বাগদা চিংড়িতে মড়ক কপালে ভাঁজ চাষির

আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০৯: ৫৩

বাগদা চিংড়িতে মড়ক লাগায় মাথায় হাত পড়েছে সাতক্ষীরার চাষিদের। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠলেও মৎস্য বিভাগের দাবি, ঘেরে পানি কমে যাওয়ায় দাবদাহে মরে যাচ্ছে চিংড়ি। যেকোনো উপায়ে ঘেরে অন্তত তিন থেকে পাঁচ ফুট পানি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মৎস্য কর্মকর্তারা।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৫৫ হাজার ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষ হয়েছে, যার আয়তন ৭০ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ঘেরের চিংড়ি মরে যাচ্ছে। এতে অন্তত ৫০ হাজার চাষি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। যদিও এ বছর জেলায় বাগদা চিংড়ির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩২ হাজার টন।

সাদা সোনা খ্যাত বাগদা জেলার প্রধান অর্থকরী চাষ। মাছ বিদেশে রপ্তানি কমে যাওয়ায় গত বছর দাম পাননি চাষিরা। এবারও চাষিরা ভালো ফলনের আশায় ঘেরে ছেড়েছেন বাগদার পোনা। তবে এবার বিধিবাম। রেণু ছাড়ার পরে মাছ একটু বড় হতে না হতেই মারা যাচ্ছে। সপ্তাহখানেক ধরে চলছে এ অবস্থা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার এল্লারচর এলাকায় সরেজমিনে গত রোববার দেখা যায়, ঘেরের আটুনিতে (মাছের ঘুনি) যেসব বাগদা মাছ ধরা পড়ছে, তার অর্ধেকই মরা।

মাছ মারা যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে ঘেরমালিক হাজী রফিক জানান, ভাইরাসযুক্ত পোনা ঘেরে ছাড়ার কারণে মারা যাচ্ছে। বাগদা মৌসুমের শুরুতে মড়ক লাগায় চিংড়ি চাষে ধস নামবে এবার।

আরেক ঘেরমালিক সেলিম সরদার জানান, বাগদা মড়কের প্রতিকার হলো জোয়ার-ভাটা। নদীতে যদি জোয়ার-ভাটা থাকে, তবে মাছ মরবে না। এ এলাকার ঘেরের পানি ৮-১০ বছর আগের। আমরা নতুন পানি পাচ্ছি না।

আশাশুনির গুনাগরকাটি এলাকার ঘেরমালিক আফসার উদ্দীন জানান, দুই বছর আগে যে মাছ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা ৪৭০ টাকা। একদিকে মাছের মড়ক, অন্যদিকে দাম নেই। জেলার বেশির ভাগ ঘেরমালিকের পথে বসার অবস্থা।

জেলা চিংড়িচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, ‘চিংড়ির সুদিন ফেরাতে সাতক্ষীরায় সরকারি উদ্যোগে হ্যাচারি স্থাপন ও রপ্তানির বিকল্প বাজার খুঁজতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ভাইরাসের কারণে চিড়িং মারা যাচ্ছে, এ কথা পুরোপুরি সত্য নয়। মাছ মারা যাওয়ার মূল কারণ, ঘেরের পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়া। তিনি ঘেরে তিন থেকে পাঁচ ফুট পানি রাখার পরামর্শ দেন চাষিদের। রেণুর ভাইরাস পরীক্ষার বিষয়ে তিনি জানান, ভাইরাস পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরায় একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। ল্যাব স্থাপনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত