অর্ধেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই বিজ্ঞানাগার

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪: ১৭

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সরকারি-বেসরকারি ৫৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টিতে নেই বিজ্ঞানাগার। যেখানে রয়েছে, সেগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে আলমারিতে কিছু যন্ত্রপাতি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক নীলফামারীজানে না, তাদের প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগার আছে কি না।

এতে করে ব্যবহারিক বিজ্ঞানশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বাড়ছে বিজ্ঞানের প্রতি ভীতি। দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অথচ বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাসিক ফির সঙ্গে বিজ্ঞানাগার ফি নেওয়া হয়।

উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুরে সরকারি ৫টি ও বেসরকারি ৫৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ১০টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  কোনোটিতে নেই বিজ্ঞানাগার। এ ছাড়া ১৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০টিতে, ১১টি স্কুল অ্যান্ড কলেজের মধ্যে ৫টিতে, ১৬টি মাদ্রাসার মধ্যে ১১টিতে এবং ৩টি ডিগ্রি কলেজের মধ্যে ১টিতে বিজ্ঞানাগার নেই।

উপজেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সৈয়দপুর ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয় ও রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, জরাজীর্ণ কক্ষের ভাঙাচোরা দুটি আলমারিতে ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য রাখা হয়েছে কয়েকটি যন্ত্রপাতি। কক্ষটি দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ থাকায় আলমারি ও বইয়ে ধুলার স্তূপ। মাকড়সার জাল ছেয়ে আছে এদিক-ওদিক।

আতিয়া পারভীন নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেছে। ফলাফল খুব একটা ভালো করেনি। সে যে প্রতিষ্ঠানে পড়েছে, সেখানে এক দিনও ব্যবহারিক ক্লাস হয়নি। এতে তার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের প্রতি একরকম ভীতি তৈরি হয়েছে। এখন সে আর বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চাইছে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একাধিক মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকেরা বলেন, প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগারের জন্য আলাদা একটি ফান্ড আছে, যার নামমাত্র একটি অংশ বিজ্ঞানাগারের কাজে লাগানো হয়। বাকি অর্থ খরচ করা হয় অন্য খাতে, যে কারণে বিজ্ঞানাগার সমস্যার অবসান হচ্ছে না।

সৈয়দপুর ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল জব্বার বলেন, ‘কক্ষসংকটের কারণে বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি ও কেমিক্যাল আমার কক্ষের আলমারিতে রাখা হয়েছে। যখন ক্লাস হয়, তখন শিক্ষকেরা সেগুলো শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যান।’

রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, বিজ্ঞানাগার তো পরের কথা, ক্লাসরুমেরই সংকট। এ কারণে স্টোররুমে যন্ত্রপাতি রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুমোদন দেওয়ার সময় তারা নিজ উদ্যোগে বিজ্ঞানাগার গড়ে তোলার লিখিত মুচলেকা দেয়। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই তা নেই। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানাগার নেই, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত