মানুষের আতঙ্ক হাতি হাতির আতঙ্ক মানুষ

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭: ৩৩
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৩০

২০২১ সালের শেষ দিকে শেরপুরের গারো পাহাড়ে হাতিহত্যা ছিল দেশজুড়ে বেশ আলোচিত। পাহাড়ি মানুষের মাঝে যেমন ছিল হাতি আতঙ্ক, তেমনি হাতির মাঝেও ছিল মানুষ আতঙ্ক।

১০ দিনের ব্যবধানে শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী সীমান্তে দুটি হাতির মৃতদেহ উদ্ধার এবং শ্রীবরদীর হাতি উদ্ধারের ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে বন বিভাগের মামলা দায়েরের বিষয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান দেশের বিভিন্ন প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠনসহ বন্যপ্রাণী গবেষকেরা।

জানা যায়, শেরপুরের শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে গারো পাহাড়। এ পাহাড়ে আগে থেকেই আদিবাসীদের বসবাসের স্থান থাকলেও বিভিন্ন সময় নানা জায়গা থেকে মানুষ এসে বাড়ি করে বসবাস শুরু করায় বনভূমি ও গারো পাহাড় ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে। এতে ছোট হয়ে আসছে বন্যপ্রাণীদের বসবাসের স্থানও। একসময় এ পাহাড়ে হাতিসহ নানা বন্যপ্রাণীর বসবাস থাকলেও মানুষ বন দখল করে বসবাস শুরু করায় হারিয়ে যায় হাতির আবাসস্থল। এখন টিকে আছে শুধু বন্য হাতি। বন্য হাতির বিচরণস্থলে মানুষ বসবাস ও চাষাবাদ শুরু করায় শুরু হয় হাতি-মানুষে দ্বন্দ্ব। হাতির বিচরণস্থল (করিডোর) দখল শুরু হওয়ায় হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে নেমে আসছে। খেয়ে সাবাড় করছে কৃষকের জমির ফসল। ফসল রক্ষা করতে গেলেই শুরু হচ্ছে হাতি মানুষের লড়াই। এতে কখনো প্রাণ হারাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। আবার কখনো বৈদ্যুতিক সংযোগসহ নানা ফাঁদে জড়িয়ে প্রাণ হারাচ্ছে হাতিও।

গত ৯ নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী মালাকোচা এলাকায় একটি বন্য হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ। হাতিটি স্থানীয় কৃষক আমির উদ্দিনের সবজীর বাগানে বিদ্যুতায়িত জিআই তারের বেড়ার সঙ্গে জড়িয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় বিদ্যুতের ফাঁদে বন্য হাতি হত্যার অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে বন বিভাগ।

বাংলাদেশ এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের প্রশিক্ষক ও হাতি বিশেষজ্ঞ আদনান আজাদ বলেন, মানুষ বন কেটে বসতি স্থাপন ও আবাদ ফসল শুরু করায় হাতির আবাসস্থল সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত