নওগাঁ-২: সাবেক হুইপই ভরসা আ.লীগের

নওগাঁ ও ধামইরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১: ৫৬

ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-২ আসন। জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে এরই মধ্যে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী কারা হচ্ছেন, তা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চলছে জল্পনাকল্পনা।

আসনটি একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে গত তিন মেয়াদে এ ঘাঁটি আওয়ামী লীগের দখলে। ফলে এখানে ব্যাপক প্রভাব তৈরি হয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পর নির্বাচনে অংশ নিলে নিজেদের হারানো সেই ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি।

পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তিত হলে এই আসনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের শহীদুজ্জামান সরকার। তবে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচিত হন বিএনপির সামসুজ্জোহা খান। ২০০৮ সালে আসনটি আবারও চলে যায় শহীদুজ্জামান সরকারের দখলে। এরপর টানা ১৫ বছর তিনি এই আসনের এমপি। ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপও। ফলে আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাঁর ওপরই ভরসা স্থানীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদের।

কাজেই এটা মোটামুটি নিশ্চিত, এবারও এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন শহীদুজ্জামান। এরই মধ্যে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, মতবিনিময় সভা করছেন তিনি। চাঙা রাখছেন নেতা-কর্মীদের। লক্ষ্য, আসন্ন নির্বাচনেও আসনটি নিজের দখলে রাখা।

স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহীদুজ্জামান সরকার তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ভালো অবস্থান তৈরি করেছেন। এলাকার মানুষের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ও যোগাযোগ ভালো।

মনোনয়ন বিষয়ে জানতে শহীদুজ্জামান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ধামইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলদার হোসেন বলেন, ‘জনগণ আবারও নৌকাকে বিজয়ী করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ, এই সরকার ক্ষমতায় এলে মানুষের কল্যাণে কাজ করে।’

এদিকে নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত না হওয়ায় দোটানায় রয়েছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা শুভেচ্ছাবার্তা, ব্যানার ও পোস্টার লাগিয়ে তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়, তাহলে নিজেদের হারানো আসন ফিরে পেতে চায় বিএনপি। তবে সেটি কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।

স্থানীয় বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসনটিতে বিএনপি এখন মোটা দাগে তিন ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ রয়েছে সাবেক এমপি শামসুজ্জোহা খানের দিকে। তরুণদের বড় একটা অংশ আবার আছে খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে। বাকিরা আছেন বিএনপির আরেক নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী চপলের সঙ্গে। দলের কর্মসূচিও তিনজনের নেতৃত্বে আলাদাভাবে পালিত হওয়ার কথা জানান তাঁরা। তাঁরা তিনজনই দলটি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী।

জানতে চাইলে শামসুজ্জোহা খান বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। দল যে সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই চূড়ান্ত।’ তবে নির্বাচনে গেলে হারানো আসনটি তিনি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন বলে বিশ্বাস তাঁর।

বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান চৌধুরী চপল বলেন, ‘দল যদি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমি মনোনয়নপ্রত্যাশী।’ 
এ ছাড়া আসনটিতে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পাচ্ছেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমিই এখানে চূড়ান্ত। ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করে দিয়েছি। আশা করি, বিপুল ভোটে জয়ী হব।’

এদিকে ধর্মভিত্তিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজনৈতিক মাঠে নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছে। জনগণকে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জানান দিচ্ছেন দলটির নেতারা। দলটির সম্ভাব্য প্রার্থী মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘জনগণ এখন আদর্শবান নেতা চান। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগোচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত