র‍্যাগিংয়ের তদন্ত করছে মাভাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০৪
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৩৬

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য গ্রহণ করে এই কমিটি।

র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ-উপাচার্য অধ্যাপক এ আর এম সোলায়মানকে সভাপতি ও প্রক্টর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হককে সদস্যসচিব করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন ড. মো. শাহীন উদ্দিন, ড. মো. খাদেমুল ইসলাম ও মো. রোকনুজ্জামান।

এদিকে র‍্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনেছেন অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থী। গত শনিবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে অভিযুক্তরা এ আবেদন করেন। ইএসআরএম বিভাগের পাঁচজন একটি আবেদনে ও ফার্মেসি বিভাগের সাফি অপর একটি আবেদনে মো. তারেকের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ জমা দেন।

এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (ইএসআরএম) বিভাগের মো. শামীম কবির, আজমাইন খান, সেলিম মিয়া, আল মাহিন ও হাসিবুল হাসান বাহার তাঁদের লিখিত আবেদন করেন। আবেদনে তাঁরা জানান, গত ২২ মার্চ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তারেক ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সালাম তাঁদের বাসায় রুমমেট হিসেবে ওঠেন। এরপর গত ২৮ মার্চ আনুমানিক রাত ১১টার পর বাসা থেকে অনেক দূরে অজ্ঞান অবস্থায় তারেককে পাওয়া যায়। আশপাশের বেশ কিছু মানুষ তাঁকে ধরে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রধান সড়কে নিয়ে আসেন। এরপর তারেককে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ২৯ তারিখে তারেক তাঁদের দ্বারা র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে মিথ্যা অভিযোগ করেন।

তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, মিথ্যা অভিযোগের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম, পারিবারিক ও সামাজিক দিক দিয়ে তাঁরা সম্মানহানি ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। যা তাঁদের জন্য কষ্টদায়ক।

ফার্মেসি বিভাগের শাফিউল মুরসালীন তাঁর লিখিত অভিযোগে জানান, তারেকের সঙ্গে তাঁর কোনো পূর্বপরিচয় নেই। এমনকি কোনো দিন দেখাও হয়নি। ঘটনার পূর্ব বা ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। প্রক্টর অফিসে দেওয়া অভিযোগপত্রে তাঁর নাম ও ডিপার্টমেন্টের নাম উল্লেখের জন্য তাঁকে পারিবারিক, সামাজিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। এ ছাড়া যাঁদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে তারেক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁর ও পরিবারের সম্মানহানির চেষ্টা করছেন, তাঁদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থীর বক্তব্য শুনেছি। সেই সঙ্গে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ আনা মো. তারেকের বক্তব্য শুনেছি। এ ছাড়া তারেকের বন্ধু আব্দুস সালামের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। আর অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থী তারেকের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে আবেদন করেছে।’

এ প্রসঙ্গে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের নবীন শিক্ষার্থী মো. তারেক সিনিয়র ছয় শিক্ষার্থীর নামে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত