পুলিশের সামনে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় দৈনিক সানশাইনের স্টাফ রিপোর্টার রাজু আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত নগরীর ব্যস্ত শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকেরা।

এর আগে সকালে রফিকুল ইসলাম ও রাজু আহমেদকে একই চত্বরে লাঞ্ছিত করেন রাজশাহীর কয়েকজন কথিত সাংবাদিক। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে। তাঁরা হলেন লিয়াকত, রেজাউল করিম ও ফারুক হোসেন। তাঁরা নামসর্বস্ব অনলাইন ও পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

ক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা জানান, রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব নামের একটি ভুঁইফোড় প্রেসক্লাবের ব্যানারে কয়েকজন কথিত সাংবাদিক মানববন্ধনের আয়োজন করেছিলেন। তাঁরা সাংবাদিক পরিচয়ে নানা অপকর্মে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। সেখানে গেলে মাজহারুল ইসলাম চপল, হারুন, সুমন, রাজন, সোনা, লিয়াকত, রেজাউল করিম, রকি ও ফারুক হোসেনসহ বেশ কয়েকজন পুলিশের সামনেই রফিকুল ইসলাম ও রাজু আহমেদের ওপর হামলা চালান। এ হামলার প্রতিবাদে বেলা ১১টায় কামারুজ্জামান চত্বরে রাস্তায় বসে পড়েন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা। তাঁরা হামলাকারী কথিত সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মনের প্রত্যাহারের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। ওসি এসব কথিত সাংবাদিকদের প্রশ্রয় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দুপুরের দিকে পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সাংবাদিকদের নগর পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের সঙ্গে বসার অনুরোধ জানান। পরে প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, ডেইলি স্টারের সাংবাদিক আনোয়ার আলী হিমু, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ রিপন, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান জনিসহ একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসে।

অন্যদিকে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকেরা সড়ক অবরোধ করেই রাখেন। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়, হামলাকারী তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। আর পুলিশ কমিশনার বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মনকে প্রত্যাহার করতে তিন দিন সময় চেয়েছেন। আমরা ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে ওসি প্রত্যাহার না হলে বুধবার দুপুর ১২টায় বোয়ালিয়া থানা ঘেরাও করা হবে।’

এ ঘটনায় পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ও বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁরা মোবাইল ফোন ধরেননি।

তবে, পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কদ্দুস বলেন, তিনজনকে আটক করে থানায় রাখা হয়েছে। মামলা হলে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।