ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০৬: ৫৫
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৫৯

একাদশ জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল শনিবার। অধিবেশনের প্রথম দিনেই আলোচনায় উঠে এসেছে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুই সাংসদ। সেই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা।

পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো। বলা নেই কওয়া নেই, কোনো ধরনের পূর্ব-নোটিশ না দিয়ে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। একসঙ্গে এত পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি গত কয়েক বছরে করা হয়নি।

ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পর পরিবহন ধর্মঘটে জনগণের ভোগান্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো বৃহস্পতিবার। চাকরির পরীক্ষা হয় শুক্র ও শনিবার। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পরপরই পরিবহনগুলো ধর্মঘটে চলে গেল। এতে পরীক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ডিজেলের দাম বাড়ার পর বাসভাড়া ২৭ শতাংশ, নৌযান ভাড়া ৩৭ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। যেটা তেলের মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি। জানি না এখানে কেন সমন্বয় নেই।

বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ৭৫ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কোভিডের সময় হঠাৎ করে এই মূল্যবৃদ্ধি না করে কি বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত না? এমনিতেই বাজার নিয়ন্ত্রণ নেই। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে অন্যান্য পণ্যের দাম আরও বাড়ছে।

জাতীয় পার্টির আরেক সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে চরমভাবে আঘাত করেছে। দ্রব্যমূল্যও বেড়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ স্পর্শকাতর এই জ্বালানির মূল না বাড়িয়ে ঠিক রেখেছে। আমাদের সরকার ইচ্ছা করলে এটা করতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে যায়, তখন কিন্তু আমাদের এখানে কমানো হয় না। অজুহাত দিয়ে বাড়ানো হলে সেটা কত শতাংশ হতে পারে? আমাদের চিন্তা করা উচিত, আমরা কত পরিমাণ বাড়াতে পারি। বৃদ্ধির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ ক্যাবিনেটের নতুন করে চিন্তা করা উচিত। কারণ, জনস্বার্থ অগ্রাধিকার। জনস্বার্থে এটা পুনর্বিবেচনা করুন। হয় মূল্য কমান, না হয় ভর্তুকির ব্যবস্থা করুন।’

এর আগে গতকাল বিকেল ৪টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের এই অধিবেশন শুরু হয়। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে অনুষ্ঠিত অন্য অধিবেশনগুলোর মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংসদ চলবে। এ ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ থাকা সংসদ সদস্যরাই অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন। প্রতিদিন ১০০-১২০ জন সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে বসবে সংসদের বৈঠক। এ অধিবেশনের শেষের দিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ২৪ ও ২৫ নভেম্বর এ আলোচনা হতে পারে, যেখানে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত