ফসলি জমিতে ইটভাটা পোড়ানো হচ্ছে কাঠ

মোহাম্মদ উজ্জ্বল, মহম্মদপুর (মাগুরা)
Thumbnail image

মাগুরার মহম্মদপুরে ৩৭টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে তিন ফসলি জমিতে কিছু ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। হাতেগোনা কয়েকটি ভাটায় কয়লা পোড়ানো হলেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এসব ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফলে একদিকে কৃষিজমির পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।  স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, কালো ধোঁয়ায় তাঁদের অনেক সময় 
শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। এ ছাড়া টিনের চালে মরচে ধরে যায়। কিন্তু রহস্যজনক নীরবতার কারণে উপজেলার অধিকাংশ ইটভাটামালিক আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে  কাঠ পোড়াচ্ছেন দেদার।

ভাটার মালিক সূত্র জানায়, নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইট পোড়ানোর মৌসুম। সাধারণত এক চিমনির ইটভাটায় মৌসুমে ২৫ থেকে ৩০ লাখ ইট পোড়ানো যায়।

আর দুই চিমনিতে ৫০ থেকে ৬০ লাখ ইট পোড়ানো যায়। গড়ে প্রতিবছর মাগুরায় প্রতিটি ভাটায় ৫০ লাখ করে ইট পোড়ানো হয়। 
ইটভাটার মালিকদের হিসাব অনুযায়ী, ১ লাখ ইট পোড়াতে ২ হাজার মণ কাঠের প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে ৫০ লাখ ইট পোড়াতে কাঠ লাগে ১ লাখ মণ।

এই কাঠ সংগ্রহের জন্য বন কেটে উজাড় করা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। বেশির ভাগ ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে ফসলি জমি ঘেঁষে। ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে ফসলি জমি, বৃক্ষ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।

মহম্মদপুর উপজেলার ধোয়াইল এলাকায় অবস্থিত এনএসটি ব্রিকসের মালিক আবদুল কাইয়ুম বলেন, তাঁরা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে, যেগুলো এখনো তাঁরা পূরণ করতে পারেননি। এ কারণে অনুমোদন হয়নি। 
কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, খরচ বেশি হওয়ায় ব্যারেল চিমনির ইটভাটায় কয়লা পুড়িয়ে ইট তৈরি করলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণে কিছু কাঠ আর কিছু কয়লা দিয়ে ভাটা চালু রেখেছেন।

উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে কাঠ পোড়ানোর মহোৎসব চোখে পড়ে। জেলা শহরে যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মহম্মদপুর-মাগুরা সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি ইটভাটা রয়েছে। বেশির ভাগ ভাটাতেই পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।

প্রয়োজন অনুযায়ী জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেও কাঠ পোড়ানোর চিত্র দেখেও না দেখার ভান করছেন। এসব ইটভাটার লাইসেন্স বা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, ‘যে জমিতে ইটভাটা গড়ে তোলা হবে সেই জমি ‘এক ফসলি’, ‘দুই ফসলি’, ‘তিন ফসলি’ নাকি ‘পতিত’ সে বিষয়ে আমাদের দপ্তর থেকে শুধু প্রত্যয়ন দেওয়া হয়। এ ছাড়া আর কোনো কাজ আমাদের নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল বলেন, ‘ইটভাটা সম্পর্কে আমাদের দপ্তরে কোনো তথ্য নেই। এ বিষয়ে আপনাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তথ্য ও বক্তব্য নিতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত