এক হাজার গ্রাহকের আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও সংস্থা

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪: ৪৭
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৪

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় এক হাজার গ্রাহকের আমানতের আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে রুদ্র ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রুদ্র ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রঞ্জু সরকারসহ পরিচালনা পর্ষদের ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক ১১টি মামলা হয়েছে।

প্রতারণার শিকার নয়জন গ্রাহক গতকাল রোববার সকালে ধুনট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রুদ্রবাড়িয়া-বিলপথিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বকুল আমিন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বকুল আমিন বলেন, উপজেলার রুদ্রবাড়িয়া গ্রামের রঞ্জু সরকার বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (আরডিএ) একটা প্রজেক্টে চাকরি করতেন। সেখানকার প্রজেক্ট শেষ হওয়ায় তিনি গ্রামে ফিরে আসেন। ২০১৮ সালে তিনি, তাঁর বাবা, স্ত্রী, ভাইসহ আরও কয়েক ব্যক্তি মিলে একটি এনজিও গড়ে তোলেন। ওই এনজিওর নাম দেন রুদ্র ফাউন্ডেশন। অর্থ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাঁরা এনজিওটির কার্যক্রম শুরু করেন। শেরপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড শিরিন মহল নামের একটি বাসাভাড়া নিয়ে সেটাকে এনজিওটির প্রধান কার্যালয় বানান। সেখান থেকে তাঁরা শেরপুর ও ধুনটে গ্রাহক তৈরির কার্যক্রম চালাতে থাকেন।

এ সময় তাঁরা এলাকার লোকজনকে অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে রুদ্র ফাউন্ডেশনে বিনিয়োগ করাতে থাকেন। এ সময় ওই নয় ব্যক্তি এই এনজিওর কয়েকটি পলিসি গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালে তাঁরা ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ৭১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন।

এর মধ্যে শিক্ষক বকুল আমিন ১১ লাখ ৮৪ হাজার বিনিয়োগ করেন। এ ছাড়া আরও আটজন কয়েক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন।

সম্প্রতি গ্রাহকেরা রুদ্র ফাউন্ডেশনে গিয়ে বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। ১০ নভেম্বর তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু নভেম্বর মাস আসার আগেই তাঁরা কার্যালয় বন্ধ করে আত্মগোপন করেন। সে জন্য গ্রাহকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। পরে জানতে পেরেছেন এক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই সংস্থাটি।

শিক্ষক বকুল আমিন আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা বাদী হয়ে জেলা বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক ১১টি প্রতারণা মামলা করেছি। মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন। আমাদের বিনিয়োগ করা টাকাগুলো উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ বিষয়ে রুদ্র ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রঞ্জু সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টির তদন্তকাজ চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত