বাগানে ২৭১ জাতের গাছ ১০ কোটি টাকার ফল বিক্রি

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ২১
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ২০

শেরপুরের উদ্যমী যুবক মো. হজরত আলী (৩৭)। সফল ফলচাষি। তার বাগানে ২৭১ জাতের ৫০ হাজার ফলের গাছ রয়েছে। ২০১৯ সালে ১০০ বিঘা জমিতে মাল্টা, কমলা, আঙুর, ড্রাগন, লটকন, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, কুল বড়ই, সৌদি খেজুরসহ ১২টি জাতের ফল চাষ শুরু করেন। এখন ৮০০ বিঘা জমিতে রয়েছে ২৭১ জাতের ফল গাছ। এ বছর ১৪ কোটি টাকার ফল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ইতিমধ্যে ১০ কোটি টাকার ফল বিক্রি করা হয়েছে।

জানা গেছে, শেরপুর জেলা সদরের হাজি মো. ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর তিন ছেলের মধ্যে সবার বড় মো. হজরত আলী। এক সময় অর্থাভাবে খুব কষ্টে জীবনযাপন করতেন। রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে মনোহারী ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার ফাঁকে তিনি চিন্তা করেন নিজ এলাকায় একটি ফলের বাগান করার। এ ভাবনা থেকেই কৃষি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে শেরপুর সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের নিজ গ্রামে ২০১৯ সালে ১০০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেন মাল্টা, কমলা, আঙুর, ড্রাগন, লটকন, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, কুল বড়ই, সৌদি খেজুরসহ ১২টি প্রজাতির ফলের। পরে বিদেশি উন্নত জাতের এভোকাডো, ফ্রাই ছবেদা, মালবেরি, ত্বীন ফল, আলুবোখারা, ভিয়েতনামের নারিকেল, কিউই, আনার, থাই সরিষাসহ আরও ২৭১টি জাতের ফলের চাষ শুরু করেন। ইতিমধ্যে তিনি শেরপুর সদর উপজেলার রৌহা, ভাতশালা, কামারিয়া ও বলাইয়েরচর ইউনিয়নে প্রায় ৮০০ বিঘা জমিতে ১২টি ফল ও চারা উৎপাদন বাগান করেছেন। ১০০ বিঘা জমি নিজের থাকলেও বাকি জমি তিনি ২০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছেন।

ফলচাষি মো. হজরত আলী জানান, দেশের মানুষকে বিষমুক্ত তাজা ফল খাওয়ানোর চিন্তা থেকেই তিনি মা-বাবার দোয়া ফ্রুট গার্ডেন অ্যান্ড অ্যাগ্রো ফার্ম নামে ফলের বাগান শুরু করেন। প্রথমে ফল চাষ আশানুরূপ হওয়ায় পরবর্তীতে একটি নার্সারি ও আরও ১১টি ফলের বাগান তৈরি করেছি। আমার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে বেশি ফল উৎপাদন ও বিক্রি হচ্ছে। আমার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫২ হাজার ফলের গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার মাল্টা গাছ রয়েছে।

বাগানের ম্যানেজার আবু সাঈদ জানান, আমাদের বাগানে ক্রেতারা প্রতিনিয়তই আসতে থাকায় ফল বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। এ বছর ১৪ কোটি টাকার ফল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ইতিমধ্যে বাগান থেকে ১০ কোটি টাকার ফল বিক্রি করা হয়েছে। এতে আশা করা হচ্ছে, ১৪ কোটি টাকার বেশি টাকার ফল বিক্রি করা সম্ভব হবে। হজরত আলীর নার্সারি ও বাগানে এখন ২০০ বেশি শ্রমিক কাজ করছেন।

শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবাইয়া ইয়াসমিন জানান, আমাদের ধারণাই ছিল না শেরপুরের সমতল ভূমিতে মাল্টা চাষ সম্ভব হবে। কৃষক হজরত আলী মাল্টা চাষে সফল হওয়ায় উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছি আমরা। তার বাগানে মাল্টাসহ অন্যান্য ফল চাষে বিদেশি ফল আমদানি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, আমরা হজরত আলীসহ স্থানীয় কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত