Ajker Patrika

আগ্রহ কম আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের

সনি আজাদ, চারঘাট 
আপডেট : ১৯ জুন ২০২২, ১৩: ৫৯
আগ্রহ কম আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের

গত দুই মৌসুমের মতো এবারও ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে আম নিয়ে প্রতিদিন ছেড়ে যাচ্ছে এই ট্রেন। সড়কপথের যানবাহনের তুলনায় কম খরচে আম ও কৃষিজাত পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে স্পেশাল এ ট্রেনে। তবে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন ব্যবহারে চারঘাটের আমচাষি ও বড় ব্যবসায়ীদের আগ্রহী করা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মূলত প্রচারের অভাব, ঝক্কি-ঝামেলার কারণে আমচাষি ও বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না এই ট্রেন সার্ভিস।

রাজশাহী জেলায় আমবাগান রয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চারঘাট ও বাঘা—এই দুই উপজেলা মিলে বাগান রয়েছে ১২ হাজার ২১৮ হেক্টর জমিতে, যা পুরো রাজশাহী জেলার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। এই দুই উপজেলার অধিকাংশ আম বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকায় পাঠান চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিন চারঘাট ও বাঘা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনই হাজার হাজার ক্যারেট আম ট্রাকে করে সড়কপথে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। আড়তগুলোর সামনে ছোট বড় ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। অথচ সড়কপথের যানবাহনের তুলনায় কম খরচ হলেও ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের প্রতি আগ্রহ নেই কৃষক ও বড় ব্যবসায়ীদের।

চারঘাটের সরদহ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ১৩ জুন ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে চারঘাটের আমের প্রথম চালান ঢাকায় যায়। এরপর গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৬ দিনে সরদহ স্টেশন থেকে আমের বুকিং হয়েছে মাত্র সাড়ে ৪ টন। অনলাইন আম ব্যবসায়ী ও আত্মীয়স্বজনের কাছে আম পাঠাতেই ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম বুকিং করছেন স্থানীয়রা।

চারঘাটের আমবাগানমালিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাগান উপজেলার রাওথা এলাকায়। এখান থেকে রেলস্টেশন প্রায় ১৫ কিলোমিটার। এতটা পথ ট্রাকে করে আম নিয়ে যেতে হবে। আবার ট্রেনে আম তোলার জন্য ক্যারেট প্রতি ১০ টাকা কুলি খরচ। সেই আম কমলাপুর নামার পর আবার কুলির খরচ। সেখানে থেকে ট্রাকে করে আড়তে নিতে আবারও খরচ। রাতের মধ্যেই সব আম আনলোড করতে না পারলে দিনে ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হয় না সেখানে। এসব দিক বিবেচনা করলে ট্রেনের চেয়ে ট্রাকে আম পরিবহন করা অনেক সহজ এবং সহজলভ্য।’

চারঘাট সদরের আম ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ট্রেনে কেজি প্রতি আম পরিবহনে খরচ হয় ১ টাকা ১৮ পয়সা। চারঘাট থেকে ট্রাকে আমের এক ক্যারেট ঢাকায় পাঠাতে আমাদের খরচ হয় ৬০-৭০ টাকা। প্রতি কেজি পড়ে ৩ টাকার মতো। রেলে আম পাঠালে খরচ সামান্য কম হলেও ঝক্কি-ঝামেলা অনেক বেশি। আম নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।’

এদিকে চারঘাটের ‘রাজশাহীর আম’ নামের অনলাইন ব্যবসায়ী শামীম রেজা বলেন, ‘গত মৌসুমের মতো এবারও অনলাইনে আমের ব্যবসা করছি। কুরিয়ার ভেদে ঢাকায় আম পাঠাতে কেজি প্রতি আমাদের খরচ হয় ১৭-২২ টাকা। কিন্তু ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে খরচ হয় মাত্র ১ টাকা ১৮ পয়সা। কুলি খরচ ও বাড়তি কিছু পরিশ্রম করা লাগলেও কুরিয়ারের চেয়ে ট্রেনে লাভ বেশি। আমের ট্রেন ঢাকার সব স্টেশনে থামে। সব মিলিয়ে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আমার মতো অনলাইনের ব্যবসায়ীরা খুশি।’

ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনের বিষয়ে সরদহ স্টেশন মাস্টার ইকবাল কবির বলেন, ‘আমাদের স্টেশনে প্রতিদিনই আমের বুকিং চলছে। কেজিপ্রতি ১ টাকা ১৮ পয়সা। তবে গত দুই মৌসুমের চেয়ে এবার আমের বুকিং কম। আমের উৎপাদনও এবার কম হয়েছে। স্টেশন থেকে দূরবর্তী কৃষক ও ব্যবসায়ীদের এতে আগ্রহ কম। কিন্তু যাঁরা অনলাইন আম ব্যবসা করেন এবং আত্মীয়স্বজনের কাছে যাঁরা আম পাঠান, তাঁরা অনেকে আমের জন্য বুকিং করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত