জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে সরকারের এই তহবিলের টাকা ভুয়া নথি, খাসজমি দেখিয়ে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিপুল উৎসাহে।
ইক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামের এই তহবিলের বিতরণ করা ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকাই ফেরত আসেনি। সরকারি তহবিলের এমন নয়ছয়ের চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিএজি) এক প্রতিবেদনে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই তহবিল তছরুপ হয়েছে। আইনে না থাকায় ইইএফ তহবিলের টাকা আদায়ে মামলা করারও সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিবি। অবশ্য পরে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রেখে তহবিলের নাম পরিবর্তন করে অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে ইইএফ গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল উদ্যোক্তাদের ঋণের পরিবর্তে মূলধন দেওয়া। প্রকল্পে সরকারের মালিকানা রাখা হয় ৪৯ শতাংশ; বাকি ৫১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তাদের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তারপর যায় আইসিবির হাতে। পরে ২০১৮ সালের আগস্টে বিনা সুদের এই তহবিলকে ২ শতাংশ সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করে ইএসএফ নামকরণ করা হয়। এখানে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ১ হাজার ৪৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। বিধি অনুযায়ী বিতরণ করা অর্থ আট বছর পর সরকারি কোষাগারে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, বাকি ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত আসেনি।
আইসিবির ইইএফের দায়িত্বরত মহাব্যবস্থাপক মো. তালেব হোসেন বলেন, কোনো সুদ ছাড়াই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের অর্থসহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থ আদায়ে রয়েছে ধীরগতি। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ইচ্ছে করে যোগাযোগ করছেন না। অনেক প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের তথ্যও নেই। বারবার নোটিশ দিলেও সাড়া নেই উদ্যোক্তাদের। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ বাস্তবায়ন না করেই গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা হয়। কোম্পানির নামে জমি রেজিস্ট্রেশন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। এমনকি আমদানি করা যন্ত্রপাতির প্রকৃত দাম ও মান নিরূপণ করা হয়নি। জমির মান যাচাই না করে ভুয়া নথির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়। এই তহবিলের টাকা নিয়ে অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া প্রকল্পের নামে ব্যাংকে ঋণ থাকা সত্ত্বেও সেই সম্পদের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবির প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের পরিচালক মো. হানিফ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন নীতিগত সাপোর্ট দিই। এর পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। তহবিলে অর্থ বিতরণে যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হয়। তবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টিই ছিল এই তহবিলের অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য ঋণ না দিয়ে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থ তছরুপ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিএজির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। অনিয়মের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএজির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আলতাফ ফিশিং লিমিটেডের অনুকূলে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পটির বিপরীতে যে জমি দেখানো হয়েছে, তা খাসজমি। এ হোসেন হ্যাচারি অ্যান্ড পোলট্রি কমপ্লেক্স, সালমান ফিশারিজ, কোয়ালিটি অ্যাকুয়াকালচার, বলেশ্বর হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ ও আল সরদারনী ফুড নামের কোম্পানি থাকলেও তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেনি। ইনসার্ট সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আইজেন সফটওয়্যার লিমিটেড ও রিসোর্সেস টেকনোলজি নামের কোম্পানির অনুকূলে বিনিয়োগ করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইইএফ নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্রুত ঋণ ছাড় করাসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগকারী। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশ ছেড়েছেন, আবার কিছু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি প্রভাব বিস্তার করে তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের সিনহা গ্রিনারি অ্যাগ্রো লিমিটেড ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনগড়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা তহবিল সহায়তা পায়। সিরাজগঞ্জের স্টার মিল্ক প্রোডাক্টের সক্ষমতা যাচাই না করেই ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আইটি খাতের ইনফরমেশন টেকনোলজি মেট্রিকস, ক্রিস্টাল ইনফরমেশন, আলফা সফট সিস্টেমস এবং মেসার্স ইলেকট্রনিক ডিজিটাল সিস্টেমস ছিল নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, খাস বা ভুয়া জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই শেষে প্রকল্পের টাকা ছাড় হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প সফল না হওয়ায় যথাসময়ে টাকা ফেরত আসেনি। তবে আইটিভিত্তিক কিছু প্রকল্পের যে ঠিকানায় ঋণ দেওয়া হয়েছিল, পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের পাওয়া যায়নি। অডিটের আপত্তিগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ তহবিল থেকে বিতরণ করা অর্থ আইন অনুযায়ী ঋণ ছিল না। এ জন্য কোনো উদ্যোক্তাকে চাপ দেওয়া যায় না। অর্থ আদায়ে মামলা করারও সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষেও ফেরত না দেওয়ার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পুঁজিহীন মেধাবীদের ঋণের পরিবর্তে তহবিল জোগান দিয়ে উদ্যোক্তাশ্রেণি তৈরির স্বপ্নে গচ্চা গেছে হাজার কোটি টাকা। তহবিল থেকে আট বছরের জন্য দেওয়া অর্থের সিংহভাগই ২০ বছর পার হলেও অনাদায়ি। অর্থ নেওয়া অনেক উদ্যোক্তার খোঁজ নেই। অস্তিত্ব নেই অনেক প্রতিষ্ঠানের। উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে সরকারের এই তহবিলের টাকা ভুয়া নথি, খাসজমি দেখিয়ে, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিপুল উৎসাহে।
ইক্যুইটি অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামের এই তহবিলের বিতরণ করা ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকাই ফেরত আসেনি। সরকারি তহবিলের এমন নয়ছয়ের চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিএজি) এক প্রতিবেদনে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে এই তহবিল তছরুপ হয়েছে। আইনে না থাকায় ইইএফ তহবিলের টাকা আদায়ে মামলা করারও সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিবি। অবশ্য পরে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রেখে তহবিলের নাম পরিবর্তন করে অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ সাপোর্ট ফান্ড (ইএসএফ) গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ২০০১ সালে ইইএফ গঠন করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল উদ্যোক্তাদের ঋণের পরিবর্তে মূলধন দেওয়া। প্রকল্পে সরকারের মালিকানা রাখা হয় ৪৯ শতাংশ; বাকি ৫১ শতাংশ মালিকানা উদ্যোক্তাদের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক, তারপর যায় আইসিবির হাতে। পরে ২০১৮ সালের আগস্টে বিনা সুদের এই তহবিলকে ২ শতাংশ সুদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণে রূপান্তর করে ইএসএফ নামকরণ করা হয়। এখানে অর্থ উদ্ধারে আইনি সুযোগ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতে ১ হাজার ৪৫টি প্রকল্পে ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। বিধি অনুযায়ী বিতরণ করা অর্থ আট বছর পর সরকারি কোষাগারে ফেরত যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ৪৯৩ কোটি টাকা আদায় হয়েছে, বাকি ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ফেরত আসেনি।
আইসিবির ইইএফের দায়িত্বরত মহাব্যবস্থাপক মো. তালেব হোসেন বলেন, কোনো সুদ ছাড়াই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের অর্থসহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থ আদায়ে রয়েছে ধীরগতি। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ ইচ্ছে করে যোগাযোগ করছেন না। অনেক প্রকল্পের আয়-ব্যয়ের তথ্যও নেই। বারবার নোটিশ দিলেও সাড়া নেই উদ্যোক্তাদের। প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ বাস্তবায়ন না করেই গ্রাহকের অনুকূলে অর্থ ছাড় করা হয়। কোম্পানির নামে জমি রেজিস্ট্রেশন ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। এমনকি আমদানি করা যন্ত্রপাতির প্রকৃত দাম ও মান নিরূপণ করা হয়নি। জমির মান যাচাই না করে ভুয়া নথির বিপরীতে ঋণ দেওয়া হয়। এই তহবিলের টাকা নিয়ে অন্য প্রকল্পে ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে। এ ছাড়া প্রকল্পের নামে ব্যাংকে ঋণ থাকা সত্ত্বেও সেই সম্পদের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইসিবির প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের পরিচালক মো. হানিফ মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন নীতিগত সাপোর্ট দিই। এর পরিচালনার দায়িত্ব আইসিবির। তহবিলে অর্থ বিতরণে যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হয়। তবে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, উদ্যোক্তা সৃষ্টিই ছিল এই তহবিলের অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য ঋণ না দিয়ে তহবিল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অর্থ তছরুপ হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিএজির পরিদর্শনে উঠে এসেছে। অনিয়মের বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিএজির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আলতাফ ফিশিং লিমিটেডের অনুকূলে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পটির বিপরীতে যে জমি দেখানো হয়েছে, তা খাসজমি। এ হোসেন হ্যাচারি অ্যান্ড পোলট্রি কমপ্লেক্স, সালমান ফিশারিজ, কোয়ালিটি অ্যাকুয়াকালচার, বলেশ্বর হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ ও আল সরদারনী ফুড নামের কোম্পানি থাকলেও তারা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেনি। ইনসার্ট সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আইজেন সফটওয়্যার লিমিটেড ও রিসোর্সেস টেকনোলজি নামের কোম্পানির অনুকূলে বিনিয়োগ করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইইএফ নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্রুত ঋণ ছাড় করাসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্ত দল। টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগকারী। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক দেশ ছেড়েছেন, আবার কিছু রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধি প্রভাব বিস্তার করে তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ আর ফেরত দিচ্ছেন না।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের সিনহা গ্রিনারি অ্যাগ্রো লিমিটেড ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে মনগড়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা তহবিল সহায়তা পায়। সিরাজগঞ্জের স্টার মিল্ক প্রোডাক্টের সক্ষমতা যাচাই না করেই ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। আইটি খাতের ইনফরমেশন টেকনোলজি মেট্রিকস, ক্রিস্টাল ইনফরমেশন, আলফা সফট সিস্টেমস এবং মেসার্স ইলেকট্রনিক ডিজিটাল সিস্টেমস ছিল নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। কোনো ধরনের জামানত ছাড়াই অস্তিত্বহীন এসব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, খাস বা ভুয়া জমির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই। কেননা বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই শেষে প্রকল্পের টাকা ছাড় হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প সফল না হওয়ায় যথাসময়ে টাকা ফেরত আসেনি। তবে আইটিভিত্তিক কিছু প্রকল্পের যে ঠিকানায় ঋণ দেওয়া হয়েছিল, পরে সেখান থেকে চলে যাওয়ায় তাদের পাওয়া যায়নি। অডিটের আপত্তিগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ তহবিল থেকে বিতরণ করা অর্থ আইন অনুযায়ী ঋণ ছিল না। এ জন্য কোনো উদ্যোক্তাকে চাপ দেওয়া যায় না। অর্থ আদায়ে মামলা করারও সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময় শেষেও ফেরত না দেওয়ার ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে