ইটভাটার ধোঁয়ায় পুড়ল ফসল

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০১
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ০০

লালমনিরহাট সদর ও আদিতমারী উপজেলায় ইটভাটার ধোঁয়ায় প্রায় ৪০০ বিঘা জমির ফসল পুড়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় গত রোববার ক্ষতিপূরণের দাবিতে সদর উপজেলার মোগলহাট-লালমনিরহাট মহাসড়ক অবরোধ করেন কৃষকেরা।

সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের জিরামপুর গ্রামের টু স্টার ইটভাটার ধোঁয়ায় এলাকার অনেক জমির ধান ও ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা রোববার সকালে ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানববন্ধন করেন।

এদিকে আদিতমারী উপজেলার পূর্ব দৈলজোর গ্রামে ওয়ান স্টার ব্রিকস নামের ভাটার ধোঁয়ায় প্রায় দেড় শ বিঘার জমির ধান পুড়ে গেছে। ওই ভাটার মালিক এন্তাজুর রহমান এসব জমির মালিককে ধানের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

আদিতমারীর পূর্ব দৈলজোর গ্রামের স্থানীয় কৃষক মাহমুদুল বলেন, ‘আমাদের আবাদি জমির দুদিকে দুটি ভাটার কারণে বরাবরই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। এবারে আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। ওই জমির ফসল দিয়েই আমার সারা বছরের খাবারের জোগান হয়। কিন্তু ভাটার ধোঁয়ায় আমার সব ফসল জমিতেই পুড়ে গেছে। ধান ছাড়াও আমাদের এলাকার ভুট্টা, গাছ, বাঁশসহ অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

সদর উপজেলার মোগলহাট মেহের আলী বলেন, ‘আমার ৫ সদস্যের পরিবার। আমি এক একর জমির ধান দিয়ে সারা বছর খাবার জোগাই। এটাই আমার একমাত্র আয়ের জায়গা। এখন আমি কী করব। আমার স্বপ্ন খেতেই পুড়ে গেছে। শুধু আমি নইম এই এলাকার শতাধিক কৃষকের স্বপ্নের ফসল এই ভাটার ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে।’

এ ছাড়া কৃষক মিরাজ, আবু বক্কর সিদ্দিক, ফজলু, ফজলার রহমানসহ শতাধিক কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তাঁদের দাবি, দ্রুত পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ এবং পরে এমনটা যেন আর ঘটে, এর স্থায়ী সমাধান করা হোক।

জমির ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে পূর্ব দৈলজোর গ্রামের ওয়ান স্টার ব্রিকস ভাটার ম্যানেজার মনজু মিয়া বলেন, ‘ধান গ্যাসের কারণে পুড়ে যেতে পারে। কয়লার আগুনের কার্বনের কারণে পুড়ে যায়। আমরা কৃষকদের নিয়ে বসে এসব ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেওয়া যায়, ওই বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করছি।’

আদিতমারী উপজেলার পূর্ব দৈলজোর গ্রামের ওয়ান স্টার ব্রিকস ভাটার মালিক এন্তাজুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা বলেন, ‘ধান কিছুদিনের মধ্যেই পাকা শুরু হবে। এই সময়টা ধানখেত স্পর্শকাতর অবস্থায় থাকে, একটু বেশি বাতাস হলেই ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভাটার ধোঁয়ায় অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের পাশে আছি।’

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা মাসুম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। টু স্টার ইটভাটার কাউকে খুঁজে পাইনি। তবে একজন কর্মচারী ছিল, আমরা দ্রুত ভাটার সকল কাগজপত্র নিয়ে ডেকেছি। ভাটাটি অবৈধ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত