১ বছরেই বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ০৯
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ৫৮

আমতলীতে নির্মাণের এক বছরেই বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়েছে। এতে জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে পড়েছে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ৭ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। দ্রুত ধসে পড়া বাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের আবুল মেম্বারের বাজারসংলগ্ন তাফালবাড়িয়া নদী। ২০২০ সালে ওই নদীর প্রবল স্রোতে বাজারসংলগ্ন ১৩০ মিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। এতে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালী, উত্তর সোনাখালী, পশ্চিম সোনাখালী, পূর্ব সোনাখালী, আলগী, গোডাঙ্গা ও আঠারোগাছিয়া গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে জান-মাল ও জমির ফসল নিয়ে বিপাকে পড়ে ওই সব গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। জান-মাল ও ফসল রক্ষায় এবং নদীর ভাঙন রোধে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০২১ সালে ইমারজেন্সি প্রকল্পের অধীনে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। গত বছর নভেম্বর মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩০ মিটার বাঁধ নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করে পাউবো। ওই কাজ পায় পটুয়াখালীর আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার স্বপন মৃধা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কারণে এক বছরের মাথায় বাঁধ নদীতে ধসে পড়েছে। প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস হলে ওই বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী। বাঁধ ধসে পড়ায় আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ৭টি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁধের একটি অংশ ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করলে ৭টি গ্রামের অন্তর ২০ হাজার মানুষ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বর্ষা মৌসুম আসার আগেই নদীতে ব্লক ফেলে বাঁধ সংস্কার করা জরুরি।

স্থানীয় নান্নু প্যাদা ও মনির বলেন, বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কারণে এক বছরের মাথায় বাঁধ ধসে পড়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হবে। দ্রুত নদীতে ব্লক ফেলে বাঁধ সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা।

সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের অনিয়মের কারণেই এক বছরের মাথায় ধসে পড়েছে। যদি দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা না হয় তবে পুরো বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধ নির্মাণের সময় অনিয়মে বাঁধা দিয়েছিলাম কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন আমার কথায় কর্মপাত করেনি।’

ঠিকাদার স্বপন মৃধা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘যথানিয়মেই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু স্রোতে বাঁধ ধসে পরলে আমি কী করব?’

আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রিপন হাওলাদার বলেন, বর্ষার মৌসুম আসার আগেই বাঁধ সংস্কার করা প্রয়োজন। না হলে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করলে ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হবে। দ্রুত নদীতে ব্লক ফেলে বাঁধ সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

বরগুনা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. আজিজুর রহমান সুজন বলেন, দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে। পরে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বরগুনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাউছার আলম বলেন, ওই নদীতে ব্লক নির্মাণ করে ভাঙন রোধে প্রকল্প দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত