নুসরাত জাহান শুচি
সময়ের সঙ্গে পুরোনো খাতা বন্ধ করে নতুন খাতা খোলা হলো। দেখতে দেখতে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার থেকেও খুলে পড়ল আরও একটি পাতা। আতশবাজির মাধ্যমে বিশ্ব তাকে বরণও করল। ভোরের সূর্য যেন নতুন হয়ে ধরা দিল। হাড়কাঁপানো শীতে আকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে সেই সূর্যের। শীত ভালোবাসি বলা মানুষগুলোও আশায় থাকে বসন্তের।
গাছগুলোও বুঝি ভাবে আর মাত্র এক দিন, তারপর বসন্তেই তারা সেজে উঠবে নতুনরূপে। ঝরাপাতার পরিবর্তে তারা ফিরে পাবে নবযৌবন। হলোও ঠিক তা-ই। সেই তীব্র শীত আর নেই। কোথাও কোথাও শোনা যাচ্ছে কোকিলের ডাক। এত সব নতুনত্বের মাঝে হারিয়ে যাবে কিছু মানুষ, কিছু স্বপ্ন আর কিছু সভ্যতা। তবে সেই জায়গাটাও ফাঁকা থাকবে না। গাছের নতুন পাতার মতো সে জায়গাও পূর্ণ হবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
ছোটবেলায় বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম—বন্যেরা বনে সুন্দর শিশু মাতৃক্রোড়ে; অর্থাৎ যার স্থান যেখানে, তাকে সেখানেই মানায়। এর বাইরে কিছু করতে গেলেই প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাবে। কিন্তু মানুষ স্বভাবতই অবাধ্য এক জীব। তাই হয়তো কবি লিখেছেন,আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!/ আমি মানি না কো কোনো আইন,/ আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো,/ আমি ভীম ভাসমান মাইন!
তাই তো প্রকৃতির নিয়ম দূরে ঠেলে শান্ত পৃথিবীকে আমরা উত্তাল করে চলেছি সব সময়। আকাশ, মাটি ও পানি কোনো কিছুই আজ ভালো নেই। মহাদেশ, মহাসাগরও মানুষের অবাধ্যতায় বিপর্যস্ত। লোহিতসাগর স্তম্ভিত কখন তাকে রক্তে ভাসতে হয়। মধ্যপ্রাচ্য ভালো নেই। ভালো নেই এশিয়া, ইউরোপ কেউই। জাতিসংঘের পতাকায় আঁকা শান্তির প্রতীক জলপাই পাতাগুলোও মলিন হয়ে গেছে হতাশায়।
তারাও বুঝি শান্তির কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছে না। জাতিসংঘ বোধ হয় ভয় পাচ্ছে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গড়ে তোলা জাতিপুঞ্জ যেমন হারিয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায়, তেমনি কোনো নতুন আতঙ্কে কি হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে জাতিসংঘ? বিশ্ব আজ উত্তাল। নিশ্চুপ বিশ্ব শান্তি সংস্থা। মোড়লে মোড়লে লড়াই হলে বুঝি বিশ্বের নীরব ভূমিকা পালন করা ছাড়া উপায় থাকে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা বেজেছে অনেক আগেই। ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের যুদ্ধ বিশ্ব দেখছে সেই কবে থেকে। এত দীর্ঘ সময়ে নিজের মাতৃভূমিতে ফিলিস্তিনিরা হয়েছে উদ্বাস্তু। নিছক দর্শক আরব বিশ্ব। মানবতার চরম বিপর্যয় ছাড়িয়ে গেছে সেখানে। নৃশংসতা থেকে মুক্তি পায়নি হাসপাতালগুলো। পিঁপড়ার মতো পিষিয়ে মারা হচ্ছে মানুষ। তবু থামেনি যুদ্ধের দামামা। চরম এই বিপর্যয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি; বরং ক্রমেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, জর্ডান, ইয়েমেন, সিরিয়াসহ আরও কিছু দেশ। ওই যে কথায় বলে, নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়? যাক সে সব কথা।
চীন, তাইওয়ানও কিন্তু ভালো নেই। ভালো নেই মিয়ানমার। ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে শান্তি নেই। উত্তাল ভারত। নিজেদের অস্ত্রভান্ডারের মহড়া দিয়ে শক্তিশালী দেশগুলো জানান দিচ্ছে তাদের শক্তি। কোন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব? কেবল ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারই কি তবে মানবতার আগে প্রাধান্য পাবে? নিজেদের শক্তির জানান দিতে কি বিশ্বমানবতা হারিয়ে যাবে? না। বর্বর যুগ পেরিয়ে এসে সভ্যতার এমন বিপর্যয় মেনে নেওয়া যায় না।
দিবারাত্রির পর্যায়ক্রমিক আবর্তন আমাদের জানান দিয়ে যায় রাতের পর দিন আসবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তাই পর্যায়ক্রমিক আবর্তনে হয়তো আমরা বিপর্যস্ত। ধর্ম, বর্ণ, ভূরাজনৈতিক, শক্তি, আধিপত্য, ভৌগোলিক সীমানার বিভেদ ছাড়িয়ে বিশ্বমানবতার জয় হোক। এই তো প্রত্যাশা। মানতে ক্ষতি কি—রাত যত প্রকট হয় ভোর তত নিকটে!
লেখক: সাংবাদিক
সময়ের সঙ্গে পুরোনো খাতা বন্ধ করে নতুন খাতা খোলা হলো। দেখতে দেখতে নতুন বছরের ক্যালেন্ডার থেকেও খুলে পড়ল আরও একটি পাতা। আতশবাজির মাধ্যমে বিশ্ব তাকে বরণও করল। ভোরের সূর্য যেন নতুন হয়ে ধরা দিল। হাড়কাঁপানো শীতে আকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে সেই সূর্যের। শীত ভালোবাসি বলা মানুষগুলোও আশায় থাকে বসন্তের।
গাছগুলোও বুঝি ভাবে আর মাত্র এক দিন, তারপর বসন্তেই তারা সেজে উঠবে নতুনরূপে। ঝরাপাতার পরিবর্তে তারা ফিরে পাবে নবযৌবন। হলোও ঠিক তা-ই। সেই তীব্র শীত আর নেই। কোথাও কোথাও শোনা যাচ্ছে কোকিলের ডাক। এত সব নতুনত্বের মাঝে হারিয়ে যাবে কিছু মানুষ, কিছু স্বপ্ন আর কিছু সভ্যতা। তবে সেই জায়গাটাও ফাঁকা থাকবে না। গাছের নতুন পাতার মতো সে জায়গাও পূর্ণ হবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
ছোটবেলায় বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম—বন্যেরা বনে সুন্দর শিশু মাতৃক্রোড়ে; অর্থাৎ যার স্থান যেখানে, তাকে সেখানেই মানায়। এর বাইরে কিছু করতে গেলেই প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাবে। কিন্তু মানুষ স্বভাবতই অবাধ্য এক জীব। তাই হয়তো কবি লিখেছেন,আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!/ আমি মানি না কো কোনো আইন,/ আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো,/ আমি ভীম ভাসমান মাইন!
তাই তো প্রকৃতির নিয়ম দূরে ঠেলে শান্ত পৃথিবীকে আমরা উত্তাল করে চলেছি সব সময়। আকাশ, মাটি ও পানি কোনো কিছুই আজ ভালো নেই। মহাদেশ, মহাসাগরও মানুষের অবাধ্যতায় বিপর্যস্ত। লোহিতসাগর স্তম্ভিত কখন তাকে রক্তে ভাসতে হয়। মধ্যপ্রাচ্য ভালো নেই। ভালো নেই এশিয়া, ইউরোপ কেউই। জাতিসংঘের পতাকায় আঁকা শান্তির প্রতীক জলপাই পাতাগুলোও মলিন হয়ে গেছে হতাশায়।
তারাও বুঝি শান্তির কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছে না। জাতিসংঘ বোধ হয় ভয় পাচ্ছে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গড়ে তোলা জাতিপুঞ্জ যেমন হারিয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামায়, তেমনি কোনো নতুন আতঙ্কে কি হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে জাতিসংঘ? বিশ্ব আজ উত্তাল। নিশ্চুপ বিশ্ব শান্তি সংস্থা। মোড়লে মোড়লে লড়াই হলে বুঝি বিশ্বের নীরব ভূমিকা পালন করা ছাড়া উপায় থাকে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা বেজেছে অনেক আগেই। ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের যুদ্ধ বিশ্ব দেখছে সেই কবে থেকে। এত দীর্ঘ সময়ে নিজের মাতৃভূমিতে ফিলিস্তিনিরা হয়েছে উদ্বাস্তু। নিছক দর্শক আরব বিশ্ব। মানবতার চরম বিপর্যয় ছাড়িয়ে গেছে সেখানে। নৃশংসতা থেকে মুক্তি পায়নি হাসপাতালগুলো। পিঁপড়ার মতো পিষিয়ে মারা হচ্ছে মানুষ। তবু থামেনি যুদ্ধের দামামা। চরম এই বিপর্যয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি; বরং ক্রমেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, জর্ডান, ইয়েমেন, সিরিয়াসহ আরও কিছু দেশ। ওই যে কথায় বলে, নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়? যাক সে সব কথা।
চীন, তাইওয়ানও কিন্তু ভালো নেই। ভালো নেই মিয়ানমার। ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে শান্তি নেই। উত্তাল ভারত। নিজেদের অস্ত্রভান্ডারের মহড়া দিয়ে শক্তিশালী দেশগুলো জানান দিচ্ছে তাদের শক্তি। কোন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব? কেবল ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারই কি তবে মানবতার আগে প্রাধান্য পাবে? নিজেদের শক্তির জানান দিতে কি বিশ্বমানবতা হারিয়ে যাবে? না। বর্বর যুগ পেরিয়ে এসে সভ্যতার এমন বিপর্যয় মেনে নেওয়া যায় না।
দিবারাত্রির পর্যায়ক্রমিক আবর্তন আমাদের জানান দিয়ে যায় রাতের পর দিন আসবে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তাই পর্যায়ক্রমিক আবর্তনে হয়তো আমরা বিপর্যস্ত। ধর্ম, বর্ণ, ভূরাজনৈতিক, শক্তি, আধিপত্য, ভৌগোলিক সীমানার বিভেদ ছাড়িয়ে বিশ্বমানবতার জয় হোক। এই তো প্রত্যাশা। মানতে ক্ষতি কি—রাত যত প্রকট হয় ভোর তত নিকটে!
লেখক: সাংবাদিক
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে