চট্টগ্রামের শস্যভান্ডারখ্যাত রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিলে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। গুমাই বিলের ১৫ হাজার কৃষকের মনে এখন বইছে উৎসব। তবে শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় বিপাকে রয়েছেন বলে জানান কৃষকেরা।

এ বছর ৪০ শতক জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন চন্দ্রঘোনার আদুরপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ। মাড়াই ও গোলায় ধান তোলার কাজে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

আবদুল আজিজ বলেন, এবার ধানকাটা শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে। তাই তাঁর ধান গোছাতে পাঁচজন শ্রমিক দরকার হলেও তিনি মাত্র দুজনকে কাজে নিতে পেরেছেন। কাজের চাপ না নিতে পারলে এর মধ্যে একজন যেকোনো সময় চলে যেতে পারেন।

আবদুল আজিজ আরও বলেন, বাজারে এখন ধানকাটা শ্রমিকের বেশ কদর। এক শ্রমিককে দুই বেলা খাবার দিলে একদিনে ৭০০ টাকা দিতে হয়। খাবার না দিলে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দিতে হয়। এত টাকা দিয়ে শ্রমিক নেওয়া সম্ভব না।

চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৩ একর জমিতে আমন চাষ করেছি। কৃষি উপকরণ ও শ্রমিকের চড়া মূল্যের কারণে খরচ হয়েছে। ফলে ধানের বাম্পার ফলন হলেও ঋণ ও বর্গার টাকা পরিশোধ করে কোনো লাভ হবে না।’

রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের গুমাই বিলের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘এ বছর ২ একর জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শে উফশী জাতের আমন চাষ করেছি। জমিতে সার থেকে শুরু করে কীটনাশক সবকিছুই ব্যবহার করেছি তাঁদের পরামর্শে। তাই এবার ভালো ফলন হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লোকন বিশ্বাস বলেন, প্রতিবছরের মতো এ বছরও গুমাই বিলে ৩ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চলতি মৌসুমে গুমাই বিল থেকে প্রতি হেক্টরে সাড়ে ৫ টন হিসাবে ১৮ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।