দিঘলিয়ায় জেলের জালে ডিভাইসসহ কচ্ছপ!

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৪১
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২২, ১৯: ৫৭

খুলনার দিঘলিয়ায় স্থানীয় একজন জেলের জালে বিপন্ন প্রজাতির একটি কচ্ছপ ধরা পড়েছে। এর পিঠে স্যাটেলাইট ট্রাকিং ডিভাইস বসানো ছিল। কচ্ছপের গতি ও বিচরণ নির্ণয়বিষয়ক একটি গবেষণার অংশ হিসেবে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মীরা এটি নদীতে ছেড়ে দিয়েছিল বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট এলাকায় স্থানীয় এক জেলের জালে আটকা পড়ে এ কচ্ছপ। ওই দিন গাজীরহাট ক্যাম্প পুলিশ সেটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগকে খবর দেয়। এরপর গতকাল সকালে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেটিকে উদ্ধার করে করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যান।

করমজল পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, ‘বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে খবর পেয়ে আমাদেরকে জানালে আমরা সেটি সেখান থেকে এনে করমজলে রেখেছি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এলাকাবাসীর কাজ থেকে জানা যায়, গাজীরহাট ইউনিয়নের ডোমরা গ্রামের অর্জুন বৈরাগী নামে একজন কৃষক আতাই নদে মাছ ধরার সময় কচ্ছপটি তার জালে আকটা পড়ে। উদ্ধারকৃত কচ্ছপটির ওজন ৮ কেজি। কচ্ছপটির খোলসের ওপরে ট্রাকিং ডিভাইস লাগানো ছিল। মোবাইল নম্বরসহ কিছু সংকেত দেওয়া ছিল।

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে গড়ে ওঠা বাটাগুরবাস্কা প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রব জানান, এটি বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপ যা বিলুপ্তপ্রায়।

তিনি আরো জানান, এক সময় বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারে বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপের অস্তিত্ব ছিল। যে কয়টির অস্থিত্ব রয়েছে তা সংগ্রহ করেই এ গবেষণার কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। আব্দুর রব আরও বলেন, বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুরবাস্কা প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ, প্রজনন, গতি ও আচরণ বিধি, বিচরণ ক্ষেত্র, পানিতে ডুবে ও ভেসে থাকার সময় নির্ণয়সহ নানা কার্যক্রম জানতে বাংলাদেশ বন বিভাগ, অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন যৌথভাবে কাজ করছে। পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে এ প্রকল্পের অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়।

এরপর ২০১৮, ১৯ ও ২০ সালে দফায় দফায় ১৫টি স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সমৃদ্ধ কচ্ছপ সুন্দরবন ও সাগর মোহনায় অবমুক্ত করা হয়। কচ্ছপের পিঠে বসানো স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা এক বছরের। এরপর এমনিতেই এটি খসে পড়ে যায়। এক বছরেই এর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন অস্ট্রিয়ার ভিজুয়েনা ও আমেরিকার টিএসএ’র গবেষকেরা। এ প্রকল্পে ব্যাপক সফলতা এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

দিঘলিয়া থানার ওসি মোঃ আহসানউল্লাহ চৌধুরী বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মীরা সুন্দরবন করমজল এলাকা থেকে কচ্ছপটির গতিবেগ নির্ণয়ের জন্য নদীতে ছেড়ে দেয়। কচ্ছপটি স্থানীয় একজন জেলের জালে ধরা পড়ে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত