ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
ইসলামের ইতিহাসে বিদায় হজের ভাষণ এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মানুষের অধিকার ও মুক্তি নিশ্চিত করতে এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এই ভাষণের তাৎপর্য অনস্বীকার্য। হজ ফরজ হওয়ার পর মহানবী (সা.) দশম হিজরিতেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র হজ পালন করেন। এ হজ ইতিহাসে বিদায় হজ নামে পরিচিতি লাভ করে। কারণ, এর পরের বছরই মহানবী (সা.) নশ্বর পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। হাদিসে এসেছে, কাতাদা (রহ.) বর্ণনা করেন: আমি আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) কয়বার হজ করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘একবার।’ (বুখারি: ১৭৭৮)
বিদায় হজ চলাকালে, ৯ জিলহজ বিকেলে আরাফাতের ময়দানে এবং ১০ জিলহজ কোরবানির সময় লক্ষাধিক সাহাবির সামনে কয়েকবার বক্তব্য পেশ করেন মহানবী (সা.)। এই বক্তব্যগুলোই ইতিহাসের পাতায় বিদায় হজের ভাষণ হিসেবে স্থান করে নেয়। মহানবী (সা.)-এর দৃঢ় আশঙ্কা ছিল—এটিই তাঁর জীবনের সর্বশেষ হজ এবং তাঁর জীবদ্দশায় মুসলিমদের সর্বশেষ বিশ্ব সম্মেলন। তাই জীবনসায়াহ্নে দাঁড়িয়ে জাতির সামনে ইসলামের সারাংশ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন তিনি। ঐতিহাসিক এ ভাষণ মহানবী (সা.)-এর নবীজীবনের উপসংহার এবং মানবজাতির মুক্তির সনদ।
সেদিন ভাষণ শেষে ভাবের আতিশয্যে তিনি নীরব হয়ে যান। ঐশী আলোয় আলোকদীপ্ত হয়ে ওঠে তাঁর চেহারা মোবারক। তখনই নাজিল হয় পবিত্র কোরআনের আয়াত—‘আজ তোমাদের দীন পূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের ওপর আমার নেয়ামত পূর্ণ করে দিলাম। ইসলামকেই তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ (সুরা মায়েদা: ৩)
সহিহ মুসলিমে এসেছে, জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সা.) লোকদের উদ্দেশে দেওয়া সেই ভাষণে বললেন, ‘তোমাদের রক্ত এবং তোমাদের সম্পদ তোমাদের জন্য তেমন মর্যাদাপূর্ণ—যেমন তা তোমাদের এই দিনে, তোমাদের এই মাসে এবং তোমাদের এ শহরে মর্যাদাপূর্ণ। সাবধান! জাহিলি যুগের সকল অপসংস্কৃতি আমার পদতলে। জাহিলি যুগের রক্তপণের দাবিও বাতিল। আমি সর্বপ্রথম আমাদের বংশের রবিআ ইবনে হারিসের ছেলের রক্তপণ বাতিল করছি। সে শৈশবে বনু সাআদে দুগ্ধপোষ্য ছিল, হুজাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে। জাহিলি যুগের সুদও বাতিল। আমি সর্বপ্রথম আমাদের বংশের আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের সুদ বাতিল করছি। তার সমস্ত সুদ বাতিল।
নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালেমার মাধ্যমে তাদের নিজেদের জন্য হালাল করে নিয়েছ। তোমাদের প্রতি তাদের কর্তব্য হলো, তারা যেন তোমাদের ঘরে তোমাদের অপছন্দের লোকদের স্থান না দেয়। এমনটি করলে তাদের মৃদু শাস্তি দাও। আর তোমাদের কর্তব্য হলো, তাদের ন্যায়সংগত ভরণপোষণ ও পোশাক-পরিচ্ছদ নিশ্চিত করা। তোমাদের জন্য আমি একটি বস্তু রেখে যাচ্ছি, যা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না; তা হলো পবিত্র কোরআন।’ এরপর বললেন, ‘আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তোমরা কী বলবে?’ তাঁরা বললেন, ‘আমরা সাক্ষ্য দেব—আপনি আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন, আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন।’ তারপর তর্জনী আকাশের দিকে তুলে লোকদের ইশারা করে বললেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি সাক্ষী থেকো।’ কথাটি তিনবার বললেন।’ (মুসলিম: ৩০০৯)
মহানবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে মানুষে-মানুষে খুনোখুনি বন্ধ করতে বলেন। সুদের কুফল, বর্ণবৈষম্যের ভয়াবহতা এবং স্বজনপ্রীতির বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেন। জাহিলি যুগের কুপ্রথা ও মন্দ মানসিকতা পরিহার করার প্রতি বিশেষ জোর দেন। নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। সাম্যের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ইনসাফভিত্তিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, শ্রমিকের অধিকার রক্ষা, পরমতসহিষ্ণুতার চর্চার আদেশ দেন।
তাকওয়া ও মানবতাবিরোধী সকল কাজ পরিহার করে একনিষ্ঠ হয়ে কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের কথা বলেন।বিদায় হজের ভাষণে উম্মাহর ঐক্য বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘হে লোকসকল, জেনে রেখো, তোমাদের রব একজন এবং তোমাদের পিতাও একজন। জেনে রেখো, অনারবের ওপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই এবং আরবের ওপরও অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কালোর ওপর সাদার এবং সাদার ওপর কালোরও শ্রেষ্ঠত্ব নেই। মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র মাপকাঠি তাকওয়া ও আল্লাহভীতি। আমি কি তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি?’ উপস্থিত সাহাবিরা বললেন, ‘হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল, আপনি পৌঁছে দিয়েছেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৮৯)
বিদায় হজের ভাষণ মহানবী (সা.)-এর জীবনের এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায় এবং বিশ্বমানবতার মুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এ ভাষণের যথার্থ অনুসরণ আদর্শ সমাজ ও জাতিগঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
ইসলামের ইতিহাসে বিদায় হজের ভাষণ এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মানুষের অধিকার ও মুক্তি নিশ্চিত করতে এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এই ভাষণের তাৎপর্য অনস্বীকার্য। হজ ফরজ হওয়ার পর মহানবী (সা.) দশম হিজরিতেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র হজ পালন করেন। এ হজ ইতিহাসে বিদায় হজ নামে পরিচিতি লাভ করে। কারণ, এর পরের বছরই মহানবী (সা.) নশ্বর পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। হাদিসে এসেছে, কাতাদা (রহ.) বর্ণনা করেন: আমি আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) কয়বার হজ করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘একবার।’ (বুখারি: ১৭৭৮)
বিদায় হজ চলাকালে, ৯ জিলহজ বিকেলে আরাফাতের ময়দানে এবং ১০ জিলহজ কোরবানির সময় লক্ষাধিক সাহাবির সামনে কয়েকবার বক্তব্য পেশ করেন মহানবী (সা.)। এই বক্তব্যগুলোই ইতিহাসের পাতায় বিদায় হজের ভাষণ হিসেবে স্থান করে নেয়। মহানবী (সা.)-এর দৃঢ় আশঙ্কা ছিল—এটিই তাঁর জীবনের সর্বশেষ হজ এবং তাঁর জীবদ্দশায় মুসলিমদের সর্বশেষ বিশ্ব সম্মেলন। তাই জীবনসায়াহ্নে দাঁড়িয়ে জাতির সামনে ইসলামের সারাংশ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন তিনি। ঐতিহাসিক এ ভাষণ মহানবী (সা.)-এর নবীজীবনের উপসংহার এবং মানবজাতির মুক্তির সনদ।
সেদিন ভাষণ শেষে ভাবের আতিশয্যে তিনি নীরব হয়ে যান। ঐশী আলোয় আলোকদীপ্ত হয়ে ওঠে তাঁর চেহারা মোবারক। তখনই নাজিল হয় পবিত্র কোরআনের আয়াত—‘আজ তোমাদের দীন পূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের ওপর আমার নেয়ামত পূর্ণ করে দিলাম। ইসলামকেই তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ (সুরা মায়েদা: ৩)
সহিহ মুসলিমে এসেছে, জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সা.) লোকদের উদ্দেশে দেওয়া সেই ভাষণে বললেন, ‘তোমাদের রক্ত এবং তোমাদের সম্পদ তোমাদের জন্য তেমন মর্যাদাপূর্ণ—যেমন তা তোমাদের এই দিনে, তোমাদের এই মাসে এবং তোমাদের এ শহরে মর্যাদাপূর্ণ। সাবধান! জাহিলি যুগের সকল অপসংস্কৃতি আমার পদতলে। জাহিলি যুগের রক্তপণের দাবিও বাতিল। আমি সর্বপ্রথম আমাদের বংশের রবিআ ইবনে হারিসের ছেলের রক্তপণ বাতিল করছি। সে শৈশবে বনু সাআদে দুগ্ধপোষ্য ছিল, হুজাইল গোত্রের লোকেরা তাকে হত্যা করে। জাহিলি যুগের সুদও বাতিল। আমি সর্বপ্রথম আমাদের বংশের আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের সুদ বাতিল করছি। তার সমস্ত সুদ বাতিল।
নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালেমার মাধ্যমে তাদের নিজেদের জন্য হালাল করে নিয়েছ। তোমাদের প্রতি তাদের কর্তব্য হলো, তারা যেন তোমাদের ঘরে তোমাদের অপছন্দের লোকদের স্থান না দেয়। এমনটি করলে তাদের মৃদু শাস্তি দাও। আর তোমাদের কর্তব্য হলো, তাদের ন্যায়সংগত ভরণপোষণ ও পোশাক-পরিচ্ছদ নিশ্চিত করা। তোমাদের জন্য আমি একটি বস্তু রেখে যাচ্ছি, যা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না; তা হলো পবিত্র কোরআন।’ এরপর বললেন, ‘আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তোমরা কী বলবে?’ তাঁরা বললেন, ‘আমরা সাক্ষ্য দেব—আপনি আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন, আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন।’ তারপর তর্জনী আকাশের দিকে তুলে লোকদের ইশারা করে বললেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি সাক্ষী থেকো।’ কথাটি তিনবার বললেন।’ (মুসলিম: ৩০০৯)
মহানবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে মানুষে-মানুষে খুনোখুনি বন্ধ করতে বলেন। সুদের কুফল, বর্ণবৈষম্যের ভয়াবহতা এবং স্বজনপ্রীতির বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেন। জাহিলি যুগের কুপ্রথা ও মন্দ মানসিকতা পরিহার করার প্রতি বিশেষ জোর দেন। নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। সাম্যের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ইনসাফভিত্তিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, শ্রমিকের অধিকার রক্ষা, পরমতসহিষ্ণুতার চর্চার আদেশ দেন।
তাকওয়া ও মানবতাবিরোধী সকল কাজ পরিহার করে একনিষ্ঠ হয়ে কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের কথা বলেন।বিদায় হজের ভাষণে উম্মাহর ঐক্য বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘হে লোকসকল, জেনে রেখো, তোমাদের রব একজন এবং তোমাদের পিতাও একজন। জেনে রেখো, অনারবের ওপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই এবং আরবের ওপরও অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। কালোর ওপর সাদার এবং সাদার ওপর কালোরও শ্রেষ্ঠত্ব নেই। মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র মাপকাঠি তাকওয়া ও আল্লাহভীতি। আমি কি তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি?’ উপস্থিত সাহাবিরা বললেন, ‘হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল, আপনি পৌঁছে দিয়েছেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৮৯)
বিদায় হজের ভাষণ মহানবী (সা.)-এর জীবনের এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায় এবং বিশ্বমানবতার মুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এ ভাষণের যথার্থ অনুসরণ আদর্শ সমাজ ও জাতিগঠনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
১০ বছর ধরে নিজের আত্মজীবনী লিখেছেন বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। নাম দিয়েছেন ‘রবি পথ’। অবশেষে প্রকাশ হচ্ছে তাঁর আত্মজীবনী। আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয়েছে রবি পথের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
৩ ঘণ্টা আগেপর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে