মাছ উৎপাদন ও বিপণনে ভিন্নমাত্রা গোয়ালন্দে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫: ২০

রাজবাড়ীর ‘গোয়ালন্দ ফিশারিজ’ আধুনিক পদ্ধতিতে চাষের মাধ্যমে এনেছে স্বাস্থ্যসম্মত বিশুদ্ধ নদীর মাছের স্বাদ। তাজা সুস্বাদু সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রজেক্টের নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র গোধূলী বাজারে। এই বিক্রয়কেন্দ্রে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গোয়ালন্দ উপজেলার রিয়াজউদ্দিনপাড়া গ্রামে প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত ‘গোয়ালন্দ ফিশারিজ’। স্থানীয়দের কাছে এটি গোধূলী পার্ক হিসেবে পরিচিত। এখানে চারটি বটমক্লিন রেসওয়ে পুকুরের পাশাপাশি রয়েছে পদ্মা-যমুনা নামের বিশাল আকৃতির বড় দুটি লেক। গোয়ালন্দ ফিশারিজে কৃত্রিম স্রোতের সৃষ্টি করে স্বাস্থ্যকর আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয়। এভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের মাছে আনা হয়েছে নদীর মাছের স্বাদ। সুস্বাদু সেই মাছ বিপণনে ৩৫টি সুদৃশ্য কৃত্রিম অক্সিজেনযুক্ত হাউস তৈরি করে প্রজেক্টেই স্থাপন করা হয়েছে নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র। এখান থেকে সারা দিন স্থানীয়রাসহ দূরদূরান্তের মানুষ তাজা মাছ পছন্দ করে কিনে নিয়ে যান। কোম্পানির মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হওয়ায় নেই কোনো দামদরের ঝামেলা। এ ছাড়া বিশাল আয়তনের এই প্রজেক্টে রঙিন মাছের প্রদর্শনীসহ সৃষ্টি করা হয়েছে পার্কের আবহ। আগামীতে ‘গোধূলী পার্ক’ নামে এটিকে একটি পরিপূর্ণ বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

বিক্রয়কেন্দ্রে মাছ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম নামের ক্রেতা বলেন, বাজারের তুলনায় স্বস্তিকর পরিবেশ, দামেও সাশ্রয়ী ও নদীর মাছের স্বাদ থাকায় তাঁরা এখানে কিনতে আসেন।

আরেক ক্রেতা আলেয়া বেগম বলেন, ‘এখান থেকে তাজা মাছ কেনা যায়। মাছগুলো খেতে খুবই সুস্বাদু। মাঝেমধ্যে এখানে এসে তাজা মাছ কিনি।’

বিক্রয়কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এখানে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়ে থাকে। গোয়ালন্দ ফিশারিজের মাছ সুস্বাদু হওয়ায় পাশের জেলা থেকেও অনেকেই কিনতে আসেন।

গোয়ালন্দ ফিশারিজের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. নিজাম বলেন, ‘পুকুর থেকে তোলার পর সেই মাছ ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। এতে ওই মাছের স্বাদ কিছুটা নষ্ট হয়। মানুষ যেন টাটকা তরতাজা সুস্বাদু মাছ সুলভমূল্যে ক্রয় করতে পারে, সে জন্য গোধূলী বাজার নামে বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছি। এ ছাড়া উৎপাদিত মাছ বাজারের মাধ্যমে ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে কয়েক ধাপে মধ্যস্বত্বভোগীর কারণে উৎপাদনকারী কম দাম পান, আবার ভোক্তারা বেশি দামে কিনে থাকেন।’

গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার জামান সাবু বলেন, কয়েক দিন আগে গোয়ালন্দ ফিশারিজে গিয়েছিলাম। দেখলাম কৃত্রিম স্রোত সৃষ্টি করে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হচ্ছে। মৎস্য বিভাগ তাঁদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত