময় ঘোড়ার গাড়ি টমটম ছিল রাজা-বাদশা, জমিদার ও ধনাঢ্য পরিবারের বাহন। যান্ত্রিকতার এই যুগে সেই পুরোনো ঐতিহ্য টমটম এখন হারিয়ে গেছে। তবে হারিয়ে যায়নি এক সময়ের অতি প্রয়োজনীয় ঘোড়া। টগবগিয়ে চলা সেই ঘোড়া এখন চলে অতি ধীরে গতিতে। কারণ তার পীঠে অমানবিকভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত ভরের পণ্য।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকেরা বলছেন, ঘোড়ার পিঠে মালামাল বহন করাও একপ্রকারের পুরোনো ঐতিহ্য, তবে অতিরিক্ত বোঝা বহন করা সব প্রাণীর ক্ষেত্রেই অমানবিক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সখীপুরে ঘোড়া দিয়ে নিয়মিত অতিরিক্ত বোঝা বহন করা হচ্ছে। বিশেষভাবে তৈরি ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে নিয়মিত ভারী গাছ বহন করা হয়। প্রায় দেড় থেকে দুই টন ওজন নিয়ে প্রতিদিন মেঠো ও পথে চলেছে এক সময়ের এই বাহন।

একটি ঘোড়ার গাড়ি তৈরিতে ব্যয় হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এ ছাড়া একটি ভালো জাতের ঘোড়া কিনতেও লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সবমিলিয়ে ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়।

স্থানীয়ভাবেই কোনো প্রকার কারুকাজ ছাড়া শুধুমাত্র লোহা, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে দুই চাকার মালবাহী গাড়ির বডি তৈরি হয়। এ অঞ্চলের কাঁচা সড়কে কাঠ পরিবহনের জন্যই গাড়িগুলো বিশেষভাবে তৈরি করা হয়।

উপজেলার লাঙ্গুলিয়া গ্রামের ঘোড়ার গাড়িচালক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘যেসব কাঁচা রাস্তায় ট্রাক ও পিকআপ চলাচল করতে পারে না, ওই সব সড়কে আমরা ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে মালামাল পরিবহন করি। কাঁচা সড়ক এলাকায় বিশেষ করে ভারী গাছ পরিবহন করে সড়কে পৌঁছে দিই।’

তবে স্কুলশিক্ষক মতিউর রহমান ও মোজাম্মেল হকসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছোট ছোট ঘোড়াগুলোর পীঠে যে পরিমাণ কাঠ তুলে দেওয়া হয় তা প্রকৃতপক্ষেই অমানবিক। প্রতিদিন এমন দৃশ্য দেখা অনেকের কাছেই কষ্টদায়ক। বর্ষা মৌসুমে এসব গাড়ি কাঁচা রাস্তায় বেশি চলাচল করে। এতে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল জলিল বলেন, ‘ঘোড়া ওজন বইবে এটা স্বাভাবিক। তবে এ অঞ্চলের ঘোড়াগুলোকে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজন দেওয়া হয়। যা অমানবিক পর্যায়ে চলে যায়। একটি ঘোড়াকে প্রতিদিন তার ওজনের ৬ থেকে ৮ শতাংশ প্রোটিন খাওয়ানো উচিত।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত