লটারিজয়ী শিক্ষার্থীদের ভর্তি না করার প্রতিবাদ

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫: ০৭
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ০৭

ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লটারি হয়। সেই লটারি বিজয়ী সব শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। এর প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন করেছেন নোয়াখালী জিলা স্কুল ও সরকারি বালিক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

গতকাল বুধবার দুপুরে ‘সরকারি স্কুলে লটারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ভর্তি নয় কেন? আমাদের বাচ্চাদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করুন’—এই ব্যানারে ব্যানারে অভিভাবকেরা নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধন থেকে অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, গত নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে গত ২৫ নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে শুধু অনলাইনে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়। গত ৮ ডিসেম্বর বিকেলে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়। প্রতি আবেদনকারী একই বিভাগের পছন্দ ক্রমানুসারে সর্বাধিক পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করে। আবেদন পরবর্তী গত ১৫ ডিসেম্বর বিদ্যালয়গুলোতে লটারি প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়।

তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি ১০ বছরের নিচে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে না। কিন্তু এখন শিক্ষার্থীদের বয়স কমসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ভর্তি নিচ্ছে না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অভিভাবক নজরুল ইসলাম চৌধুরী উজ্জ্বল বলেন, ‘আমার মেয়ে জান্নাত নূর সদর উপজেলার করুমুল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পাসের পর অনলাইনে ভর্তির জন্য নোয়াখালী সরকারি গার্লস স্কুলে আবেদন করে। আবেদনে বি ইউনিটে ১৭ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছে সে। বিদ্যালয় থেকে টিসি নিয়ে গার্লস স্কুলে ভর্তি হতে গেলে তার জন্মনিবন্ধনে বয়স ১০ বছর থেকে ৫ দিন বাকি থাকার কারণ দেখিয়ে ভর্তি নেয়নি। এখানে ভর্তি হতে না পারলে আমার মেয়ের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে। তাই বিষয়টি বিবেচনা করে মেয়ের ভর্তির জন্য জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।’

অভিভাবক সারমিন সুলতানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বয়স এবং ওয়ার্ডের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। এখন ভর্তির এসব কারণ দেখিয়ে শিশুদের ভর্তি না নেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। বয়সসীমা নির্ধারণ না করে কেন সরকারিভাবে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে? কেন আমাদের ছেলেমেয়েদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হলো?’

শিক্ষার্থী মো. ওয়াছিয়ান বলে, ‘ভর্তি লটারিতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর জন্মনিবন্ধনে বয়স মাত্র কয়েক দিন কম থাকায় আমাকে ভর্তি নিচ্ছে না।’

মরিয়ম আক্তার মিম নামের এক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমার জন্মনিবন্ধনে বয়স সাত মাস কম থাকায় গার্লস স্কুলে আমাকে ভর্তি নিচ্ছে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, সরকারিভাবে ভর্তীচ্ছুদের বয়স নির্ধারণ করা আছে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের বয়স ৬ বছর হতে হবে। সে হিসাবে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স নির্ধারণ হবে। ভর্তির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় নির্ধারণ করবে। ভর্তি সংক্রান্ত সকল বিষয় বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত