জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে জমে উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রচার। পঞ্চম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার চারটি ইউপিতে ভোট আগামী ৫ জানুয়ারি। উপজেলার ডাংধরা, চর আমখাওয়া, হাতীভাঙ্গা ও চুকাইবাড়ীতে হবে পঞ্চম ধাপের এই নির্বাচন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই এসব ইউপিতে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার।

চারটি ইউপির মধ্যে চুকাইবাড়ী ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সেলিম খানের বিপক্ষে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।  যে কারণে তিনি ওই ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

তবে অন্য তিন ইউপিতে ৬ জন বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। সেখানে সুষ্ঠু ভোট হলে বিদ্রোহী প্রার্থীরাও অনেক ভোট পাবেন। যা আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।

জানা গেছে, নির্বাচন সামনে রেখে পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো ইউনিয়ন। ভোট প্রার্থনায় চলছে মাইকিং। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চলছে নানা রকমের প্রচারণা। উন্নয়নের নানা ফুলঝুরি নিয়ে প্রতিদিনই প্রার্থীরা হাজির হচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ইউপি নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও উপজেলার এই তিন ইউপিতে বিএনপির নেতারা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।

সরেজমিনে উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, তিন ইউপিতেই নৌকার প্রার্থীরা দুশ্চিন্তায় আছেন বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে। বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলে নির্বাচনে জেতাটা যতটা সহজ হতো দলীয় প্রার্থীদের কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা বলছেন, নির্বাচনে দলের মনোনীত একজন প্রার্থী নৌকা নিয়ে নির্বাচন করছে, কিন্তু একই দলেরই একাধিক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। যে কারণে বিদ্রোহী প্রার্থীরাও ঘুরে ফিরে এই দলের কর্মীদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। দলের কর্মী হয়েও অনেকে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইউপি নির্বাচনে যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন ইতিমধ্যে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ডাংধরা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজিজুর রহমান (নৌকা) নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুজন। তারা হলেন- শাহ মো. মাসুদ (চশমা) ও মতিউর রহমান (আনারস)। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন বিএনপি নেতা আব্দুস সামাদ (অটোরিকশা), শফিকুল ইসলাম (ঘোড়া), মোস্তাইন মোহাম্মদ হাসান (ঢোল), আব্দুর রশিদ মন্ডল (মোটরসাইকেল) ও ইসলামি আন্দোলনের মাহবুব শাহ আকন্দ (হাতপাখা)।

চর আমখাওয়া ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৭ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগে মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম টোকন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুইজন। তারা হলেন- মো. জামাত আলী (চশমা) ও জিয়াউল ইসলাম (মোটরসাইকেল)। এছাড়াও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হালিম (লাঙল), স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ আলম (আনারস), মো. মাসুদ রানা (ঘোড়া) ও ইসলামি আন্দোলনের দেলোয়ার হোসেন (হাতপাখা) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

হাতীভাঙ্গা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন মোট ৬ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোছা. মাহমুদা চৌধুরী (নৌকা)। এই ইউপিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী দুই জন। তারা হলেন- আবুল কালাম আজাদ (মোটরসাইকেল) ও জুনায়েত হোসেন (আনারস)। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা তাজুল ইসলাম চৌধুরী (ঘোড়া), জাতীয় পার্টির ফজলুল করিম (লাঙল) ও আবু হানিফ (চশমা) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনটি ইউপিতে মোট ২১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।