মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
আরিফার ছোট মেয়ে একদিন বাবার সঙ্গে গিয়ে জেব্রা ফিঞ্চ কিনে আনেন। এতে আরিফা বেশ বিরক্ত হন। এতটুকুন মেয়ে তো আর পাখির যত্ন নিতে পারবে না। সংসারের দেখভাল করে আবার এই উটকো কাজ তাঁকেই করতে হবে! খুলনায় স্বামী, দুই মেয়ে আর নাতিদের নিয়ে তাঁর বিশাল পরিবার। বিরক্ত হওয়াটা তাই স্বাভাবিক ছিল। কিছুদিনের মধ্যে ছোট মেয়ে পড়াশোনার জন্য শহরের বাইরে চলে যান। মেয়ের অবর্তমানে পাখি দেখাশোনার ভার পড়ে আরিফার ওপরেই। দায়িত্ব যখন পড়েই যায়, সেটি তিনি ভালোভাবে পালনের চেষ্টা করেন। তা ছাড়া চড়ুইয়ের মতো চঞ্চল কিন্তু মায়াভরা জেব্রা ফিঞ্চ তত দিনে তাঁর মনে দাগ কেটেছে। পানি দিলে পাখিটি চমৎকারভাবে গোসল করে এবং বাচ্চাকে খাওয়ায়। নারকেলের ছোবড়া, ঘাস ইত্যাদি মুখে করে নিয়ে এসে সুন্দর বাসা বানায়।
মেয়ে পড়তে যাওয়ার পর পাখির যত্নআত্তির জন্য গুগল ও ইউটিউবে ঢুঁ মারেন আরিফা। পোষা পাখি বিশেষজ্ঞ অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শও নেন। এরপর দুটো ব্লু গোল্ডিয়ানের ছানা কেনেন। তবে সেযাত্রায় দুটো ছানাই মারা যায়। এই ব্যর্থতাই তাঁকে যেন এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়। তিনি ধীরে ধীরে পাখি পোষা এবং তাদের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোতে দক্ষ হয়ে ওঠেন।
প্রথমবার গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনে আরিফা সবাইকে রীতিমতো চমকে দেন। তাঁর কাছে থাকা পাখি ছয়টি ডিম পাড়ে এবং সব কটি ডিম থেকে ছানা ফোটে। সেদিন আরিফার খুব আনন্দ হয়েছিল। কারণ, অধিকাংশ পাখিপ্রেমী গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায় বেঙ্গলি ফিঞ্চের মাধ্যমে। তিনি সেটি করেননি। আরিফা গোল্ডিয়ান জেব্রার পাশাপাশি লং টেইলড ফিঞ্চ ব্রিড করিয়েছেন। গত চার বছর তিনি প্রায় ১৬০টি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের বাচ্চা উৎপাদনে সফল হয়েছেন। নিজেদের পাঁচতলা বাসার ঘরে ছোট ছোট খাঁচায় তিনি পাখি পালন করেন। বর্তমানে ১৫ জোড়া জেব্রা ফিঞ্চ, ৪ জোড়া বেঙ্গলি ফিঞ্চ, সাত জোড়া গোল্ডিয়ান ফিঞ্চসহ বিভিন্ন পাখির ২০টির মতো বাচ্চা রয়েছে আরিফার।
পোষা পাখির জগতে, বিশেষ করে যাঁরা গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ পছন্দ করেন, তাঁরা জানেন, আরিফার পাখি মানের দিক থেকে সেরা। মাঝে মাঝে ব্যাক পেইনের কষ্টে হাঁসফাঁস করেন আরিফা। দাঁড়াতেই কষ্ট হয়। তবে পাখির কাছে গেলে সেই কষ্ট দূর হয় তাঁর। এত কষ্ট করে তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার। একটি পাখির ছবি তোলা প্রতিযোগিতায় আরিফা দ্বিতীয় হয়েছেন। সম্প্রতি এভিয়ান কমিউনিটির মেলায় বেস্ট জেব্রা ফিঞ্চ ক্যাটাগরিতে প্রথম রানারআপ হয়েছেন তিনি।
আরিফা পাখি বিক্রি করেন সারা বছর। সেই টাকায় পাখির খাওয়াসহ সব খরচ চলে যায়। আবার কিছু টাকা থেকেও যায়। তিনি গ্রিন ব্যাক পেয়ার ৫ হাজার, ইয়েলো পেয়ার ৫ হাজার এবং ব্লু ব্যাক পেয়ার ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তবে শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ বিক্রি করেন ৪ হাজার টাকায়।
আরিফা যখন পাখির রুমে কাজ করেন, তখন পারিবারিক অশান্তি, মানসিক চাপ—সব ভুলে যান। তাঁর কাছে মনে হয়, অবসরপ্রাপ্ত নারী ও পুরুষদের সময় কাটানোর চমৎকার একটা পদ্ধতি পাখি পালন। এখান থেকে হাতখরচের টাকাও আয় করা সম্ভব।
পাখি পালন করতে গিয়ে ঘরসংসার ঠিক আছে তো? আরিফা মৃদু হেসে বলেন, ‘পাখি আমি ভালোবাসি। ওদের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার কারণে সব ঠিকঠাক আছে।’
লেখক: সহকারী ব্যবস্থাপক, সেলস অপারেশনস, ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড
আরিফার ছোট মেয়ে একদিন বাবার সঙ্গে গিয়ে জেব্রা ফিঞ্চ কিনে আনেন। এতে আরিফা বেশ বিরক্ত হন। এতটুকুন মেয়ে তো আর পাখির যত্ন নিতে পারবে না। সংসারের দেখভাল করে আবার এই উটকো কাজ তাঁকেই করতে হবে! খুলনায় স্বামী, দুই মেয়ে আর নাতিদের নিয়ে তাঁর বিশাল পরিবার। বিরক্ত হওয়াটা তাই স্বাভাবিক ছিল। কিছুদিনের মধ্যে ছোট মেয়ে পড়াশোনার জন্য শহরের বাইরে চলে যান। মেয়ের অবর্তমানে পাখি দেখাশোনার ভার পড়ে আরিফার ওপরেই। দায়িত্ব যখন পড়েই যায়, সেটি তিনি ভালোভাবে পালনের চেষ্টা করেন। তা ছাড়া চড়ুইয়ের মতো চঞ্চল কিন্তু মায়াভরা জেব্রা ফিঞ্চ তত দিনে তাঁর মনে দাগ কেটেছে। পানি দিলে পাখিটি চমৎকারভাবে গোসল করে এবং বাচ্চাকে খাওয়ায়। নারকেলের ছোবড়া, ঘাস ইত্যাদি মুখে করে নিয়ে এসে সুন্দর বাসা বানায়।
মেয়ে পড়তে যাওয়ার পর পাখির যত্নআত্তির জন্য গুগল ও ইউটিউবে ঢুঁ মারেন আরিফা। পোষা পাখি বিশেষজ্ঞ অনেকের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শও নেন। এরপর দুটো ব্লু গোল্ডিয়ানের ছানা কেনেন। তবে সেযাত্রায় দুটো ছানাই মারা যায়। এই ব্যর্থতাই তাঁকে যেন এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়। তিনি ধীরে ধীরে পাখি পোষা এবং তাদের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোতে দক্ষ হয়ে ওঠেন।
প্রথমবার গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনে আরিফা সবাইকে রীতিমতো চমকে দেন। তাঁর কাছে থাকা পাখি ছয়টি ডিম পাড়ে এবং সব কটি ডিম থেকে ছানা ফোটে। সেদিন আরিফার খুব আনন্দ হয়েছিল। কারণ, অধিকাংশ পাখিপ্রেমী গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায় বেঙ্গলি ফিঞ্চের মাধ্যমে। তিনি সেটি করেননি। আরিফা গোল্ডিয়ান জেব্রার পাশাপাশি লং টেইলড ফিঞ্চ ব্রিড করিয়েছেন। গত চার বছর তিনি প্রায় ১৬০টি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চের বাচ্চা উৎপাদনে সফল হয়েছেন। নিজেদের পাঁচতলা বাসার ঘরে ছোট ছোট খাঁচায় তিনি পাখি পালন করেন। বর্তমানে ১৫ জোড়া জেব্রা ফিঞ্চ, ৪ জোড়া বেঙ্গলি ফিঞ্চ, সাত জোড়া গোল্ডিয়ান ফিঞ্চসহ বিভিন্ন পাখির ২০টির মতো বাচ্চা রয়েছে আরিফার।
পোষা পাখির জগতে, বিশেষ করে যাঁরা গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ পছন্দ করেন, তাঁরা জানেন, আরিফার পাখি মানের দিক থেকে সেরা। মাঝে মাঝে ব্যাক পেইনের কষ্টে হাঁসফাঁস করেন আরিফা। দাঁড়াতেই কষ্ট হয়। তবে পাখির কাছে গেলে সেই কষ্ট দূর হয় তাঁর। এত কষ্ট করে তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার। একটি পাখির ছবি তোলা প্রতিযোগিতায় আরিফা দ্বিতীয় হয়েছেন। সম্প্রতি এভিয়ান কমিউনিটির মেলায় বেস্ট জেব্রা ফিঞ্চ ক্যাটাগরিতে প্রথম রানারআপ হয়েছেন তিনি।
আরিফা পাখি বিক্রি করেন সারা বছর। সেই টাকায় পাখির খাওয়াসহ সব খরচ চলে যায়। আবার কিছু টাকা থেকেও যায়। তিনি গ্রিন ব্যাক পেয়ার ৫ হাজার, ইয়েলো পেয়ার ৫ হাজার এবং ব্লু ব্যাক পেয়ার ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তবে শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি গোল্ডিয়ান ফিঞ্চ বিক্রি করেন ৪ হাজার টাকায়।
আরিফা যখন পাখির রুমে কাজ করেন, তখন পারিবারিক অশান্তি, মানসিক চাপ—সব ভুলে যান। তাঁর কাছে মনে হয়, অবসরপ্রাপ্ত নারী ও পুরুষদের সময় কাটানোর চমৎকার একটা পদ্ধতি পাখি পালন। এখান থেকে হাতখরচের টাকাও আয় করা সম্ভব।
পাখি পালন করতে গিয়ে ঘরসংসার ঠিক আছে তো? আরিফা মৃদু হেসে বলেন, ‘পাখি আমি ভালোবাসি। ওদের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসার কারণে সব ঠিকঠাক আছে।’
লেখক: সহকারী ব্যবস্থাপক, সেলস অপারেশনস, ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে