শ্রীলঙ্কায় অনুপ্রাণিত সোহান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০: ৫৭

আর উপায় খুঁজে না পেলে মানুষ কী করে? একজন ডুবন্ত মানুষ খড়কুটো আঁকড়ে ধরে হলেও বাঁচার শেষ চেষ্টা করবেন। বাংলাদেশ দলের অবস্থা হয়তো এতটা সংকটাপন্ন নয়। তবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স এতটাই বাজে, এখান থেকে বের হওয়ার সব উপায়ের সন্ধানই চলছে। টানা ব্যর্থতায় দলকে মানসিকভাবে চাঙা রাখতে সব চেষ্টাই করা হচ্ছে।

এখানে সেরা উপায় কী, সেটিও অজানা নয়। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের বিশ্বাস, একটি জয় বদলে দিতে পারে পুরো ছবি। সোহান গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা যদি নিউজিল্যান্ডে বা বিশ্বকাপে একটা-দুইটা ম্যাচ জিতি, তাহলে আমাদের দলের ভেতরটা বদলে যাবে। একটা দল যখন জেতার অবস্থায় থাকে, দলের পরিবেশ পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে যায়।’ কিন্তু সেই জয়ই যে সোনার হরিণ হয়ে গেছে। সর্বশেষ ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ।

সোহানের কথার প্রসঙ্গটা এসেছে শ্রীলঙ্কা দলের এশিয়া কাপের সাফল্য থেকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বিপর্যস্ত হওয়ার পর যেভাবে তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে শিরোপা জিতেছে, অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনই বলা যায়। মানসিকভাবে শক্ত না থাকলে এভাবে ফিরে আসাটা অকল্পনীয়। সোহান অনুপ্রাণিত হচ্ছেন এশিয়া কাপজয়ী শ্রীলঙ্কা দল থেকে, ‘এশিয়া কাপে যেভাবে তারা ফিরেছে, অবশ্যই অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো। আমরা মনে করি, আমরাও খুব ভালো দল। কিন্তু আমাদের মাঠে ফলটা আনতে হবে। আমাদের কাছে প্রক্রিয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীলঙ্কার মধ্যে কী আছে, বলা কঠিন। হতে পারে মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্ত ছিল, যেটা মাঠে পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে।’

মানসিকভাবে শক্ত থাকার জায়গায় সব সময়ই পিছিয়ে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর সাকিব আল হাসানের কথার সারকথাও এমনই—গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে মানসিকভাবে শক্ত থাকতে পারছেন না খেলোয়াড়েরা। ‘নেইল বাইটিং’ ম্যাচগুলোয় তাই পরাজিত দলে থাকছে বাংলাদেশ। টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম এখান থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছেন। সোহানও বলছেন সে কথা, ‘দল হিসেবে ভালো করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে খুব খারাপ খেলেছি, তাও না। কিন্তু আমরা ক্লোজ ম্যাচ যেগুলো আমাদের দিকে আসতে পারত, এই জায়গায় হেরে যাচ্ছি। ৫০-৫০ বা ৬০-৪০ চান্স যে থাকে ম্যাচগুলো আমাদের দিকে কীভাবে আনা যায়, এই জায়গাগুলোতে উন্নতি করার সুযোগ আছে আমাদের।’

টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য পেতে ম্যাচে প্রভাববিস্তারী ক্রিকেটার চান শ্রীরাম। সোহানকে সেই ক্রিকেটারদের একজন মনে করেন তিনি। খেলাটা সোহান ভালো বুঝতে পারেন বলেও মনে করেন শ্রীরাম। আর সোহান নিজেকে নিয়ে মূল্যায়ন করলেন এভাবে ‘ভালো বা খারাপ বুঝি—এটা ভেবে লাভ নেই। মাঠে ভালো করতে হবে। আমাদের পারফর্ম করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে ইমপ্যাক্ট ফেলা গুরুত্বপূর্ণ। বড়বড় ইনিংসের চেয়ে ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ইমপ্যাক্ট ইনিংসগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ টি-টোয়েন্টিতে।’

সামনে ত্রিদেশীয় সিরিজ আর বিশ্বকাপে এই কাজটা করতে হবে সোহানদের। টি-টোয়েন্টি সংস্করণ থেকে একে একে সরছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা। যার সর্বশেষ সংযোজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও অবসর নেননি তিনি, দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে দলকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সোহান, ‘আমাদের যাঁরা অভিজ্ঞ আছেন, আমাদের ক্রিকেটে তাঁদের অবদান অনেক। তাঁরা আমাদের অনেক দূর নিয়ে গেছেন। এখন আমরা যারা আছি, আমাদের কাজ হলো এই অবস্থা থেকে আরও এগিয়ে যাওয়া।’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সোহান সাকিবের ডেপুটি। এ মাসে আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজে সাকিব না থাকলে সোহানের নেতৃত্বের আরেকটি পরীক্ষা হয়ে যেতে পারে দুবাইয়ে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত