আ স ম ফিরোজ আবার দলে সমালোচনার মুখে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৪৯
Thumbnail image

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরের ঘটনা নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার পর আবার আলোচনা উঠে এসেছেন সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। পটুয়াখালী-২ আসনের এই সাংসদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী আদালতে নালিশি মামলা হয়েছে। মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি খান আলতাফ হোসেন ভুলু বলেছেন, ‘তিনি (আ স ম ফিরোজ) যে অন্যায় করছেন, তার বিচার হওয়া উচিত।’

উপজেলার বাউফল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. জাহিদুল হক (৪৬) বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আজ রোববার মামলাটি গ্রহণের বিষয়ে আদালতের আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়, ৯ ডিসেম্বর দুপুর পৌনে ১২টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় অফিসে বসে আ স ম ফিরোজ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতা-ঝাঁটা লাগিয়ে আনন্দমিছিল করেছি। তাতেই কিছু হয়নি, আর বাউফল আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা যারা আমার বিরোধিতা করে, তাদের ডজনখানেককে খুন করিলেও আমার কোনো ক্ষতি হবে না।’

ওই দিন বাদী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি ১৯৭৫ সালের সেই ঘটনা-সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এরপর ১২ ডিসেম্বর বাউফল থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালতে আরজি দেন।

তাঁর ওই মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আ স ম ফিরোজ বলেছিলেন, ‘আমি ৪০ বছর ধরে সংসদ সদস্য। নেত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে জানেন। আমি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিব না।’

জানতে চাইলে মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী খান আলতাফ হোসেন ভুলু আজকের কাগজকে বলেন, ‘এগুলো নিয়ে ১৯৭৫-এর পর থেকেই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তুলে ধরেছি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার প্রতিবাদে আমার নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। আসম ফিরোজ লোকজন ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই মিছিলে হামলা করে। বরিশাল আওয়ামী লীগ অফিস এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি যে যে দোকানে ও অফিসে ছিল তারা নামিয়ে ভাঙচুর করে। বিএম কলেজের ছবি ভাঙচুর করে। আসম ফিরোজ নিজেই করছে। আর এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারাও জানে।’

এদিকে আ স ম ফিরোজের দেওয়া বক্তব্যের কোনো অডিও কিংবা ভিডিও রেকর্ড আছে কিনা জানতে চাইলে মামলার বাদী জাহিদুল হক বলেন, ‘আমি মামলায় যে অভিযোগ তুলেছি, তা সত্য সাক্ষীরা যথা সময় আদালতে গিয়ে সাক্ষী দেবেন। এক ও দুই নম্বর সাক্ষী’ ৭৫-এর ঘটনার বাস্তব সাক্ষী।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মামলা করার পরে ওই দিন রাতে আমার বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে আ স ম ফিরোজের বাহিনী এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আ স ম ফিরোজ। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক আমি আ স ম ফিরোজের বিচার চাই।’

আ স ম ফিরোজ বাউফল পটুয়াখালী-২ আসনে ৬ বার দলীয় এবং একবার বিদ্রোহী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১০ম সংসদে ফিরোজ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত