বিভুরঞ্জন সরকার
আমাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে যাঁরা ভাবেন, কথা বলেন, দুটি বড় দলের বিরোধ ও অনৈক্য নিয়ে যাঁরা বিভিন্ন সময় মন্তব্য করেন, তাঁরা অধিকাংশ সময় গড়পড়তা কথা বলেন। দেশে বিভেদ ও অনৈক্যের যে রাজনীতি চলছে, তার জন্য প্রধান বড় দুই দলকেই যাঁরা সমানভাবে দায়ী করেন, তাঁরাও আসলে এই বিভেদ জিইয়ে রাখার পক্ষে। ক্ষত নিরাময়ের ক্ষেত্র না খুঁজে এর দোষ, ওর দোষ—এমন দায়সারা কথা বলে কার্যত মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়।
যেমন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনায় কি দুই দলকেই অভিযুক্ত করা যায়? এখানে আওয়ামী লীগ আক্রান্ত আর বিএনপি সরাসরি আক্রমণকারী না হলেও আক্রমণকারীদের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে।
প্রশ্ন হতে পারে, ওই গ্রেনেড হামলায় বিএনপির কী লাভ? ওই হামলার উদ্দেশ্য সফল হলে বিএনপির রাজনীতির পথের কাঁটা দূর হতো। এটা নিয়ে বিতর্ক অর্থহীন যে মূলত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যই ওই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল, তিনি ছিলেন প্রধান টার্গেট। সৌভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন, যেমনটা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেই রাতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে ছিলেন বলেই প্রাণে বেঁচে গেছেন।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ছয় বছরের নির্বাসন জীবন শেষে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনাকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। প্রতিবারই তিনি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে না থাকলে তাঁদের ভাগ্যেও পরিবারের অন্য সদস্যদের পরিণতিই ছিল। ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্য সব সদস্যকে। শিশু রাসেল ও নববিবাহিত দুই পুত্রবধূর প্রাণও রক্ষা পায়নি।
একুশে আগস্টের বিভীষিকাময় বিকেলের গ্রেনেড হামলার বিষয়টিও নিছক একটি সন্ত্রাসী ঘটনা ছিল না। এটা ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে যেমন বাংলাদেশের রাজনীতির পশ্চাৎযাত্রা শুরু হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতায়ই একুশে আগস্ট ঘটানো হয়েছিল আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার জন্য, ক্ষমতার রাজনীতিতে দলটিকে অকার্যকর করার জন্য। কিন্তু এ কাজে যে জঙ্গিগোষ্ঠীকে ‘ভাড়া’ করা হয়েছিল, তারা সম্ভবত তাড়াহুড়া করতে গিয়ে টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। তবে শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতাদের জীবন রক্ষা পেলেও আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ কমপক্ষে ২৩ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁদের অনেকেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কেউ কেউ এখনো শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন।
একুশে আগস্টের বীভৎস হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত থাকবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বিরোধের পেছনে অন্যতম দুটি কারণের একটি পনেরো আগস্ট, অন্যটি একুশে আগস্ট। প্রশ্ন হতে পারে দুটি বিশেষ তারিখে কেন রাজনীতির পথ আটকে থাকবে? রাজনীতি তো কোনো স্থবির প্রক্রিয়া নয়, এটা গতিময় ও চলমান। ঠিকই, কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট—আগস্টের অভিশপ্ত দুটি তারিখে বাংলাদেশের রাজনীতিকে স্থবির কিংবা বলা যায় গতিমুখ পরিবর্তনের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়েই বড় ধরনের দুটি রাজনৈতিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। রাজনীতিতে বিরোধ, ভিন্নমত, মতপার্থক্য স্বাভাবিক হলেও হত্যা কিংবা হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির বড় অন্তরায়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার সময় বিএনপি ছিল না। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বড় বেনিফিশিয়ারি জিয়াউর রহমান। সরাসরি হত্যা মিশনে জড়িতরা জিয়ার সমর্থন, সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার দায় জিয়া কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিতর্ক করা অর্থহীন। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা দুটি মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের দেওয়া তথ্য থেকেই জানা যায়, হামলাকারীদের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের একাধিক মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের যোগাযোগ ছিল। সে সময়ে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘হাওয়া ভবনে’ তারেক রহমান এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের উপস্থিতিতে হামলায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এটাও আমাদের জানা আছে যে তখন সরকার জজ মিয়া নামের একজন ছিঁচকে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল। সরকার তখন শৈবাল সাহা পার্থ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেও নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিল।কোনো ঘটনা ঘটলেই তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানো ছিল জোট সরকারের একটি বদভ্যাস। একুশে আগস্টের ঘটনার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ২২ আগস্ট, ২০০৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের এক সমাবেশে সংগঠনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা এবং সাবের হোসেন চৌধুরীকে রিমান্ডে নিলেই প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটিত হবে!’ এ ধরনের বালখিল্য মন্তব্যের জন্য বিএনপির নেতারা ছাত্রদল নেতাকে তিরস্কৃত তো করেনইনি, উল্টো নিজেরাও ওই ধারায় গলাবাজি করেছেন। ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে দলের তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়াসহ কয়েকজন মন্ত্রী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন।
আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সময় তো ক্ষমতায়ই ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। দেশে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে প্রাথমিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের দায়িত্ব। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো এত বড় অপরাধ যারা করেছিল, তাদের চিহ্নিত করা, গ্রেপ্তার করা এবং আইনের হাতে সোপর্দ করার জরুরি কর্তব্যটি তৎকালীন সরকার সম্পাদনে কেবল চরমভাবে ব্যর্থতারই পরিচয় দেয়নি; বরং ঘটনাপ্রবাহ অন্য খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।
তৎকালীন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী আমানউল্লাহ আমান ওই সমাবেশে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক তদন্ত চাচ্ছেন। আমরা সব ধরনের তদন্ত করব। খুব তাড়াতাড়িই তদন্ত রিপোর্ট দেব। ওই রিপোর্টে গ্রেনেড হামলার জন্য আবদুস সামাদ আজাদ, মোহাম্মদ নাসিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীকে দায়ী করা হবে।’
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে বিএনপি যে কত ভয়ংকর পরিকল্পনা ফেঁদেছিল, সেটা আমানউল্লাহ আমানের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়। তদন্ত না হতেই তদন্ত রিপোর্টে কী থাকবে, সেটা একজন প্রতিমন্ত্রী বলার পর ওই তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে মানুষের মনে কী ধারণা হতে পারে, সেটা বোঝার ক্ষমতাও জোট সরকারের মন্ত্রীদের ছিল না।
খালেদা জিয়া নিজেও গ্রেনেড হামলার কথা বলতে গিয়ে খুব দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন, সেটাও বলা যায় না। ২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছিলেন, ‘সরকারের সাফল্যকে আড়াল করতে “বোমা” হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’ খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য দেশের মানুষকে হতবাক করেছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল সরকারের সাফল্যকে আড়াল করতে—এমন বক্তব্য সরকারপ্রধানের মুখ থেকে বের হওয়ার পর একুশে আগস্টের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত যে হবে না, সেটা তখন সবার কাছেই স্পষ্ট হয়েছিল। বাস্তবে ঘটেছিলও তাই। জোট সরকার ক্ষমতায় থাকতে তদন্তকাজ অগ্রসর হয়নি; বরং প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার জন্য, সবকিছু ধামাচাপা দেওয়ার কসরতই চালানো হয়েছিল।
এখন বিএনপি সরকারে নেই, বিরোধী দল হিসেবে সরকারের যেকোনো ভুলত্রুটির সমালোচনা করার অধিকার বিএনপির আছে। কিন্তু ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করার সময় বিএনপির নেতারা কি আয়নায় নিজেদের মুখ দেখেন? তাঁদের শাসনামলে দেশ কেমন চলছিল, সেসব কি তাঁদের মনে আছে? তাঁরা কি একবার ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের সংবাদপত্রগুলোর পাতায় চোখ বুলিয়ে দেখবেন? একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের হত্যাসহ অসংখ্য বোমা হামলার ঘটনা এবং দেশজুড়ে জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের ঘটনাগুলোর কথা মনে পড়লে তো তাঁদের বর্তমান সরকারের লাগামহীন সমালোচনা করার কথা নয়।
রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। সব শিয়ালের এক রা-এর মতো সব রাজনৈতিক দলের এক রা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নানা মতের, নানা পথের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করবে—এটাই গণতন্ত্রের রীতি। কিন্তু মত ও পথের ভিন্নতার জন্য সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ নষ্ট হওয়াটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। অথচ বিএনপি একদিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে, হত্যার মাধ্যমে নির্মূল করার পথ অনুসরণ করে, অন্যদিকে তারা দিব্যি গণতন্ত্রের জন্য ‘লড়াই’য়ের কথাও বলছে। বিএনপি ক্ষমতার বাইরে আছে দেড় দশক হয়ে গেল। গণতন্ত্রের জন্য এখন হাহাকার করলেও ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপি কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস না দিয়ে নির্মূল করার নীতি নিয়েছিল। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা তার বড় প্রমাণ। বিএনপি বর্তমানে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। অথচ অতীতের ভুল রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলটির মধ্যে কোনো আত্মসমালোচনা নেই। ভবিষ্যতে বিএনপি তার সঙ্গী-সাথিদের নিয়ে ক্ষমতায় গেলে দেশে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির চর্চা বন্ধ করবে কি না, সে কথা স্পষ্ট করে বলা হয় না। সুযোগ পেলেই বিএনপির নেতারা যেভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকেন, তা থেকে তো মনে হয় ক্ষমতায় গেলে দেশে আবার বিরোধী রাজনীতি দমনের নামে নিষ্ঠুরতার পথই অনুসরণ করা হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বিএনপি একদিকে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দেয়, অন্যদিকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এমন কিছু ব্যক্তিকে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আসলেই তাদের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অতীত ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। একুশে আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনার দায় অস্বীকার করে বিএনপি সুবিধা করতে পারবে না। গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রত্যাখ্যান করে কিংবা রায়কে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ’ বলে বিএনপি হাত মুছতে চাইলেও তা সম্ভব হবে না। পনেরো আগস্ট কেক কাটা পরিহার করলেও খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালন বাদ দেননি। একুশে আগস্টের দায় স্বীকার না করে রাজনীতিতে নতুন অবস্থান তৈরি করা বিএনপির জন্য সহজ হবে বলে মনে হয় না।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
আমাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে যাঁরা ভাবেন, কথা বলেন, দুটি বড় দলের বিরোধ ও অনৈক্য নিয়ে যাঁরা বিভিন্ন সময় মন্তব্য করেন, তাঁরা অধিকাংশ সময় গড়পড়তা কথা বলেন। দেশে বিভেদ ও অনৈক্যের যে রাজনীতি চলছে, তার জন্য প্রধান বড় দুই দলকেই যাঁরা সমানভাবে দায়ী করেন, তাঁরাও আসলে এই বিভেদ জিইয়ে রাখার পক্ষে। ক্ষত নিরাময়ের ক্ষেত্র না খুঁজে এর দোষ, ওর দোষ—এমন দায়সারা কথা বলে কার্যত মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়।
যেমন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনায় কি দুই দলকেই অভিযুক্ত করা যায়? এখানে আওয়ামী লীগ আক্রান্ত আর বিএনপি সরাসরি আক্রমণকারী না হলেও আক্রমণকারীদের সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে।
প্রশ্ন হতে পারে, ওই গ্রেনেড হামলায় বিএনপির কী লাভ? ওই হামলার উদ্দেশ্য সফল হলে বিএনপির রাজনীতির পথের কাঁটা দূর হতো। এটা নিয়ে বিতর্ক অর্থহীন যে মূলত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যই ওই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল, তিনি ছিলেন প্রধান টার্গেট। সৌভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন, যেমনটা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। সেই রাতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বিদেশে ছিলেন বলেই প্রাণে বেঁচে গেছেন।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ছয় বছরের নির্বাসন জীবন শেষে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনাকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। প্রতিবারই তিনি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে না থাকলে তাঁদের ভাগ্যেও পরিবারের অন্য সদস্যদের পরিণতিই ছিল। ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্য সব সদস্যকে। শিশু রাসেল ও নববিবাহিত দুই পুত্রবধূর প্রাণও রক্ষা পায়নি।
একুশে আগস্টের বিভীষিকাময় বিকেলের গ্রেনেড হামলার বিষয়টিও নিছক একটি সন্ত্রাসী ঘটনা ছিল না। এটা ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। পনেরো আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে যেমন বাংলাদেশের রাজনীতির পশ্চাৎযাত্রা শুরু হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতায়ই একুশে আগস্ট ঘটানো হয়েছিল আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার জন্য, ক্ষমতার রাজনীতিতে দলটিকে অকার্যকর করার জন্য। কিন্তু এ কাজে যে জঙ্গিগোষ্ঠীকে ‘ভাড়া’ করা হয়েছিল, তারা সম্ভবত তাড়াহুড়া করতে গিয়ে টার্গেট পূরণ করতে পারেনি। তবে শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতাদের জীবন রক্ষা পেলেও আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ কমপক্ষে ২৩ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁদের অনেকেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কেউ কেউ এখনো শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন।
একুশে আগস্টের বীভৎস হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবেই চিহ্নিত থাকবে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বিরোধের পেছনে অন্যতম দুটি কারণের একটি পনেরো আগস্ট, অন্যটি একুশে আগস্ট। প্রশ্ন হতে পারে দুটি বিশেষ তারিখে কেন রাজনীতির পথ আটকে থাকবে? রাজনীতি তো কোনো স্থবির প্রক্রিয়া নয়, এটা গতিময় ও চলমান। ঠিকই, কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট—আগস্টের অভিশপ্ত দুটি তারিখে বাংলাদেশের রাজনীতিকে স্থবির কিংবা বলা যায় গতিমুখ পরিবর্তনের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়েই বড় ধরনের দুটি রাজনৈতিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। রাজনীতিতে বিরোধ, ভিন্নমত, মতপার্থক্য স্বাভাবিক হলেও হত্যা কিংবা হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির বড় অন্তরায়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার সময় বিএনপি ছিল না। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বড় বেনিফিশিয়ারি জিয়াউর রহমান। সরাসরি হত্যা মিশনে জড়িতরা জিয়ার সমর্থন, সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার দায় জিয়া কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিতর্ক করা অর্থহীন। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা দুটি মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের দেওয়া তথ্য থেকেই জানা যায়, হামলাকারীদের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের একাধিক মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের যোগাযোগ ছিল। সে সময়ে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘হাওয়া ভবনে’ তারেক রহমান এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের উপস্থিতিতে হামলায় প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এটাও আমাদের জানা আছে যে তখন সরকার জজ মিয়া নামের একজন ছিঁচকে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল। সরকার তখন শৈবাল সাহা পার্থ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেও নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিল।কোনো ঘটনা ঘটলেই তার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানো ছিল জোট সরকারের একটি বদভ্যাস। একুশে আগস্টের ঘটনার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ২২ আগস্ট, ২০০৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের এক সমাবেশে সংগঠনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা এবং সাবের হোসেন চৌধুরীকে রিমান্ডে নিলেই প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটিত হবে!’ এ ধরনের বালখিল্য মন্তব্যের জন্য বিএনপির নেতারা ছাত্রদল নেতাকে তিরস্কৃত তো করেনইনি, উল্টো নিজেরাও ওই ধারায় গলাবাজি করেছেন। ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে দলের তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়াসহ কয়েকজন মন্ত্রী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন।
আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সময় তো ক্ষমতায়ই ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। দেশে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে প্রাথমিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের দায়িত্ব। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো এত বড় অপরাধ যারা করেছিল, তাদের চিহ্নিত করা, গ্রেপ্তার করা এবং আইনের হাতে সোপর্দ করার জরুরি কর্তব্যটি তৎকালীন সরকার সম্পাদনে কেবল চরমভাবে ব্যর্থতারই পরিচয় দেয়নি; বরং ঘটনাপ্রবাহ অন্য খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।
তৎকালীন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী আমানউল্লাহ আমান ওই সমাবেশে বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক তদন্ত চাচ্ছেন। আমরা সব ধরনের তদন্ত করব। খুব তাড়াতাড়িই তদন্ত রিপোর্ট দেব। ওই রিপোর্টে গ্রেনেড হামলার জন্য আবদুস সামাদ আজাদ, মোহাম্মদ নাসিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ ও মতিয়া চৌধুরীকে দায়ী করা হবে।’
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে বিএনপি যে কত ভয়ংকর পরিকল্পনা ফেঁদেছিল, সেটা আমানউল্লাহ আমানের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়। তদন্ত না হতেই তদন্ত রিপোর্টে কী থাকবে, সেটা একজন প্রতিমন্ত্রী বলার পর ওই তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে মানুষের মনে কী ধারণা হতে পারে, সেটা বোঝার ক্ষমতাও জোট সরকারের মন্ত্রীদের ছিল না।
খালেদা জিয়া নিজেও গ্রেনেড হামলার কথা বলতে গিয়ে খুব দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন, সেটাও বলা যায় না। ২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছিলেন, ‘সরকারের সাফল্যকে আড়াল করতে “বোমা” হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’ খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য দেশের মানুষকে হতবাক করেছিল। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা এবং আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল সরকারের সাফল্যকে আড়াল করতে—এমন বক্তব্য সরকারপ্রধানের মুখ থেকে বের হওয়ার পর একুশে আগস্টের ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত যে হবে না, সেটা তখন সবার কাছেই স্পষ্ট হয়েছিল। বাস্তবে ঘটেছিলও তাই। জোট সরকার ক্ষমতায় থাকতে তদন্তকাজ অগ্রসর হয়নি; বরং প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার জন্য, সবকিছু ধামাচাপা দেওয়ার কসরতই চালানো হয়েছিল।
এখন বিএনপি সরকারে নেই, বিরোধী দল হিসেবে সরকারের যেকোনো ভুলত্রুটির সমালোচনা করার অধিকার বিএনপির আছে। কিন্তু ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করার সময় বিএনপির নেতারা কি আয়নায় নিজেদের মুখ দেখেন? তাঁদের শাসনামলে দেশ কেমন চলছিল, সেসব কি তাঁদের মনে আছে? তাঁরা কি একবার ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের সংবাদপত্রগুলোর পাতায় চোখ বুলিয়ে দেখবেন? একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের হত্যাসহ অসংখ্য বোমা হামলার ঘটনা এবং দেশজুড়ে জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের ঘটনাগুলোর কথা মনে পড়লে তো তাঁদের বর্তমান সরকারের লাগামহীন সমালোচনা করার কথা নয়।
রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। সব শিয়ালের এক রা-এর মতো সব রাজনৈতিক দলের এক রা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নানা মতের, নানা পথের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করবে—এটাই গণতন্ত্রের রীতি। কিন্তু মত ও পথের ভিন্নতার জন্য সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ নষ্ট হওয়াটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। অথচ বিএনপি একদিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে, হত্যার মাধ্যমে নির্মূল করার পথ অনুসরণ করে, অন্যদিকে তারা দিব্যি গণতন্ত্রের জন্য ‘লড়াই’য়ের কথাও বলছে। বিএনপি ক্ষমতার বাইরে আছে দেড় দশক হয়ে গেল। গণতন্ত্রের জন্য এখন হাহাকার করলেও ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপি কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস না দিয়ে নির্মূল করার নীতি নিয়েছিল। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা তার বড় প্রমাণ। বিএনপি বর্তমানে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। অথচ অতীতের ভুল রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলটির মধ্যে কোনো আত্মসমালোচনা নেই। ভবিষ্যতে বিএনপি তার সঙ্গী-সাথিদের নিয়ে ক্ষমতায় গেলে দেশে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির চর্চা বন্ধ করবে কি না, সে কথা স্পষ্ট করে বলা হয় না। সুযোগ পেলেই বিএনপির নেতারা যেভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকেন, তা থেকে তো মনে হয় ক্ষমতায় গেলে দেশে আবার বিরোধী রাজনীতি দমনের নামে নিষ্ঠুরতার পথই অনুসরণ করা হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বিএনপি একদিকে বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দেয়, অন্যদিকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এমন কিছু ব্যক্তিকে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আসলেই তাদের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। হত্যা-ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অতীত ভুলের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। একুশে আগস্টের বিয়োগান্ত ঘটনার দায় অস্বীকার করে বিএনপি সুবিধা করতে পারবে না। গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রত্যাখ্যান করে কিংবা রায়কে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূর্ণ’ বলে বিএনপি হাত মুছতে চাইলেও তা সম্ভব হবে না। পনেরো আগস্ট কেক কাটা পরিহার করলেও খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালন বাদ দেননি। একুশে আগস্টের দায় স্বীকার না করে রাজনীতিতে নতুন অবস্থান তৈরি করা বিএনপির জন্য সহজ হবে বলে মনে হয় না।
লেখক: সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে