শিক্ষকের ৭১৮ পদ শূন্য

জুয়েল বিশ্বাস, নেত্রকোনা
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭: ২৪
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ২১: ২০

নেত্রকোনা জেলার ১০টি উপজেলার ১ হাজার ৩১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকদের ৭১৮টি পদ শূন্য রয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শুধু শিক্ষকই নয়, ২০টি উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তার পদও শূন্য রয়েছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, বিষয়টি শিক্ষাঅধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অফিসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১০টি উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৩১৩টি। সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৪০৫টি। এর মধ্যে জেলার আটপাড়া উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের পদ ১৮টি এবং সহকারী শিক্ষকের পদ ৪৩টি শূন্য রয়েছে। কলমাকান্দা উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের পদ ৫৪টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৯৩টি পদ শূন্য রয়েছে। কেন্দুয়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ ৩৬টি এবং সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য ৫৭টি। দুর্গাপুরে প্রধান শিক্ষকের পদ ১৮টি এবং সহকারী শিক্ষকের পদ ৫৪টি শূন্য রয়েছে। নেত্রকোনা সদরে প্রধান শিক্ষকের পদ ৩৭টি এবং সহকারী শিক্ষকের ১০টি পদ শূন্য রয়েছে। পূর্বধলায় প্রধান শিক্ষকের পদ ১০টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৪১টি পদ শূন্য রয়েছে। বারহাট্টায় প্রধান শিক্ষকের পদ ৩৫টি এবং সহকারী শিক্ষকের ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে। মদনে প্রধান শিক্ষকের পদ ৫৫টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৬৪টি পদ শূন্য রয়েছে। মোহনগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের পদ ১৩টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৭টি পদ শূন্য আছে। খালিয়াজুরী উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের ৩৭টি এবং সহকারী শিক্ষকের ২২টি পদ শূন্য রয়েছে। ১০টি উপজেলার মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলায় প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকের পদ সবচেয়ে বেশি শূন্য।

কলমাকান্দা উপজেলার বেলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বাবা শহীদুল আলম চৌধুরী বলেন, এই স্কুলটি প্রায়ই উপজেলার মধ্যে এক নম্বর হলেও, শিক্ষক সংকট সব সময়েই থাকে। আগে জেলা শহর থেকে এখানকার রাস্তাঘাট ভালো না থাকার অজুহাতে শিক্ষকেরা বদলি হয়ে অন্য স্থানে চলে যেত। কিন্তু এখন রাস্তা-ঘাট ভালো হয়েছে; তবু শিক্ষক সংকট কাটেনি।

পূর্বধলা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষক না থাকার কারণে ক্লাস নিতে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে করে অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হয় প্রত্যেক শিক্ষককে। অনেক সময় বুঝে উঠতে পারি না। আমি ক্লাস নেব না প্রশাসনিক কাজ সামাল দেব।

কথা সাহিত্যিক আনোয়ার হাসান শিক্ষক সংকট সম্পর্কে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপনা করার সূত্রে শিক্ষক সংকট যে কতটা দুর্ভোগের সৃষ্টি করে তা বুঝতে পারি। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেহেতু কোমলমতি ছোট ছোট বাচ্চারা পড়াশোনা করে। এখানে শিক্ষক সংকট থাকলে কতটা সমস্যার সৃষ্টি হয়। তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনিতেই করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই দ্রুত প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের শূন্য পদগুলো পূরণ করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন সময়ে যে ক্ষতি হয়েছে। তার কিছুটা লাঘব হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অফিসে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার শূন্য পদগুলো পূরণ করার জন্য। আশা করছি দ্রুতই শূন্য পদগুলো পূরণ হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত