জ্বালানি নয়, বাতাসে চলবে হাদিসের সেচযন্ত্র

তাড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫: ১৪
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৪২

কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে কোনো প্রকার জ্বালানি ছাড়াই হাদিস মিয়া নামের এক ব্যক্তি আবিষ্কার করেছেন ‘বঙ্গবন্ধু অটো ওয়াটার সাপ্লায়ার’। একবার স্থাপন করার পর কোনো খরচ ছাড়াই সারা বছর জমি ও পুকুরে পানি সরবরাহ করা যাবে এই সাপ্লায়ার দিয়ে।

জানা গেছে, উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল (সদর) ইউনিয়নের পূর্ব পংপাচিহা জালধোয়া গ্রামের ইদ্রীস মুন্সির ছেলে কৃষক হাদিস মিয়ার (৪৫) একক প্রচেষ্টায় অভিনব পদ্ধতিতে তৈরি করেছেন তেল, মবিল ও বিদ্যুৎ ছাড়াই সেচ দেওয়ার যন্ত্র। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই অনবরত শব্দহীন এই মেশিন নদী থেকে পানি তুলে সরবরাহ করছে কৃষিজমি কিংবা পুকুরে। অভিনব এ আবিষ্কার দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে উৎসুক জনসাধারণ প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন হাদিস মিয়ার বাড়িতে।

সরেজমিন দেখা গেছে, নিজ বাড়িসংলগ্ন নরসুন্দা নদীর পাড়ে নিজের উদ্ভাবিত যন্ত্রের সাহায্যে বিরামহীনভাবে নদী থেকে পানি তুলে জমিতে সেচ দিচ্ছেন হাদিস মিয়া। নদীর পাড়ে ২২০ লিটারের ১২টি স্টিলের ড্রাম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই অটো ওয়াটার সাপ্লায়ার। নদী থেকে পানি ওঠানোর জন্য দুই ইঞ্চি ব্যাসের চারটি ১৮০ ফুট পাইপ ড্রামের সঙ্গে সংযোগ করা হয়েছে। সেই ড্রামে জমা হচ্ছে পানি। সেই পানি ড্রামের নিচ দিয়ে চার ইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপ দিয়ে পতিত হচ্ছে জমিতে।

হাদিস মিয়ার এই আবিষ্কারের শুরুটা হয় পাঁচ বছর আগে। তিনি জানান, প্রথম বছর ছোট ছোট প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে মানব দেহে স্যালাইন পুশ করার পাইপ দিয়ে শুরু করেন এই প্রক্রিয়া। ভালো কাজ করছে দেখে হাফ ইঞ্চি পাইপ দিয়ে নিজের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। সফলতাও পান। নিজের ছয় একর জমিতে ও পুকুরে প্রায় ৪০০ ফুট দূরে সারা বছর খরচ ছাড়াই সেচ দিচ্ছেন তিনি। এতে মোট খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। ভবিষ্যতে নিজের আবিষ্কার আরও বৃদ্ধি করে ২০টি ড্রামের সংযোগ করার ইচ্ছা পোষণ করেন হাদিস মিয়া। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পেলে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চান নিজের এ আবিষ্কার। একবার স্থাপন করার পর কোনো খরচ ছাড়াই সারা বছর সেচ দেওয়া যাবে জমিতে।

হাদিস মিয়া আরও জানান, পেশায় তিনি বাস-ট্রাকের ইঞ্জিন মিস্ত্রি। বাতাসকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু আবিষ্কারের নেশা ছিল হাদিস মিয়ার। নিজের মেধা ও ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে সফলতাও পেয়েছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘হাদিস মিয়ার অটো ওয়াটার সাপ্লাইয়ের কথা আমরা শুনেছি এবং কথা বলেছি। অচিরেই আমরা এই আবিষ্কার সরেজমিন দেখে ওপর মহলে আলোচনা করব। তা ছাড়া হাদিস মিয়াকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত