Ajker Patrika

সৈকতে পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ২০
সৈকতে পর্যটকদের উচ্ছ্বাস

বিদায়ী বছরের শেষ দিন ছিল গত শুক্রবার। গতকাল শনিবার ছিল নতুন বছরের প্রথম দিন। দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটিতে নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ছুটে এসেছেন দেশি-বিদেশি পর্যটক।

এ দুই দিনে পর্যটক আর স্থানীয় লাখো মানুষের ভিড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে সৈকত। সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা আর লাবণী পয়েন্টে গত শুক্রবার রাতে কয়েক হাজার পর্যটক নানা আয়োজনে নববর্ষকে স্বাগত জানিয়েছেন।

এদিকে মেরিন ড্রাইভ ধরে পর্যটকেরা ছুটে গেছেন দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী ও পাতুয়ার টেকসহ বিভিন্ন সৈকতে। গতকাল পর্যটকের ভিড় ছিল সেন্ট মার্টিন, চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, নিভৃতে নিসর্গ, মহেশখালী ও রামুর দর্শনীয় স্থানে।

সম্প্রতি কয়েকটি নেতিবাচক ঘটনা ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তা এবং হয়রানি রোধে সতর্ক ছিলেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গত বৃহস্পতিবার থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ছিল লক্ষণীয়।

গতকাল বিকেল ৫টায় সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে দেখা গেছে, ১১ জন বিদেশি পর্যটক স্থানীয়দের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন। দু-একজন ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথা বলছেন। তাঁদের নিরাপত্তায় পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকজন সদস্য।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তাঁরা রাশিয়ার নাগরিক। দু-তিন দিন ধরে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে তাঁরা বিমোহিত হয়েছেন।

পঞ্চগড়ের বোদা থেকে পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে এসেছেন মিজানুর রহমান আকন্দ। তিন ছেলেমেয়ে সৈকতে গোসলে নেমে বেশ উচ্ছ্বাস করছিল। সন্তানদের আনন্দ দেখে তিনিও বেশ উৎফুল্ল ছিলেন।

পাশের রামুর কাউয়ারকূপ থেকে সৈকতে ঘুরতে এসেছেন নুরুল আবছার। তিনি বলেন, ‘একে তো ছুটির দিন, আবার বছরের প্রথম দিন। বেশ ভালো লাগছে। পর্যটকের চাপও খুব বেশি না। সব সময় এমন হলেই ভালো হতো। একই মত অনেক পর্যটকের।’

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে পুরোনো বছরকে বিদায় ও খ্রিষ্টীয় নববর্ষকে স্বাগত জানাতে দুই থেকে তিন লাখ মানুষ ভিড় করেন কক্সবাজারে। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় লাখো মানুষের হাঁটাচলায় সৈকতজুড়ে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। তবে করোনার কারণে দুই বছর ধরে বড় আয়োজনে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

পর্যটন ব্যবসায়ী জিকু পাল বলেন, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় পর্যটকদের মনে ভয় কাজ করছে। যে কারণে অনেকে সেন্ট মার্টিনমুখী হচ্ছেন। তবে কক্সবাজারেও আশানুরূপ পর্যটক এসেছেন।

ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, নববর্ষকে সামনে রেখে উল্লেখযোগ্য পর্যটক এসেছেন। সবার সমন্বিত উদ্যোগ ছিল কোনো পর্যটক যেন হয়রানির শিকার না হন।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, এবার পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সৈকতকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, পর্যটকদের সেবায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত