যুবলীগ নেতা পরিচয়ে হুমকি প্রকৌশলীকে, থানায় জিডি

সিলেট সংবাদদাতা
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ১৭
Thumbnail image

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিতরণ অঞ্চলের এক নির্বাহী প্রকৌশলীকে যুবলীগ নেতা পরিচয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত বুধবার বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২–এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে মিরাবাজারে পিডিবির বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২–এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের দুই নেতা সেখানে উপস্থিতি ছিলেন।

প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন জিডিতে উল্লেখ করেন, গত মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে যান সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ এবং অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও একজন। তাঁদের প্রবেশের ১০ মিনিট পর নগরীর উত্তর বাগবাড়ি এলাকার যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মো. শামীম আহমদ নামে একজন তাঁর কক্ষে ঢুকে পড়েন। সবার সঙ্গে কথার একপর্যায়ে শামীম আহমদ বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন কাজের দরপত্র সংক্রান্ত গোপনীয় কাগজপত্র দেখতে চান। তিনি কাগজ দেখাতে অসম্মতি জানালে শামীম আহমদ তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং অফিসের বাইরে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় বুধবার সাধারণ ডায়েরি করেন শামস-ই আরেফিন।

প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই নেতা সৌজন্য সাক্ষাতে আমার অফিসে আসেন। তাঁদের আসার প্রায় ১০ মিনিট পর যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মো. শামীম আহমদ নামে একজন আসেন। তিনি আমাদের অফিসের দরপত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন গোপনীয় কাগজ দেখতে চান। আমি দেখাতে অসম্মতি জানালে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি তাঁর মোবাইল সেটে আমার একটি ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘‘চেহারা মিলেছে, তোমাকে দেখে নেব’’।

প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন আরও বলেন, ‘আমি স্ত্রী–সন্তান নিয়ে সিলেটে বাস করি। এখন যদি সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার পরিবারকে আক্রমণ করে, তাই জিডি করেছি।’

এ ব্যাপারে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ওই সময় আমাদের ব্যক্তিগত কাজে ওই অফিসে গিয়েছিলাম। তখন ওই লোকও (শামীম) কক্ষে প্রবেশ করেন। আমরা তাঁকে চিনি না। কথাবার্তার একপর্যায়ে ওই লোক আর প্রকৌশলীর মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। তখন আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি ও ওই লোককে অফিস থেকে চলে যেতে বলি।’

অভিযুক্ত শামীম আহমেদ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমি ওই দিন বিদুৎ অফিসে গিয়েছিলাম ঠিক। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমার কোনো ঝগড়া বা কথা কাটাকাটি হয়নি। আমি উনাকে চিনিও না। আমি মূলত ছাত্রলীগ নেতা রাহেল আর নাইমের সঙ্গে গিয়েছিলাম। এখন তিনি কেন এই অভিযোগ করলেন তিনিই জানেন।’

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, ‘প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন জিডি করেছেন। আমরা তদন্ত করছি। তবে প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্তের ব্যাপারে ভালো কোনো খবর আসেনি। তাঁর সম্পর্কে এলাকার সবাই ভালো কিছু বলেননি। যতটুকু বুঝতে পেরেছি তিনি সব সময় সরকারি দলের নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আছে। তদন্তসাপেক্ষে শামীমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত