৩৫ বছরেও হয়নি এমপিওভুক্তি

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬: ০০
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৯

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উপকূলীয় এলাকা চর এলাহীর অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চর এলাহী উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি। অবকাঠামো, নিজস্ব জমি, শিক্ষার্থীসহ এমপিওভুক্ত হওয়ার প্রয়োজনীয় সকল শর্ত পূরণ করার পরও বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এ কারণে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মাধ্যমিক শাখায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা।

১৯৮৭ সালে উপজেলার সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় চরাঞ্চলের অবহেলিত এই জনপদে শিক্ষার আলো জ্বালাতে তিন একর জমির ওপর এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে এবং এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যালয়টির স্বীকৃতি ও পাঠদানের অনুমোদন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে ১৯৯৪ সালে জুনিয়র শাখা এমপিওভুক্ত হয়।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০১ সালে মাধ্যমিক শাখা খোলা ও পাঠদান অনুমোদন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০১০ সাল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমোদন পায়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪৫২ জন। এর মধ্যে নবম শ্রেণিতে ১২৬ এবং দশম শ্রেণিতে ৭৬ জন। শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৩ জন।

২০০১ সাল থেকে পাঠদান ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের স্বীকৃতি পেয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন করে গেলেও অজ্ঞাত কারণে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষানুরাগী সুধীজনদের মধ্যে হতাো রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চর এলাহীর অধিবাসী আকবর হোসেন বলেন, উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এই উপকূলীয় এলাকার মানুষ এমনিতেই সকল আধুনিক নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। স্কুলটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় অষ্টম শ্রেণির পর থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়ার হার বেড়ে যায়। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যালয়টিকে বিশেষ বিবেচনায় হলেও এমপিওভুক্ত করতে স্থানীয় সাংসদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জানান, সরকারের উচিত দুর্গম উপকূলীয় এলাকার সুবিধাবঞ্চিত এসব শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হাত থেকে বাঁচাতে এমন দূর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ বিবেচনায় এমপিওভুক্ত করা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় জনবল কাঠামো মোতাবেক শিক্ষক নিয়োগ দিলেও তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত। এ কারণে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। এ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী নদীভাঙনের শিকার এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। অধিকাংশ অভিভাবক কৃষক ও মৎসজীবী। এ প্রান্তিক এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুষম শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়টিকে জরুরিভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ কামাল পারভেজ বলেন, এ বছরও সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকল চহিদা পূর্ণ করে এমপিওভুক্তির আবেদন করা হয়েছে। উপজেলা থেকে দূরবর্তী এ স্কুলটি এমপিওভুক্ত করা হলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার কমবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত