ছোট হিসাবে বড় ঋণের সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০৬: ৫৫
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ০৩

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের (সিজিএস) আওতায় বিনা জামানতে ঋণ পাবেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা। এ স্কিমের আওতায় প্রান্তিক, ভূমিহীন এবং ক্ষুদ্র আয়ের মানুষের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ করা হবে। কম আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে এ ঋণসুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

স্বল্প আয়ের মানুষেরা ১০ টাকা, ৫০ টাকা এবং ১০০ টাকার বিনিময়ে হিসাব চালু করে ৩ লাখ টাকা ঋণ পেতে পারেন। এমনকি ১০ টাকার হিসাবধারী স্কুলছাত্র-ছাত্রীদেরও এ ঋণসুবিধার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঋণ পরিশোধের প্রাথমিক সময়সীমা ধরা হয়েছে তিন বছর। তবে প্রয়োজনে এ সময় বর্ধিত করার বিধান রাখা হয়েছে। এ জন্য অতিরিক্ত ফি বা চার্জও পরিশোধ করতে হবে না ঋণগ্রহীতাদের।

এদিকে এই স্কিম বাস্তবায়ন করতে ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে ২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে কাজ অব্যাহত রেখেছে ক্রেডিট স্কিম গ্যারান্টি শাখা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম শাখা থেকে জানা গেছে, স্বল্প আয়ের তথা ভূমিহীন কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতাভুক্ত হিসাবধারীরা এ স্কিমের আওতায় ৩ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন। এ ঋণ পেতে তাঁদের কোনো জামানতের প্রয়োজন হবে না। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টি স্কিম সুবিধা নিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে গ্যারান্টি ফি পরিশোধ করবে। আর এ গ্যারান্টির জন্য ব্যাংক কোনো ধরনের চার্জ আদায় করতে পারবে না।

সিজিএস থেকে আরও জানা যায়, ঋণ দিতে আগ্রহী ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের যেকোনো সময় এ ঋণ প্রদানে সিজিএসের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে। স্কিমটির আওতায় মোট ঋণ বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গ্যারান্টির সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ক্যাপ সীমানা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই গ্যারান্টি ক্যাপের আওতায় ঋণগ্রহীতার ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ প্রদান করবে স্কিম কর্তৃপক্ষ। আর ঋণ পুনঃ তফসিল বা সময় বৃদ্ধি করার জন্য বর্ধিত গ্যারান্টি ফি প্রদান করতে হবে।

এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের শতকরা ৫ ভাগ খেলাপি ঋণ বিবেচনা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ঋণ গ্যারান্টির ওপর প্রথম বছরের জন্য শতকরা ১ ভাগ, পরের বছরে দশমিক ৫০ ভাগ এবং তৃতীয় বছরে দশমিক ৭৫ ভাগ গ্যারান্টি ফি প্রদান করবে। কোনো ব্যাংক স্কিমের শর্ত ভঙ্গ করলে কারণ দর্শানো ছাড়াই চুক্তি বাতিল করার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া স্কিমের আওতায় গ্যারান্টিজনিত কেনা ঋণ অথবা বিনিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করা যাবে। আর পুনঃ তফসিল করার পরেও যদি ঋণ আদায় না হয়, তবে খেলাপি ঋণের গ্যারান্টির বিপরীতে অর্থ দাবি করা যাবে। আর ঋণ আদায়ের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও যখন ঋণ আদায় সম্ভব হবে না, তখন আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গ্যারান্টির বিপরীতে দাবি করা অর্থ পেতে পারে।

এর আগে, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে তিন হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হবে নারীদের মাঝে। গত ২৮ অক্টোবর এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, করোনার নেতিবাচক প্রভাব থেকে নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উত্তরণে নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত