আমের জেলায় এখন পানের বড় বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭: ৫৯
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮: ২৭

আমের জন্য রাজশাহীর খ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশেও। তবে আমের চেয়ে রাজশাহীতে মিষ্টি পানের বাজারই বড়। এবার ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমির আমবাগান থেকে রাজশাহীর অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। অথচ বছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আসে সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমির বরজ থেকে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারা দেশে পান উৎপাদিত হলেও রাজশাহীর পানের কদর অনেক। মিষ্টি এই পান যায় বিদেশেও। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর, তানোর, পবা ও পুঠিয়া উপজেলায় এখন ৪ হাজার ৪৯৬ হেক্টর জমিতে বরজ আছে। চাষের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৩৮ হাজার ৯০০ কৃষক। গত বছর জেলায় ৭৩ হাজার ৭৭১ টন পান উৎপাদিত হয়। এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৭৬ হাজার ৬৭৮ টন। তবে পান নিয়ে দেশে গবেষণা না হওয়ায় ভুগতে হয় চাষিদের।

তবে অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতেই দেশের প্রথম পান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আম নিয়ে যেমন রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রে গবেষণা হয়, তেমনি পান নিয়েও গবেষণা হবে। আরেকটি সুখবর হলো, রাজশাহীর মিষ্টি পানকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে গত ৩০ আগস্ট শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। স্বীকৃতি পেলে মিষ্টি পানের বাজার আরও বাড়বে।

মোহনপুর উপজেলার কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কার্তিক মাসে পান রোপণ করলে চৈত্র মাস পর্যন্ত আহরণ করা যায়। আবার বৈশাখ মাসে পুরোনো গাছ নতুন করে বাঁধতে হয়। এসব গাছ থেকে পান আহরণ চলে আষাঢ় মাস পর্যন্ত। এভাবে সারা বছর বরজ থেকে পান পাওয়া যায়। ৬৪টি পানপাতায় এক ‘বিড়ি’ হিসাব করা হয়। আর ৩২ বিড়িতে হয় এক ‘পোন’। এবার চাষিরা ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকা দরে এক পোন পান বিক্রি করতে পেরেছেন। এক বিঘা জমিতে পান চাষে দুই লাখ টাকা খরচে চার লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে। এই লাভে খুশি চাষিরা। তবে তাঁদের চিন্তা রোগবালাই নিয়ে।

উপজেলার সাঁকোয়া গ্রামের পানচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, বছরের পর বছর তাঁরা পান চাষ করে আসছেন। এলাকায় এখন নতুন নতুন বরজ হচ্ছে। কিন্তু রোগবালাইয়ের বিষয়ে সঠিক পরামর্শ পাওয়া যায় না। এখনো বরজে বরজে পানের কাণ্ডপচা রোগ দেখা দিয়েছে। তা দমন করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এ জন্য পান গবেষণাকেন্দ্র দরকার। তাহলে যেকোনো রোগবালাই সহজে দমন করা যাবে।

মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে একটি পান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। একটি প্রতিনিধিদল এরই মধ্যে রাজশাহী এসে ঘুরে গেছেন। দলটি মোহনপুরের মৌগাছি এলাকায় পান গবেষণা কেন্দ্রের জন্য জায়গা পছন্দ করেছেন। এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বাজারজাতকরণের সুবিধার জন্য রাজশাহীর মিষ্টি পানের জিআই স্বীকৃতি দরকার। এ জন্য আবেদনও করেছেন। এটা পেলে রাজশাহীর পানের পরিচিতি, সুনাম ও চাহিদা বাড়বে। তখন চাষিরাও ভালো দাম পাবেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত