৮ বছরেও হয়নি স্মৃতিসৌধ

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২২, ০৮: ১৮
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১২: ৩৩

দীর্ঘ আট বছরেও শেষ হয়নি নীলফামারীর সৈয়দপুরে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধের কাজ। অর্থাভাবে আটকে আছে এর নির্মাণকাজ। বছরের পর বছর অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকা স্মৃতিসৌধেই চলছে শ্রদ্ধা নিবেদন। এতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে শহীদ পরিবারসহ সর্বস্তরের মানুষ।

জানা যায়, কয়েক দফা পরিবর্তনের পর ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় শহীদ দিবসে (১২ এপ্রিল) শহরের বিমানবন্দর সড়কে ২ একরেরও বেশি জায়গায় স্মৃতিসৌধের নির্মাণকাজ শুরু হয়। কাজ সম্পন্ন করতে গঠন করা হয় ১০১ সদস্যের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কমিটি। জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে করা নকশায় চলে অবকাঠামোর নির্মাণ। নির্মাণকাজের ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। কাজের শুরুতে সাবেক সাংসদ শওকত চৌধুরীর ব্যক্তিগত অনুদান ও আগের সংগ্রহ থেকে ব্যয় করা হয় ৫০ লাখ টাকা। এরপর অর্থসংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় এর নির্মাণকাজ। কাজ শেষ করতে সরকারি-বেসরকারি উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।

অবশেষে ২০১৮ সালে উপজেলা প্রশাসন ও শহরের বিশিষ্টজনদের আগ্রহে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের সিদ্ধান্ত হয়। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা করা হয়। এভাবে বছরের পর বছর শ্রদ্ধা নিবেদন চললেও গত আট বছরে পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি শহীদ স্মৃতিসৌধ।

সরেজমিন স্মৃতিসৌধ এলাকায় দেখা যায়, স্মৃতিসৌধ এলাকায় সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বেশির ভাগ জায়গা বেদখল হয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো এলাকাজুড়ে ময়লা-আবর্জনা। স্মৃতিসৌধে যতটুকু অংশে টাইলস লাগানো হয়েছিল, সেগুলোও ভেঙে গেছে।

স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কমিটির সদস্যসচিব ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন হতাশা ব্যক্ত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অর্থসংকটে আটকে আছে স্মৃতিসৌধের অবশিষ্ট ৫০ ভাগ কাজ। সরকারিভাবেও কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। অর্থ বরাদ্দের চেষ্টা করেও সফল হইনি আমরা। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শামিল হন। অথচ দিবস চলে গেলে কেউ মনে রাখেন না স্মৃতিসৌধের মর্যাদার কথা। কেউ তাগিদও বোধ করেন না অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার।’

সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদ পরিবারের সন্তান মহসিনুল হক মহসিন শহীদ স্মৃতিসৌধ দীর্ঘদিনেও পূর্ণাঙ্গ রূপ না পাওয়া দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্মৃতিসৌধের পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারি অর্থ বরাদ্দের দাবি জানানো হয়েছে। অরক্ষিত স্মৃতিসৌধের সীমানা চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে জায়গা বরাদ্দের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলত অর্থ বরাদ্দের অভাবেই আটকে আছে এর অসমাপ্ত কাজ।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম হুসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নবাগত। তবে এখানে আসার পর এ স্মৃতিসৌধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জেনেছি। সরকারি আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি, স্মৃতিসৌধটির নির্মাণকাজ খুব শিগগির সমাপ্ত হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত