জঙ্গল থেকে নবজাতক ও ভারসাম্যহীন নারীকে উদ্ধার

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ০৬
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ১৭

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জঙ্গল থেকে ভারসাম্যহীন এক নারী ও তার সদ্যপ্রসব করা কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত রোববার রাতে উপজেলার বরুঙ্কা গ্রামের জঙ্গল থেকে ওই নারী ও নবজাতককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটিকে বর্তমানে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে দুধ খাওয়ানোসহ সার্বিক পরিচর্যা করছেন সেখানকার দায়িত্বরত নার্সরা।

তবে শিশুটিকে রেখে ওই নারী রোববার দুপুরে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শামছুল আলম বলেন, উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউএনওর সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়ম অনুযায়ী শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত ভারসাম্যহীন ওই নারী ও তার কন্যা শিশুর বাবার পরিচয় খোঁজ পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন।

জানা গেছে, গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার বরুঙ্কা গ্রামের একটি জঙ্গলে শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। পরে সেখান থেকে ওই নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে ওই নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রিনা পাল বলেন, শিশুটিকে আমরা সবাই মিলে পরিচর্যা করছি। পুরোপুরি সুস্থ আছে শিশুটি। শিশুটির মা ভারসাম্যহীন। ওই নারীকে রাতভর ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে দিনের মধ্যভাগে কাউকে না জানিয়েই হাসপাতাল থেকে চলে গেছে। তারপর আর খবর জানি না।

কলুঙ্কা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম জানান, গভীর রাতে বরুঙ্কা গ্রামের একটি জঙ্গল থেকে শিশুর কান্নার শব্দ ভেসে আসতে শুনে একই গ্রামের আল আমিন নামে এক ব্যক্তি। পরে এলাকার লোকজন ওই নারী ও নবজাতককে উদ্ধার করে। পরে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে ওই নারী ও শিশুকে নিয়ে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ফারজানা হক হেনা বলেন, ওই নারী পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্যহীন। নিজের নাম ঠিকানাও বলতে পারে না। তাকে আমাদের এলাকায় এরআগে কেউ কোনোদিন দেখেননি। ওই নারীর সঙ্গে যা হয়েছে তা দুঃখজনক।

মোহনগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ওই নারী ও নবজাতককে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি। ফুটফুটে একটা বাচ্চা, দেখলেই মন ভরে যায়। আমার নিজের তোয়ালে দিয়ে মুড়িয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে নার্সদেরকে অনুরোধ করেছি বাচ্চাটার পরিচর্যা করার জন্য।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার ওসি রাশেদুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে ওই নারী ও নবজাতককে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে। ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। তার বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুল তালুকদার বলেন, শুনেছি অনেক নিঃসন্তান দম্পতি শিশুটিকে দত্তক নেওয়া জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ শামছুল আলম বলেন, শিশুটির পরিচর্যা চলছে। সমাজসো কর্মকর্তা ও ইউএনওর সঙ্গে পরামর্শ করে শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত