রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, তাঁরা দালাল। গত সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রামেক হাসপাতাল ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শাহজাহান আলী (২৮), খাতিজা তিশা (২৫), আব্দুল হান্নান (৫০), শামসুজ্জোহা ভুট্টু (৪৫), মো. জিম (২০), মো. সুমন (২৫), হাদিউল ইসলাম (৩৫), নাইম হোসেন (৩২), প্রিয়া খাতুন (৩৫), তাহমিনা বেগম (৩৭), আসমা বেগম (৪৫), রিতা খাতুন (৩২), মুকুল হোসেন (৪০), সোহানুর রহমান (২৫) ও মো. পলাশ (৫০)।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডিবির উপকমিশনার জানান, শনিবার তানোর উপজেলার তেলুপাড়া ঝুমারপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেক শ্বাসকষ্ট, মাথা ব্যথা ও জ্বরে আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর মেয়েকে রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করেন। আব্দুল খালেক সেখানে গেলে কয়েকজন দালাল বলেন, তাঁর মেয়েকে অনেকগুলো পরীক্ষা করাতে হবে। তারপর বহির্বিভাগ থেকে তাঁদের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে তাঁর মেয়ের রক্ত পরীক্ষা এবং বুকের এক্স-রে করেন।

কিন্তু রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসার স্লিপে চিকিৎসক কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা উল্লেখ করেননি। তারপরও দালালচক্রের সদস্যরা পরীক্ষার নামে আব্দুল খালেকের কাছ থেকে ৩ হাজার ৫০ টাকা হাতিয়ে নেন এবং রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আরও ২ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে খালেকের স্ত্রী ও মেয়েকে অপহরণ করে গুম করার হুমকি দেন। খালেক দালাল চক্রের সদস্যদের হাতে-পায়ে ধরে কোনোমতে রিপোর্ট না নিয়ে সেখান থেকে তাঁর মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসেন। এরপর নগর ডিবি কার্যালয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ডিবি পুলিশ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

ডিবি পুলিশের উপকমিশনার আরও জানান, গ্রেপ্তার ১৫ জনের বাড়ি রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায়। তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।