খাল খনন নিয়ে যত অভিযোগ

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৭
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ৩৭

বরগুনার বেতাগী উপজেলায় পাঁচটি সরকারি খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার খালের পলি অপসারণের কথা শ্রমিক দিয়ে। কিন্তু খননকাজ হচ্ছে ভেকু মেশিনের সাহায্যে। মাটি ফেলার কথা খাল থেকে দূরে। কিন্তু খননের পর মাটি ফেলা হচ্ছে খালের পাড়েই। এতে বর্ষাকালে এ মাটি আবার খালেই এসে পড়বে। তা ছাড়া খাল যথাযথ গভীর করা হচ্ছে না।

কৃষকদের আরও অভিযোগ, খালের মাটি কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লোকজন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সরকারি অর্থ লুটপাটের পাঁয়তারা চলছে। কৃষকেরা উপকৃত হবেন না। তবে, সংশ্লিষ্টরা অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, বেতাগী উপজেলার সদর, হোসনাবাদ ও মোকামিয়া ইউনিয়নে পানি নিষ্কাশন এবং সংরক্ষণের জন্য তিনটি উপপ্রকল্পের মাধ্যমে পাঁচটি খাল খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ লাখ টাকা। উপজেলা এলজিইডির বাস্তবায়নে সদর, হোসনাবাদ ও মোকামিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি এ খননকাজ তদারকি করছে।

উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধিত এবং এলজিইডির ক্রাইটেরিয়া পরিপূর্ণকারী কোনো সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর তাদের কাজের প্ল্যান এবং ডিজাইন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সংস্থাটির নির্বাচিত কমিটি তখন স্থানীয়ভাবে লেবার কন্ডাক্টিং সোসাইটি (এলসিএস) তৈরি করে। সুবিধাভোগী জনগণের মাধ্যমে ১০-১৫ জনের আলাদা এলসিএস গ্রুপ করে এ কাজ বাস্তবায়ন করা হয়।

কিন্তু সরেজমিন এসব খালে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শুকনো খালের মাটি শ্রমিকেরা কোদাল দিয়ে কাটার কথা থাকলে খননকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে যন্ত্র। আর খালের পাড়েই ফেলা হচ্ছে মাটি। খালকে নালায় পরিণত করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও ভেকু মেশিনের বডির মাপ অনুযায়ী খালের প্রস্থ হচ্ছে ৬-৭ ফুট।

নালার মতো করে খনন করায় খালের পানিতে ওই পরিমাণের অর্ধেক জমিতেও সেচ দেওয়ার পানি মিলবে না বলে মনে করছেন স্থানীয় মৎস্যজীবী ও অন্য ভুক্তভোগীরা। মেশিন ব্যবহার করে মাটি কাটার ফলে কর্ম মিলছে না দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রকল্পের উদ্দেশ্য। নাম প্রকাশ না করে বেশ কয়েকজন কৃষক অনিয়মের কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেতাগী সদর ইউনিয়ন পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘খননকাজে ভেকু ব্যবহারের মতো কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতেই পারে। তবে যতটুকু সম্ভব প্রাক্কলন অনুসারেই খননকাজ হচ্ছে। গভীরতার বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়।’

এলজিইডির বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। এ মুহূর্তে যতটুকু জানি, সরকারি নিয়ম মেনেই খাল খননের কাজ হচ্ছে। তারপরও সরেজমিন দেখলে কোথায় কোথায় সমস্যা, তা বিস্তারিত পরে জানাতে পারব। মেশিন দিয়ে খননকাজের কোনো সুযোগ নেই। কেউ করে থাকলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত