Ajker Patrika

সপ্তাহ ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৩ টাকা

রাশেদুজ্জামান, মেহেরপুর
আপডেট : ১৫ মে ২০২২, ১২: ৪১
সপ্তাহ ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৩ টাকা

মেহেরপুরের পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে তিন দফায়। ২০ টাকার পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৩ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি বন্ধ হওয়ার অজুহাতে দেশের স্থলবন্দরগুলোতে প্রতিনিয়তই বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজের দাম। অথচ কৃষকের ঘরে থাকা অবস্থায় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা কেজি দরে।

অধিক লাভের আশায় ভারতীয় সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের আবাদ করে থাকেন মেহেরপুরের কৃষকেরা। কারণ এ জাতের পেঁয়াজের ফলন হয় বিঘাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ মণ। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত থাকে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। প্রতিবছর এ সময়ে পেঁয়াজ আমদানি না করার দাবি থাকে কৃষকদের। এরপরও পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ফলে চলতি মৌসুমে কৃষকেরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ১০ টাকার নিচে। আবার অনেকেই জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন করে ফেলে দিয়েছেন। ফলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হয় কৃষকদের।

এদিকে কৃষি বিপণন কেন্দ্রের তথ্য বলছে, কৃষকদের এক কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৭ টাকা। যা বিঘাপ্রতি খরচ দাঁড়ায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এখন কৃষকদের ঘরে কোনো পেঁয়াজ নেই। যা আছে, তা ব্যবসায়ীদের ঘরে।

মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের কৃষক রকিবুল গাজী বলেন, ‘কৃষকের ঘরে যখন পেঁয়াজ থাকে তখন দাম থাকে না। ব্যবসায়ীদের হাতে গেলেই বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এভাবে আর কত বছর? চলতি মৌসমে ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলাম। প্রথম দিকে ভালো দাম পেয়েছিলাম। পরে দাম কমায় জমি থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন করে ফেলে দিতে হয়েছে। প্রতি মৌসুমে দাবি থাকে, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যেন পেঁয়াজ আমদানি না করা হয়। অথচ তা কখনো কার্যকর হয় না।’

একই গ্রামের কৃষক আরোজ আলী বলেন, ‘সার, কীটনাশক, সেচ, পরিবহন, শ্রমিক থেকে শুরু করে প্রতিবছরই উৎপাদনের ব্যয় বাড়ছে। সে দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারও। ৫ বছর আগে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে। আর গত কয়েক বছর পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১০ টাকার নিচে। এভাবে তো আর আবাদ করা যায় না। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী বছর আর পেঁয়াজের আবাদ করব না।’

মেহেরপুর বড়বজারের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ বলেন, ‘চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরের মোকামে গেলেই বাড়তি পেঁয়াজের দাম। ফলে বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (শস্য) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা উৎপাদনের বিষয়টি দেখে থাকি। সেই মোতাবেক এবার পেঁয়াজের ফলনও ভালো হয়েছিল। ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি না করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি। আমদানির বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। দামের বিষয়টি দেখে কৃষি বিপণন কেন্দ্র।’

কৃষি বিপণন কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত মৌসুমে আবেদন করেছিলাম ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি না করার। কয়েক দিন আগে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়ে গেছে। আগামী মৌসুমে আমরা আগে থেকেই চিঠি চালাচালি করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত