‘বৃষ্টি হইলে ঘরোত থাকা যায় না ’

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২২, ০৭: ০২
আপডেট : ১৩ মে ২০২২, ১৫: ৪৫

‘আগে কচু ও শাকপাতা তুলে বাজারে বিক্রি করে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে সংসার চালিয়েছি। এখন ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছি। কোনোভাবে ছোট একটা টিনের ঘরে বসবাস করছি। একটু বৃষ্টি হইলে পানি পড়ে, ঘরোত থাকা যায় না।’ জোরে নিশ্বাস ছেড়ে কথাগুলো বলেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার বিধবা মোছা. নারগিছ বেগম (৩৬)।

নারগিছ বেগম উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের সোনারী পাড়া গ্রামের আকবর আলীর স্ত্রী। ২০ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর পরে তাঁর স্বামী মারা যান। তখন থেকে একই ইউনিয়নের মুদাফৎথানা বেলের ভিটা এলাকায় বাবা-মায়ের সংসারে ফিরে আসেন। কিছুদিন পর নারগিছের বাবা হোসেন আলীর মৃত্যু হয়। সংসারে নেমে আসে অভাব অনটন। কোনো উপায় না পেয়ে ঝোপ-ঝাড় থেকে কচু ও শাকপাতা তুলে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান।

নারগিছের মা সাহের বানুর (৯০) নামে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় বয়স্কভাতা হলেও বর্তমানে ভাতার টাকা পান না। এতে কোনো উপায় না পেয়ে বৃদ্ধ মাকে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাঁদের।

নারগিছ বেগম বলেন, ‘এখন আর কচু ও শাকপাতা পাওয়া যায় না। তাই অসুস্থ মাকে নিয়ে অন্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। আগে বয়স্ক ভাতা কার্ড ছিল টাকা পাইতাম। এখন কয়েক মাস থাকি সেই টাকাও পাই না। অফিসে নাকি ঝামেলা হইছে। এদিকে ঘরের টিনগুলো ভালো না থাকায় একটু বৃষ্টি হইলে চোকিত পানি পড়ে ঘরোতথাকা যায় না। সরকারের কাছোত মোর একনা দাবি মোক যেন থাকার ঘর দেয়।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বাবু মিয়া বলেন, ‘আমি নারগিছকে কর্মসৃজন কর্মসূচির নাম ও তাঁর মায়ের বয়স্ক ভাতা করে দিয়েছি। শুধু তাই নয় প্রতিটি রিলিফে তাঁর মায়ের নাম দেওয়া হয়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত