এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২২, ০৬: ৫২
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১০: ১৭

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সবচেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। প্রতিবছরই ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাসিন্দাদের। এবারও ঠিক একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। গতকাল বুধবার সকালের মাত্র এক ঘণ্টার ঝড়-বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ফতুল্লার অনেক রাস্তাঘাট ও অলিগলি।

গতকাল ভোরে কালবৈশাখীর সঙ্গে নামে বৃষ্টি। তবে বৃষ্টির প্রকোপ সকালেই কমে যায়। তবে দুপুর পেরিয়ে বিকেল হলেও বৃষ্টির প্রভাব একটুও কমেনি ফতুল্লায়। অলিগলি আর সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানি সরে যাওয়ার পথ না থাকায় এই ভোগান্তি চলে দিনভর। জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হওয়া কর্মজীবীদের মাড়াতে হয়েছে নোংরা পানি। যাঁরা রিকশায় জলাবদ্ধ সড়ক অতিক্রম করেছেন, তাঁদের গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত অর্থ। জলাবদ্ধতার সুযোগে বাড়তি ভাড়া হাঁকেন রিকশাচালকেরা।

দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর, ফতুল্লা স্টেশন রোড, হাজিবাড়ি রোড, উকিলবাড়ি, লালখা, শিয়াচর, সস্তাপুর, রামারবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কে জমে আছে পানি। নালা থাকলেও তা ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ। পানি সরছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও পানি জমে রয়েছে। হেঁটে রাস্তা পার হতে গেলে কাদাপানির বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় বাসিন্দাদের। কারখানার শ্রমজীবী মানুষ ভোগান্তি নিয়েই নিজ কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে এমন ভোগান্তি অব্যাহত থাকলেও সমাধান করতে পারেননি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বরং প্রতিবছর ডিএনডি প্রজেক্টের কাজ চলমান বলা হয়। গত বছর বেশ ঘটা করে ফতুল্লার খাল, নালা পরিষ্কার করা হলেও এবার খুব একটা কাজে দেয়নি। বরাবরের মতো এবারও জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয়েছে বাসিন্দাদের।

ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকার বাসিন্দা অন্তরা বলেন, ‘আমাদের বাসার সামনে হাঁটুর কাছাকাছি পানি। নালার ঘন কালো পানি রাস্তায় উঠে এসেছে। এই কারণে অনেকেই ঘর থেকে বের হয়নি। যারা বের হয়েছে, তারা ময়লা পানি মাড়িয়েই চলাচল করেছে। প্রতিবছরই এই সমস্যার মুখোমুখি হই আমরা।’

ফতুল্লা শিয়াচর এলাকার বাসিন্দা আমান উল্লাহ বলেন, ‘রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে চলাচলে অসুবিধা হয়। কয়েক দিন আগেও নালা পরিষ্কার করা হয়েছে। তারপরও পানি সরছে না। আর কীভাবে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাব, জানি না। বছরের পর বছর একই ভোগান্তি নিয়ে চলছি আমরা।’

ফতুল্লার দীর্ঘদিনের এই সমস্যার বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আসলে এই অঞ্চলে মানুষ অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করেছে। তার ওপর এই ডিএনডি এলাকা তুলনামূলক নিচু। তাই পানি সরে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে আছে। এখন ডিএনডি প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে আরও সময় লাগবে এই কাজ শেষ হতে। খাল উদ্ধার করে সেগুলো বাঁধাই করা হচ্ছে। যদি ঠিকভাবে কাজটা করতে পারে, তাহলে মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে নিস্তার পাবে বলে আমরা মনে করি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত