মুনতাসির সিয়াম
রাফি মোহা. ইয়াসিন রহমানের বাড়ি রাজধানী ঢাকায়। এখন অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করছেন জার্মানির ফ্রেডরিখ শিলার ইউনিভার্সিটি ইয়েনায়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানিতে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক নিজের অভিজ্ঞতার গল্প জানিয়েছেন তিনি।
দেশ বাছাই
আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি সময়োপযোগী পাঠ্যক্রম ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের জন্য জার্মানির কদর বরাবরই। পড়াশোনা শেষে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে বেশ ভালো সুযোগও রয়েছে জার্মানিতে। অনেকের ক্ষেত্রে জার্মান ভাষা একটা প্রতিবন্ধকতা হলেও, ভাষাটা যদি একটু সময় দিয়ে রপ্ত করা যায়; সে ক্ষেত্রে আর পিছু ফিরে তাকানোর প্রয়োজন পড়ে না। কোর্স কারিকুলাম, খণ্ডকালীন কাজ ও টিউশন ফি ছাড়া পড়ার সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ–সবকিছুতেই জার্মানি সেরা। ক্লান্তি লাগলে বা ছুটিতে সেনজেনভুক্ত ২৬টি দেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগের কথা তো সবারই জানা। সব মিলিয়েই উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম পছন্দ ছিল জার্মানি।
আইইএলটিএস প্রস্তুতিজার্মানিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা হয় ইংরেজি ভাষায়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশির ভাগ দেশের ক্ষেত্রেই এমনটা প্রযোজ্য। কাজেই ইংরেজিতে পারদর্শী না হলে স্বাভাবিকভাবেই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে পড়াশোনা। আইইএলটিএসের জন্য আমি দুই মাস ধানমন্ডির উইংস লার্নিং সেন্টারে ক্লাস করেছিলাম। কোচিং শেষে পরীক্ষা দিই আইডিপি এডুকেশন থেকে এবং ৬.৫ স্কোর অর্জন করি ‘নো ব্যান্ড লেস দ্যান সিক্স’ স্কেলে। আইইএলটিএস প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলতে চাই, এ পরীক্ষার ফলাফলের মেয়াদ থাকে দুই বছর। কাজেই আমি এমনভাবে পরীক্ষার সময় ঠিক করেছিলাম, যেন মেয়াদের দুই বছরে অন্তত তিনবার আবেদন করার সুযোগ পাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়, অর্থাৎ একটু বুদ্ধি খাটালেই আবেদনের সুযোগ তুলনামূলক বেশি পাওয়া সম্ভব। আইইএলটিএসে সচরাচর বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের বেশি ভুগতে দেখা যায়। ভোগান্তি দূর করতে বন্ধুদের সঙ্গে রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং এবং স্পিকিংয়ের অনুশীলন করা খুব কাজে দেয়, ঠিক আমি যেমনটা সহায়তা পেয়েছিলাম।
আবেদনের প্রক্রিয়া
উইন্টারে সর্বোচ্চসংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়তে আসে জার্মানিতে। এ ক্ষেত্রে একমাত্র ‘DAAD’ ওয়েবসাইটে সঠিকভাবে জার্মানির সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবশ্যিক শর্তাবলি ও আবেদনের সময়সূচি সম্পর্কে জানা যায়। মূলত দুই ধরনের আবেদনপদ্ধতি রয়েছে। যার মধ্যে একটি সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে। দ্বিতীয়টি UniAssist সংস্থার মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আবেদনের ক্ষেত্রে পোর্টালে একটা অস্থায়ী অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের শর্ত অনুযায়ী নথিপত্র আপলোড করতে হয়, আর দ্বিতীয় মাধ্যমটির বেলায় UniAssist ওয়েবসাইটে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে ডকুমেন্ট আপলোড করার পাশাপাশি তাদের কাছে কুরিয়ারের মাধ্যমে নথিপত্র পাঠাতে হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ডিএইচএল বেশ জনপ্রিয়। খরচ হিসেবে ৪ হাজার ২০০ টাকার কিছু কম বা বেশি নেয় তারা। এরপর নথিপত্রের সত্যতা ও জার্মান স্কেলে স্কোর যাচাই করে শিক্ষার্থীকে আবেদন শুরুর দিকনির্দেশনা দেওয়ার কাজটিও করবে UniAssist। প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য তারা হ্যান্ডেলিং চার্জ হিসেবে ৭০ এবং পরের প্রতিটি আবেদন বাবদ ৩০ ইউরো করে চার্জ করে। শিক্ষার্থীর নথিপত্র তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠাবে। আবেদনের শেষ তারিখ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের মতামত জানা যায়।
ভর্তির সুযোগ
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির প্রক্রিয়া বেশ স্বচ্ছ, স্বতন্ত্র এবং গোপন। অফার লেটার পাওয়ার পর ব্লক অ্যাকাউন্টে এক বছরের জীবিকা খরচ বাবদ জমা করতে হয় ১০ হাজার ৩৩২ ইউরো। এই টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পর প্রতি মাসে প্রায় ৮৫৬ ইউরো করে ফেরত পাওয়া যাবে। কোরাকল, ফিন্টিবা, এক্সপাট্রিও, ডয়েচ ব্যাংকে ব্লক অ্যাকাউন্ট খোলা যায়; তারপর দেশ থেকে ইস্টার্ন কিংবা সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট শাখা থেকে দ্রুত টাকা ট্রান্সফার করার সুযোগ রয়েছে। অফার লেটার পেয়ে অ্যাম্বাসিতে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে সবার আগে। আবেদনের পর সাক্ষাৎকারের সময় পেতে নয় মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। বলে রাখা ভালো, একাধিকবার সাক্ষাৎকার দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কাজেই হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
স্কলারশিপ
জার্মানিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে DAAD এবং Erasmus স্কলারশিপ বেশ পরিচিত। এর বাইরেও কিছু স্টেট ফান্ডেড, ইউনিভার্সিটি ফান্ডেড স্কলারশিপ রয়েছে। কিন্তু সবেমাত্র পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সে সব স্কলারশিপের নির্ণায়ক পূরণ বেশ কঠিন। DAAD-এর ক্ষেত্রে যেমন ছয় বছরের বেশি পুরোনো ব্যাচেলর ডিগ্রি হওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে দুই বছর চাকরির অভিজ্ঞতা, জার্মান ভাষা জানা এবং আইইএলটিএসের স্কোর ৬.০০-এর ওপর থাকা বাঞ্ছনীয়। জার্মানিতে টিউশন ফি নেই। তবে প্রতি সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ২৫০-৩১৫ ইউরো সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন দিতে হয়। সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশনের সঙ্গে যাতায়াত বা ট্রান্সপোর্ট খরচ যুক্ত থাকে।
ভর্তির সময়
সামার বা গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারে জানুয়ারির মাঝামাঝি ভর্তির শেষ সময়। উইন্টার সেমিস্টারের ক্ষেত্রে সময়টা জুলাই মাসের মাঝামাঝি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য উইন্টার সেমিস্টারেই ভর্তির সুযোগ বেশি। আবেদন করার সময় ভালো মানের একটি মোটিভেশন লেটার, ইউরোপাস সিভি, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের অনুলিপি এবং প্রশংসাপত্র; আইইএলটিএসের প্রশংসাপত্র, ব্লক অ্যাকাউন্টের অনুমোদন জরুরি। পূর্ণাঙ্গ চেকলিস্ট পাওয়া যাবে জার্মান অ্যাম্বাসির ওয়েবসাইটে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচরাচর জার্মান স্কেলে ২.৫ সিজিপিএ চায়। সিজিপিএ কম হলেও আইইএলটিএসের স্কোর ৬.৫ কিংবা তার বেশি, নিয়মিত পাঠ্যক্রমবহির্ভূত কার্যক্রম, চাকরির অভিজ্ঞতা সুবিধা দেবে।
মোটিভেশনাল লেটারে ব্যক্তিত্ব, লক্ষ্য, নির্দিষ্ট বিষয়টি কেন বাছাই করলেন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়টি কেন পড়াশোনার জন্য বেছে নিলেন, সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে পারলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রদর্শক হিসেবে ফেসবুকে বেশ কিছু গ্রুপ রয়েছে। গ্রুপগুলোর ফাইল সেকশন বেশ তথ্যবহুল এবং ভালোই সাড়া পাওয়া যায় পোস্টের মাধ্যমে। বিসাগ (BSAAG), বেসিগ (BESSiG), বিএসএফজি (BSFG), বাংলাদেশি স্টুডেন্ট ফোরাম জার্মানিসহ জার্মানপ্রবাসীদের ব্লগ থেকেও আমি অনেক তথ্য পেয়েছিলাম।
কাজের সুযোগ
জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে ২০ ঘণ্টা। সে হিসাবে মাসে কাজ করা যায় প্রায় ৮০ থেকে ৮৭ ঘণ্টা। কাজ বাবদ ঘণ্টায় অন্তত ১০ ইউরোর মতো আয় করা খুবই সহজ। কাজভেদে সেই আয় বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৫ থেকে ১৮ ইউরো পর্যন্ত। বড় শহরে কাজ পাওয়া যায় জলদি। ছোট শহরেও যে কাজ নেই, এমনটা নয়। সব মিলিয়ে নিজের বসবাস ও খাবার খরচ জোগানো কঠিন কিছু নয়। সচরাচর ম্যাকডোনাল্ডস, বার্গার কিং, অ্যামাজন, ডয়েচ পোস্টসহ রেস্টুরেন্টগুলোয় কাজ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। মিনি জব বা চুক্তিভিত্তিক কাজেরও অভাব নেই। আর হ্যাঁ, খণ্ডকালীন ও পূর্ণকালীন কাজের বেতন থেকে কর কাটা হয়, যা কিনা নথিভুক্ত থাকে সোশ্যাল সিকিউরিটিতে; মিনিজবে ৪৫০ ইউরোর মতো আয় হওয়ায় কর নেই।
অনুলিখন: মুনতাসির সিয়াম
রাফি মোহা. ইয়াসিন রহমানের বাড়ি রাজধানী ঢাকায়। এখন অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করছেন জার্মানির ফ্রেডরিখ শিলার ইউনিভার্সিটি ইয়েনায়। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানিতে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক নিজের অভিজ্ঞতার গল্প জানিয়েছেন তিনি।
দেশ বাছাই
আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি সময়োপযোগী পাঠ্যক্রম ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের জন্য জার্মানির কদর বরাবরই। পড়াশোনা শেষে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে বেশ ভালো সুযোগও রয়েছে জার্মানিতে। অনেকের ক্ষেত্রে জার্মান ভাষা একটা প্রতিবন্ধকতা হলেও, ভাষাটা যদি একটু সময় দিয়ে রপ্ত করা যায়; সে ক্ষেত্রে আর পিছু ফিরে তাকানোর প্রয়োজন পড়ে না। কোর্স কারিকুলাম, খণ্ডকালীন কাজ ও টিউশন ফি ছাড়া পড়ার সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ–সবকিছুতেই জার্মানি সেরা। ক্লান্তি লাগলে বা ছুটিতে সেনজেনভুক্ত ২৬টি দেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগের কথা তো সবারই জানা। সব মিলিয়েই উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম পছন্দ ছিল জার্মানি।
আইইএলটিএস প্রস্তুতিজার্মানিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা হয় ইংরেজি ভাষায়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশির ভাগ দেশের ক্ষেত্রেই এমনটা প্রযোজ্য। কাজেই ইংরেজিতে পারদর্শী না হলে স্বাভাবিকভাবেই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে পড়াশোনা। আইইএলটিএসের জন্য আমি দুই মাস ধানমন্ডির উইংস লার্নিং সেন্টারে ক্লাস করেছিলাম। কোচিং শেষে পরীক্ষা দিই আইডিপি এডুকেশন থেকে এবং ৬.৫ স্কোর অর্জন করি ‘নো ব্যান্ড লেস দ্যান সিক্স’ স্কেলে। আইইএলটিএস প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলতে চাই, এ পরীক্ষার ফলাফলের মেয়াদ থাকে দুই বছর। কাজেই আমি এমনভাবে পরীক্ষার সময় ঠিক করেছিলাম, যেন মেয়াদের দুই বছরে অন্তত তিনবার আবেদন করার সুযোগ পাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়, অর্থাৎ একটু বুদ্ধি খাটালেই আবেদনের সুযোগ তুলনামূলক বেশি পাওয়া সম্ভব। আইইএলটিএসে সচরাচর বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের বেশি ভুগতে দেখা যায়। ভোগান্তি দূর করতে বন্ধুদের সঙ্গে রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং এবং স্পিকিংয়ের অনুশীলন করা খুব কাজে দেয়, ঠিক আমি যেমনটা সহায়তা পেয়েছিলাম।
আবেদনের প্রক্রিয়া
উইন্টারে সর্বোচ্চসংখ্যক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়তে আসে জার্মানিতে। এ ক্ষেত্রে একমাত্র ‘DAAD’ ওয়েবসাইটে সঠিকভাবে জার্মানির সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবশ্যিক শর্তাবলি ও আবেদনের সময়সূচি সম্পর্কে জানা যায়। মূলত দুই ধরনের আবেদনপদ্ধতি রয়েছে। যার মধ্যে একটি সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে। দ্বিতীয়টি UniAssist সংস্থার মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আবেদনের ক্ষেত্রে পোর্টালে একটা অস্থায়ী অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের শর্ত অনুযায়ী নথিপত্র আপলোড করতে হয়, আর দ্বিতীয় মাধ্যমটির বেলায় UniAssist ওয়েবসাইটে একটা অ্যাকাউন্ট খুলে ডকুমেন্ট আপলোড করার পাশাপাশি তাদের কাছে কুরিয়ারের মাধ্যমে নথিপত্র পাঠাতে হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ডিএইচএল বেশ জনপ্রিয়। খরচ হিসেবে ৪ হাজার ২০০ টাকার কিছু কম বা বেশি নেয় তারা। এরপর নথিপত্রের সত্যতা ও জার্মান স্কেলে স্কোর যাচাই করে শিক্ষার্থীকে আবেদন শুরুর দিকনির্দেশনা দেওয়ার কাজটিও করবে UniAssist। প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য তারা হ্যান্ডেলিং চার্জ হিসেবে ৭০ এবং পরের প্রতিটি আবেদন বাবদ ৩০ ইউরো করে চার্জ করে। শিক্ষার্থীর নথিপত্র তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠাবে। আবেদনের শেষ তারিখ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ৪-৬ সপ্তাহের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের মতামত জানা যায়।
ভর্তির সুযোগ
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির প্রক্রিয়া বেশ স্বচ্ছ, স্বতন্ত্র এবং গোপন। অফার লেটার পাওয়ার পর ব্লক অ্যাকাউন্টে এক বছরের জীবিকা খরচ বাবদ জমা করতে হয় ১০ হাজার ৩৩২ ইউরো। এই টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পর প্রতি মাসে প্রায় ৮৫৬ ইউরো করে ফেরত পাওয়া যাবে। কোরাকল, ফিন্টিবা, এক্সপাট্রিও, ডয়েচ ব্যাংকে ব্লক অ্যাকাউন্ট খোলা যায়; তারপর দেশ থেকে ইস্টার্ন কিংবা সোনালী ব্যাংকের স্টুডেন্ট শাখা থেকে দ্রুত টাকা ট্রান্সফার করার সুযোগ রয়েছে। অফার লেটার পেয়ে অ্যাম্বাসিতে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে সবার আগে। আবেদনের পর সাক্ষাৎকারের সময় পেতে নয় মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। বলে রাখা ভালো, একাধিকবার সাক্ষাৎকার দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কাজেই হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
স্কলারশিপ
জার্মানিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে DAAD এবং Erasmus স্কলারশিপ বেশ পরিচিত। এর বাইরেও কিছু স্টেট ফান্ডেড, ইউনিভার্সিটি ফান্ডেড স্কলারশিপ রয়েছে। কিন্তু সবেমাত্র পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সে সব স্কলারশিপের নির্ণায়ক পূরণ বেশ কঠিন। DAAD-এর ক্ষেত্রে যেমন ছয় বছরের বেশি পুরোনো ব্যাচেলর ডিগ্রি হওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে দুই বছর চাকরির অভিজ্ঞতা, জার্মান ভাষা জানা এবং আইইএলটিএসের স্কোর ৬.০০-এর ওপর থাকা বাঞ্ছনীয়। জার্মানিতে টিউশন ফি নেই। তবে প্রতি সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ২৫০-৩১৫ ইউরো সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন দিতে হয়। সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশনের সঙ্গে যাতায়াত বা ট্রান্সপোর্ট খরচ যুক্ত থাকে।
ভর্তির সময়
সামার বা গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারে জানুয়ারির মাঝামাঝি ভর্তির শেষ সময়। উইন্টার সেমিস্টারের ক্ষেত্রে সময়টা জুলাই মাসের মাঝামাঝি। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য উইন্টার সেমিস্টারেই ভর্তির সুযোগ বেশি। আবেদন করার সময় ভালো মানের একটি মোটিভেশন লেটার, ইউরোপাস সিভি, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের অনুলিপি এবং প্রশংসাপত্র; আইইএলটিএসের প্রশংসাপত্র, ব্লক অ্যাকাউন্টের অনুমোদন জরুরি। পূর্ণাঙ্গ চেকলিস্ট পাওয়া যাবে জার্মান অ্যাম্বাসির ওয়েবসাইটে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচরাচর জার্মান স্কেলে ২.৫ সিজিপিএ চায়। সিজিপিএ কম হলেও আইইএলটিএসের স্কোর ৬.৫ কিংবা তার বেশি, নিয়মিত পাঠ্যক্রমবহির্ভূত কার্যক্রম, চাকরির অভিজ্ঞতা সুবিধা দেবে।
মোটিভেশনাল লেটারে ব্যক্তিত্ব, লক্ষ্য, নির্দিষ্ট বিষয়টি কেন বাছাই করলেন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়টি কেন পড়াশোনার জন্য বেছে নিলেন, সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে পারলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে। এসব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রদর্শক হিসেবে ফেসবুকে বেশ কিছু গ্রুপ রয়েছে। গ্রুপগুলোর ফাইল সেকশন বেশ তথ্যবহুল এবং ভালোই সাড়া পাওয়া যায় পোস্টের মাধ্যমে। বিসাগ (BSAAG), বেসিগ (BESSiG), বিএসএফজি (BSFG), বাংলাদেশি স্টুডেন্ট ফোরাম জার্মানিসহ জার্মানপ্রবাসীদের ব্লগ থেকেও আমি অনেক তথ্য পেয়েছিলাম।
কাজের সুযোগ
জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে ২০ ঘণ্টা। সে হিসাবে মাসে কাজ করা যায় প্রায় ৮০ থেকে ৮৭ ঘণ্টা। কাজ বাবদ ঘণ্টায় অন্তত ১০ ইউরোর মতো আয় করা খুবই সহজ। কাজভেদে সেই আয় বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১৫ থেকে ১৮ ইউরো পর্যন্ত। বড় শহরে কাজ পাওয়া যায় জলদি। ছোট শহরেও যে কাজ নেই, এমনটা নয়। সব মিলিয়ে নিজের বসবাস ও খাবার খরচ জোগানো কঠিন কিছু নয়। সচরাচর ম্যাকডোনাল্ডস, বার্গার কিং, অ্যামাজন, ডয়েচ পোস্টসহ রেস্টুরেন্টগুলোয় কাজ করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। মিনি জব বা চুক্তিভিত্তিক কাজেরও অভাব নেই। আর হ্যাঁ, খণ্ডকালীন ও পূর্ণকালীন কাজের বেতন থেকে কর কাটা হয়, যা কিনা নথিভুক্ত থাকে সোশ্যাল সিকিউরিটিতে; মিনিজবে ৪৫০ ইউরোর মতো আয় হওয়ায় কর নেই।
অনুলিখন: মুনতাসির সিয়াম
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২১ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে