আবু সাইম, ঢাকা
সেবার মান অনেক আগে থেকেই তলানিতে। ব্যবসা বলতে যা আছে, দিনে দিনে তা-ও লাটে উঠছে। সে দিকে মনোযোগ না দিয়ে এখন পরিকল্পনা করা হচ্ছে ‘ভবনওয়ালা’ হওয়ার। বাড়িওয়ালাদের মতো ভবন ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানোর চিন্তা। আর এই চিন্তা এসেছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড বা বিটিসিএলের কর্তাদের কাছ থেকে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তায় বিটিসিএলের যে চার একর জায়গা আছে, সেখানে ১৫ লাখ বর্গফুটের তিনটি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। এসব টাওয়ারে থাকবে আইটি, রেস্টুরেন্ট, জিমনেসিয়ামসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কত খরচ হবে জানেন? ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা।
সরকারি সংস্থাকে কেন ভবন ভাড়া দিয়ে খেতে হবে? আবার এভাবে ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করা সরকারি সংস্থার কর্মপরিধির (অ্যালোকেশন অব বিজনেস) সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না? বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল মতিনের কাছে এ প্রশ্ন করা হলে তাঁর আমতা-আমতা জবাব...‘না, আমাদের আয় বাড়বে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রকম লোকসানি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশাল ব্যয়ে ভবন করা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না। তা ছাড়া, ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করা কোনো সরকারি সংস্থার কাজ নয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনও নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কাজে বিটিসিএলের নেমে পড়া ঠিক হবে না। তাদের কাজ সেবা দেওয়া, লাভ করা বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য তাদের থাকবে কেন? তাদের নিজেদের জন্য যদি ভবন দরকার হয়, ততটুকু বানাতে পারে। কিন্তু ভবন বানিয়ে ভাড়া দিয়ে তা থেকে অর্থ উপার্জন করার চিন্তা কোনোভাবেই ঠিক না।’
মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে ভবন নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগের কাজ চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে শেষ হবে। আর ২০২৭ সালের মধ্যে টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এসব টাওয়ারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুইমিংপুল এবং একটি হেলিপ্যাডও থাকবে। সেগুলোও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে।
প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ৫০ কোটির বেশি টাকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সমীক্ষা বা প্রাক-জরিপ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের জন্য কোনো সমীক্ষা করেনি সংস্থাটি। বিটিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, টেলিকম খাতের সব সরকারি সংস্থাকে তারা এক ছাদের নিচে আনতে চান। সে কারণে এই ভবন করা হচ্ছে। দেশে টেলিকম খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে ছয়টি। এগুলো হলো বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ কেব্ল শিল্প লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড, টেলিটক ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা। ঢাকায় এসব সংস্থার নিজস্ব জায়গা ও ভবন রয়েছে। এই অবস্থায় প্রতিষ্ঠানগুলো একটি ভবনে আসতে চাইবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
১৫ লাখ বর্গফুটের এই ভবন নির্মাণে জমি ছাড়াই প্রতি বর্গফুটে খরচ হবে ৭ হাজার ১৬৪ টাকা। নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এই ব্যয় অনেক বেশি। প্রতি বর্গফুটে খরচ কোনোভাবে ৩ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাবের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আল–আমীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভবনের নির্মাণ খরচ নির্ভর করে কোন ধরনের পণ্য ব্যবহার হয়। জমির দাম বাদ দিলে সব জায়গায় নির্মাণ খরচ একই পড়ে। তবে বর্তমান বাজার দরে জমি ছাড়া ১০ থেকে ১২ তলা ভবনের প্রতিবর্গফুটের নির্মাণ ব্যয় পড়ে আড়াই থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। তবে আবাসিক ভবনের চেয়ে বাণিজ্যিক বা অফিস ভবনের খরচ আরও কম পড়ে।
বিটিসিএলের এমডি রফিকুল মতিন বলছেন, আসলে বিটিসিএলের ব্যবসা বহুমুখী করার জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের আয় থেকে তাঁরা এ ভবন নির্মাণ করবেন। নির্মাণ শেষে পাঁচ বছরের মধ্যেই বিনিয়োগ উঠে আসবে। এ টাওয়ার হলে টেলিকম খাতের অনেক উন্নতি হবে। সব কোম্পানি এক ছাতার নিচে আসবে। তাদের ব্যবসায় খরচ কমবে। গ্রাহক আরও উন্নত সেবা পাবে।
বছর বছর বড় লোকসান
বিটিসিএলের এমডি নিজেদের আয় থেকে টাওয়ার নির্মাণের কথা বললেও বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বছর বছর আয় কমছে প্রতিষ্ঠানটির। এর বিপরীতে বড় অঙ্কের লোকসান হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে কোম্পানির মোট রাজস্ব আয় ছিল ৬৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তার আগের অর্থবছরের আয় ছিল ৭১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আয় কমেছে ৪০ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ সালে ৩৩৬ কোটি, ২০১৬-১৭ সালে ১৮৩ কোটি, ২০১৭-১৮ সালে ৪৪৩ কোটি, ২০১৮-১৯ সালে ৩৬৮ কোটি, ২০১৯-২০ সালে ৩২৪ কোটি, ২০২০-২১ সালে ২৪৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে বিটিসিএল।
গ্রাহকসংখ্যাও দিন দিন কমছে
বিটিসিএলের প্রধান ব্যবসার ক্ষেত্র ল্যান্ড ফোনের গ্রাহক দিন দিন কমছে। ২০১২-১৩ সালে গ্রাহক ছিল ৯ লাখ ৩ হাজার। সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, ২০২১ সালে গ্রাহক ৪ লাখ ৮৪ হাজারে নেমে এসেছে। শুধু ফোন নয়, তাদের ইন্টারনেট সংযোগের মানও ভালো নয়। দেশে যেখানে ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহকসংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখের মতো হলেও বিটিসিএল পড়ে আছে ৩০ হাজারে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৩০ মে প্রকল্প অনুমোদন-সংক্রান্ত এক সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব মো. খলিলুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, সরকারি সংস্থা ব্যবসার জন্য নয়, সেবার জন্য। তা ছাড়া বিষয়গুলো মন্ত্রণালয় বা বিটিসিএলের ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেসের’ সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।’ সভায় প্রস্তাবিত ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৩৮ বর্গফুট ভবন নির্মাণের যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তা ছাড়া, কীভাবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে ইন্টারকানেক্টিভিটি ব্যয় কমবে, কীভাবে সেবার মান উন্নত করে এবং ব্যয় কমিয়ে সংস্থার আয় বাড়বে, তার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন আল-রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ প্রকল্পের বিষয়ে আমরা বলেছি, কোন প্রতিষ্ঠানের কী কাজ, তা অ্যালোকেশন অব বিজনেসে ঠিক করা আছে। তেমনি বিটিসিএলের জন্য ভবন ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানো তাদের কাজের মধ্যে পড়ে না। মার্কেট বানানো, ভাড়া দেওয়া তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কি না? আমরা মতামত দিয়েছি। এখন ঢাকা মেডিকেল যদি মনে করে অনেক জায়গা পড়ে আছে, মার্কেট বানিয়ে ভাড়া দেব, তা কি উচিত হবে?’
জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিটিসিএলের কাজ তো ইন্টারনেট বা ল্যান্ড ফোন সেবার মান বাড়ানো। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসব সেবা পৌঁছিয়ে দেওয়া। সেসব বাদ দিয়ে তারা কী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় নামছে? তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে এটা জনগণের টাকা। জনগণের টাকায় ব্যবসা করতে হলে তা নিয়ে প্রচুর চিন্তাভাবনা করতে হবে।’
সেবার মান অনেক আগে থেকেই তলানিতে। ব্যবসা বলতে যা আছে, দিনে দিনে তা-ও লাটে উঠছে। সে দিকে মনোযোগ না দিয়ে এখন পরিকল্পনা করা হচ্ছে ‘ভবনওয়ালা’ হওয়ার। বাড়িওয়ালাদের মতো ভবন ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানোর চিন্তা। আর এই চিন্তা এসেছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড বা বিটিসিএলের কর্তাদের কাছ থেকে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তায় বিটিসিএলের যে চার একর জায়গা আছে, সেখানে ১৫ লাখ বর্গফুটের তিনটি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। এসব টাওয়ারে থাকবে আইটি, রেস্টুরেন্ট, জিমনেসিয়ামসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কত খরচ হবে জানেন? ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা।
সরকারি সংস্থাকে কেন ভবন ভাড়া দিয়ে খেতে হবে? আবার এভাবে ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করা সরকারি সংস্থার কর্মপরিধির (অ্যালোকেশন অব বিজনেস) সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না? বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল মতিনের কাছে এ প্রশ্ন করা হলে তাঁর আমতা-আমতা জবাব...‘না, আমাদের আয় বাড়বে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রকম লোকসানি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশাল ব্যয়ে ভবন করা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না। তা ছাড়া, ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করা কোনো সরকারি সংস্থার কাজ নয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনও নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কাজে বিটিসিএলের নেমে পড়া ঠিক হবে না। তাদের কাজ সেবা দেওয়া, লাভ করা বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য তাদের থাকবে কেন? তাদের নিজেদের জন্য যদি ভবন দরকার হয়, ততটুকু বানাতে পারে। কিন্তু ভবন বানিয়ে ভাড়া দিয়ে তা থেকে অর্থ উপার্জন করার চিন্তা কোনোভাবেই ঠিক না।’
মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে ভবন নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগের কাজ চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে শেষ হবে। আর ২০২৭ সালের মধ্যে টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এসব টাওয়ারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুইমিংপুল এবং একটি হেলিপ্যাডও থাকবে। সেগুলোও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে।
প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ৫০ কোটির বেশি টাকার প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক সমীক্ষা বা প্রাক-জরিপ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের জন্য কোনো সমীক্ষা করেনি সংস্থাটি। বিটিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, টেলিকম খাতের সব সরকারি সংস্থাকে তারা এক ছাদের নিচে আনতে চান। সে কারণে এই ভবন করা হচ্ছে। দেশে টেলিকম খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে ছয়টি। এগুলো হলো বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ কেব্ল শিল্প লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড, টেলিটক ও টেলিফোন শিল্প সংস্থা। ঢাকায় এসব সংস্থার নিজস্ব জায়গা ও ভবন রয়েছে। এই অবস্থায় প্রতিষ্ঠানগুলো একটি ভবনে আসতে চাইবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
১৫ লাখ বর্গফুটের এই ভবন নির্মাণে জমি ছাড়াই প্রতি বর্গফুটে খরচ হবে ৭ হাজার ১৬৪ টাকা। নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এই ব্যয় অনেক বেশি। প্রতি বর্গফুটে খরচ কোনোভাবে ৩ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাবের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আল–আমীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভবনের নির্মাণ খরচ নির্ভর করে কোন ধরনের পণ্য ব্যবহার হয়। জমির দাম বাদ দিলে সব জায়গায় নির্মাণ খরচ একই পড়ে। তবে বর্তমান বাজার দরে জমি ছাড়া ১০ থেকে ১২ তলা ভবনের প্রতিবর্গফুটের নির্মাণ ব্যয় পড়ে আড়াই থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। তবে আবাসিক ভবনের চেয়ে বাণিজ্যিক বা অফিস ভবনের খরচ আরও কম পড়ে।
বিটিসিএলের এমডি রফিকুল মতিন বলছেন, আসলে বিটিসিএলের ব্যবসা বহুমুখী করার জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের আয় থেকে তাঁরা এ ভবন নির্মাণ করবেন। নির্মাণ শেষে পাঁচ বছরের মধ্যেই বিনিয়োগ উঠে আসবে। এ টাওয়ার হলে টেলিকম খাতের অনেক উন্নতি হবে। সব কোম্পানি এক ছাতার নিচে আসবে। তাদের ব্যবসায় খরচ কমবে। গ্রাহক আরও উন্নত সেবা পাবে।
বছর বছর বড় লোকসান
বিটিসিএলের এমডি নিজেদের আয় থেকে টাওয়ার নির্মাণের কথা বললেও বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বছর বছর আয় কমছে প্রতিষ্ঠানটির। এর বিপরীতে বড় অঙ্কের লোকসান হচ্ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে কোম্পানির মোট রাজস্ব আয় ছিল ৬৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তার আগের অর্থবছরের আয় ছিল ৭১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আয় কমেছে ৪০ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ সালে ৩৩৬ কোটি, ২০১৬-১৭ সালে ১৮৩ কোটি, ২০১৭-১৮ সালে ৪৪৩ কোটি, ২০১৮-১৯ সালে ৩৬৮ কোটি, ২০১৯-২০ সালে ৩২৪ কোটি, ২০২০-২১ সালে ২৪৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে বিটিসিএল।
গ্রাহকসংখ্যাও দিন দিন কমছে
বিটিসিএলের প্রধান ব্যবসার ক্ষেত্র ল্যান্ড ফোনের গ্রাহক দিন দিন কমছে। ২০১২-১৩ সালে গ্রাহক ছিল ৯ লাখ ৩ হাজার। সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, ২০২১ সালে গ্রাহক ৪ লাখ ৮৪ হাজারে নেমে এসেছে। শুধু ফোন নয়, তাদের ইন্টারনেট সংযোগের মানও ভালো নয়। দেশে যেখানে ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহকসংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখের মতো হলেও বিটিসিএল পড়ে আছে ৩০ হাজারে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৩০ মে প্রকল্প অনুমোদন-সংক্রান্ত এক সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব মো. খলিলুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, সরকারি সংস্থা ব্যবসার জন্য নয়, সেবার জন্য। তা ছাড়া বিষয়গুলো মন্ত্রণালয় বা বিটিসিএলের ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেসের’ সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।’ সভায় প্রস্তাবিত ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৩৮ বর্গফুট ভবন নির্মাণের যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তা ছাড়া, কীভাবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে ইন্টারকানেক্টিভিটি ব্যয় কমবে, কীভাবে সেবার মান উন্নত করে এবং ব্যয় কমিয়ে সংস্থার আয় বাড়বে, তার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন আল-রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ প্রকল্পের বিষয়ে আমরা বলেছি, কোন প্রতিষ্ঠানের কী কাজ, তা অ্যালোকেশন অব বিজনেসে ঠিক করা আছে। তেমনি বিটিসিএলের জন্য ভবন ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানো তাদের কাজের মধ্যে পড়ে না। মার্কেট বানানো, ভাড়া দেওয়া তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কি না? আমরা মতামত দিয়েছি। এখন ঢাকা মেডিকেল যদি মনে করে অনেক জায়গা পড়ে আছে, মার্কেট বানিয়ে ভাড়া দেব, তা কি উচিত হবে?’
জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিটিসিএলের কাজ তো ইন্টারনেট বা ল্যান্ড ফোন সেবার মান বাড়ানো। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসব সেবা পৌঁছিয়ে দেওয়া। সেসব বাদ দিয়ে তারা কী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় নামছে? তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে এটা জনগণের টাকা। জনগণের টাকায় ব্যবসা করতে হলে তা নিয়ে প্রচুর চিন্তাভাবনা করতে হবে।’
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১৭ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে