রিমন রহমান, রাজশাহী
একেবারে কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। কৃষকের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়েও শাখা আছে ব্যাংকটির। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কৃষকেরা তাঁদের ব্যাংক হিসেবে রাকাবকেই চেনেন। উত্তরাঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে ব্যাংকটির অবদান স্মরণে রাখার মতো। কৃষকের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই ব্যাংকটি একীভূত করে দেওয়ার আয়োজন চলছে ডুবতে বসা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) সঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত রাকাবের কর্মীরা। কৃষকেরাও আছেন দুশ্চিন্তায়।
বর্তমানে রাকাবের গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। এর মধ্যে ব্যাংকে আমানত রাখা গ্রাহক আছেন প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ। আর ব্যাংকটি থেকে ঋণ নেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। চলতি অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮৩টি শাখা থেকে রাকাব ১০৩ কোটি ৩ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির উন্নতি ও মূলধন ঘাটতি কাটিয়ে উঠে আগামী জুনে মুনাফায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে ব্যাংকটি।
এ অবস্থায় বিকেবির সঙ্গে রাকাবকে এক করে দেওয়ার পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন গ্রাহক ও বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, বিকেবির সঙ্গে একীভূত করা হলে রাকাবের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। কৃষকেরা এখন যেভাবে ঘরের কাছে সেবা পাচ্ছেন, তা থেকে বঞ্চিত হবেন। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে উত্তরের কৃষিতে। তাই তাঁরা ব্যাংকটিকে স্বতন্ত্র রাখার পক্ষেই মত দিচ্ছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ হোসেন বলছেন, ‘রাকাব ও বিকেবিকে একীভূত করলে ম্যানেজমেন্ট শক্তিশালী হতে পারে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিকগুলোই বেশি। এর ফলে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতি অনেকটা পিছিয়ে পড়বে। কারণ বিকেবি তো উত্তরবঙ্গভিত্তিক ব্যাংক নয়। এর ফলে উত্তরবঙ্গ অনেকটা অবহেলিত হতে পারে। রাকাবেরও অনেক শাখা দুর্বল, পারফরম্যান্স কম। তারপরও কৃষকের স্বার্থে খোলা রাখা হয়েছে। একীভূত হলে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া শাখাগুলোতে ফান্ড চ্যানেলিং খুব কম হবে।’
এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘দুটি ব্যাংক একীভূত হলে এই অঞ্চলটা বিকেবির দায়ের মধ্যে পড়ে যাবে। অন্য অঞ্চলের তুলনায় এই অঞ্চলে “ক্যাশ ফ্লো (নগদ প্রবাহ)” কম হবে। কারণ ব্যাংকের নিয়মই হলো যে অঞ্চলে পারফরম্যান্স ভালো হবে, সেই অঞ্চলে “ক্যাশ ফ্লো” বেশি হবে। এতে উত্তরবঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।’
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ভেঙেই রাকাব প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময় রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের যেসব শাখা ছিল, সেগুলোকে রাকাবকে দেওয়া হয়। আর ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিকেবি দেশের অন্য অঞ্চলে কৃষিঋণ বিতরণে কাজ করতে থাকে। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে বড় ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে বিকেবি। ঋণপত্র খোলা ও বড় ঋণ বিতরণ চালুর মধ্য দিয়ে মূল লক্ষ্য থেকে সরে আসা বিকেবি নিজের জন্য বিপদ ডেকে আনে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিকেবির পরিশোধিত মূলধন ৯০০ কোটি টাকা। ১ হাজার ৩৮টি শাখায় গ্রাহকের আমানত রয়েছে ৪০ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। এই আমানত থেকে ৩২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে, যা মোট ঋণের ২০ শতাংশ। গত বছর পর্যন্ত মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ১৬ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
রাকাবের পরিস্থিতিও খুব ভালো বলা যায় না। রাকাবের পরিশোধিত মূলধন ৮২৪ কোটি টাকা। এই ব্যাংকে কৃষকের আমানতের পরিমাণ ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকটি ৭ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে বসে আছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে। খেলাপি ঋণের হার ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ব্যাংকটি ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। তবে রাকাব কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী জুন থেকেই ব্যাংকটি মুনাফায় ফিরবে। এখন কোনো দুর্বলতা থাকলে কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে আরও শক্তিশালী করা উচিত। কিন্তু বিকেবির সঙ্গে একীভূত করার বিপক্ষে মত তাঁদের।
রাকাবের এমডি নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘রাকাব অনেক স্ট্রং ব্যাংক। বিকেবির সঙ্গে একীভূত হলে রাকাবেরই ক্ষতি হবে। আমার বাড়ি কুমিল্লায়। সোনালী ব্যাংক থেকে রাকাবে এসেছি। কিন্তু দেখছি, উত্তরবঙ্গের কৃষিতে রাকাবের যে অবদান, সেটা অনেক বড়। এটা টাকার অঙ্কে পরিমাপযোগ্য না। কিন্তু আমরা সরকারি চাকরি করি। সরকার সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষতিটা মানতেই হবে।’
জানা গেছে, রাকাবকে বিকেবির সঙ্গে একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ নিয়ে ৩ এপ্রিল গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্রুতই এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
বিকেবির সঙ্গে রাকাবকে একীভূত করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে দুইবার বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত রাজশাহীর কৃষক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘ধরুন আপনি সুস্থ মানুষ। আপনার কাঁধে একটা অসুস্থ মানুষকে তুলে দিলাম। তাহলে আপনার স্বাভাবিক চলার গতি থাকবে না। একইভাবে রাকাবের ওপর বিকেবির মতো লোকসানি ব্যাংককে তুলে দিলে রাকাবেরও স্বাভাবিক অগ্রযাত্রা হ্রাস পাবে। একজন সাধারণ কৃষক হিসেবে আমি এটাই বুঝি। এরপরও সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে, এখন আমরা সহজেই ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যেতে পারি। দুই ব্যাংক একীভূত হলে এটা হবে না। তখন প্রধান কার্যালয়ের জন্য যেতে হবে ঢাকায়।’
তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হওয়ায় সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নাম প্রকাশ করে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। তারপরও এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন রাকাবের বিভাগীয় নিরীক্ষা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান সরকার। রাকাবের জন্ম ও রাজশাহীতে প্রধান কার্যালয় স্থাপনসহ ব্যাংকের নানা বিষয় খুব কাছ থেকেই দেখেছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর লেখায় বলেছেন, ‘এত বড় একটা সিদ্ধান্ত আরও সময় নিয়ে নেওয়া উচিত। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সম্ভাব্যতা যাচাই করা দরকার।’
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে রাকাবের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, রাকাবই এখন দেশের একমাত্র ব্যাংক, যারা কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলায় এখন এর শাখা রয়েছে ৩৮৩টি। কোনো কোনো ইউনিয়নে দুটি করেও শাখা আছে। কোথাও কোনো দুর্বলতা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়। বিকেবি এসব সিস্টেমের অনেক দূরে। বিকেবির সঙ্গে রাকাবকে একীভূত করলে রাকাব ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
একেবারে কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। কৃষকের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়েও শাখা আছে ব্যাংকটির। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কৃষকেরা তাঁদের ব্যাংক হিসেবে রাকাবকেই চেনেন। উত্তরাঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে ব্যাংকটির অবদান স্মরণে রাখার মতো। কৃষকের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই ব্যাংকটি একীভূত করে দেওয়ার আয়োজন চলছে ডুবতে বসা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) সঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত রাকাবের কর্মীরা। কৃষকেরাও আছেন দুশ্চিন্তায়।
বর্তমানে রাকাবের গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। এর মধ্যে ব্যাংকে আমানত রাখা গ্রাহক আছেন প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ। আর ব্যাংকটি থেকে ঋণ নেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। চলতি অর্থবছরের প্রথম দিন থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮৩টি শাখা থেকে রাকাব ১০৩ কোটি ৩ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির উন্নতি ও মূলধন ঘাটতি কাটিয়ে উঠে আগামী জুনে মুনাফায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে ব্যাংকটি।
এ অবস্থায় বিকেবির সঙ্গে রাকাবকে এক করে দেওয়ার পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন গ্রাহক ও বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, বিকেবির সঙ্গে একীভূত করা হলে রাকাবের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। কৃষকেরা এখন যেভাবে ঘরের কাছে সেবা পাচ্ছেন, তা থেকে বঞ্চিত হবেন। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে উত্তরের কৃষিতে। তাই তাঁরা ব্যাংকটিকে স্বতন্ত্র রাখার পক্ষেই মত দিচ্ছেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ হোসেন বলছেন, ‘রাকাব ও বিকেবিকে একীভূত করলে ম্যানেজমেন্ট শক্তিশালী হতে পারে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিকগুলোই বেশি। এর ফলে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতি অনেকটা পিছিয়ে পড়বে। কারণ বিকেবি তো উত্তরবঙ্গভিত্তিক ব্যাংক নয়। এর ফলে উত্তরবঙ্গ অনেকটা অবহেলিত হতে পারে। রাকাবেরও অনেক শাখা দুর্বল, পারফরম্যান্স কম। তারপরও কৃষকের স্বার্থে খোলা রাখা হয়েছে। একীভূত হলে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া শাখাগুলোতে ফান্ড চ্যানেলিং খুব কম হবে।’
এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ‘দুটি ব্যাংক একীভূত হলে এই অঞ্চলটা বিকেবির দায়ের মধ্যে পড়ে যাবে। অন্য অঞ্চলের তুলনায় এই অঞ্চলে “ক্যাশ ফ্লো (নগদ প্রবাহ)” কম হবে। কারণ ব্যাংকের নিয়মই হলো যে অঞ্চলে পারফরম্যান্স ভালো হবে, সেই অঞ্চলে “ক্যাশ ফ্লো” বেশি হবে। এতে উত্তরবঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।’
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ভেঙেই রাকাব প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময় রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের যেসব শাখা ছিল, সেগুলোকে রাকাবকে দেওয়া হয়। আর ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিকেবি দেশের অন্য অঞ্চলে কৃষিঋণ বিতরণে কাজ করতে থাকে। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে বড় ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে বিকেবি। ঋণপত্র খোলা ও বড় ঋণ বিতরণ চালুর মধ্য দিয়ে মূল লক্ষ্য থেকে সরে আসা বিকেবি নিজের জন্য বিপদ ডেকে আনে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিকেবির পরিশোধিত মূলধন ৯০০ কোটি টাকা। ১ হাজার ৩৮টি শাখায় গ্রাহকের আমানত রয়েছে ৪০ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। এই আমানত থেকে ৩২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে, যা মোট ঋণের ২০ শতাংশ। গত বছর পর্যন্ত মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ১৬ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
রাকাবের পরিস্থিতিও খুব ভালো বলা যায় না। রাকাবের পরিশোধিত মূলধন ৮২৪ কোটি টাকা। এই ব্যাংকে কৃষকের আমানতের পরিমাণ ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকটি ৭ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে বসে আছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে। খেলাপি ঋণের হার ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ব্যাংকটি ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। তবে রাকাব কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী জুন থেকেই ব্যাংকটি মুনাফায় ফিরবে। এখন কোনো দুর্বলতা থাকলে কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে আরও শক্তিশালী করা উচিত। কিন্তু বিকেবির সঙ্গে একীভূত করার বিপক্ষে মত তাঁদের।
রাকাবের এমডি নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘রাকাব অনেক স্ট্রং ব্যাংক। বিকেবির সঙ্গে একীভূত হলে রাকাবেরই ক্ষতি হবে। আমার বাড়ি কুমিল্লায়। সোনালী ব্যাংক থেকে রাকাবে এসেছি। কিন্তু দেখছি, উত্তরবঙ্গের কৃষিতে রাকাবের যে অবদান, সেটা অনেক বড়। এটা টাকার অঙ্কে পরিমাপযোগ্য না। কিন্তু আমরা সরকারি চাকরি করি। সরকার সিদ্ধান্ত নিলে ক্ষতিটা মানতেই হবে।’
জানা গেছে, রাকাবকে বিকেবির সঙ্গে একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ নিয়ে ৩ এপ্রিল গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্রুতই এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
বিকেবির সঙ্গে রাকাবকে একীভূত করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে দুইবার বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত রাজশাহীর কৃষক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘ধরুন আপনি সুস্থ মানুষ। আপনার কাঁধে একটা অসুস্থ মানুষকে তুলে দিলাম। তাহলে আপনার স্বাভাবিক চলার গতি থাকবে না। একইভাবে রাকাবের ওপর বিকেবির মতো লোকসানি ব্যাংককে তুলে দিলে রাকাবেরও স্বাভাবিক অগ্রযাত্রা হ্রাস পাবে। একজন সাধারণ কৃষক হিসেবে আমি এটাই বুঝি। এরপরও সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে, এখন আমরা সহজেই ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যেতে পারি। দুই ব্যাংক একীভূত হলে এটা হবে না। তখন প্রধান কার্যালয়ের জন্য যেতে হবে ঢাকায়।’
তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হওয়ায় সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নাম প্রকাশ করে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। তারপরও এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন রাকাবের বিভাগীয় নিরীক্ষা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান সরকার। রাকাবের জন্ম ও রাজশাহীতে প্রধান কার্যালয় স্থাপনসহ ব্যাংকের নানা বিষয় খুব কাছ থেকেই দেখেছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর লেখায় বলেছেন, ‘এত বড় একটা সিদ্ধান্ত আরও সময় নিয়ে নেওয়া উচিত। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সম্ভাব্যতা যাচাই করা দরকার।’
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে রাকাবের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, রাকাবই এখন দেশের একমাত্র ব্যাংক, যারা কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলায় এখন এর শাখা রয়েছে ৩৮৩টি। কোনো কোনো ইউনিয়নে দুটি করেও শাখা আছে। কোথাও কোনো দুর্বলতা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়। বিকেবি এসব সিস্টেমের অনেক দূরে। বিকেবির সঙ্গে রাকাবকে একীভূত করলে রাকাব ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে