Ajker Patrika

সুবর্ণচরে সুপেয় পানির সংকট

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৩৩
সুবর্ণচরে সুপেয় পানির সংকট

নোয়াখালীর সুবর্ণচরের বিভিন্ন গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বেশির ভাগ নলকূপ দিয়ে পানি উঠছে না। কোথাও কোথাও গভীর নলকূপেও চাহিদামতো পানি উঠছে না। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় টানা খরায়, পানির স্তর অনেক নিচে নেমে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, গ্রামে নলকূপ থাকলেও সেখানে পানি নেই। নলকূপের হাতল চেপেও পানি বের করা দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গভীর নলকূপ থেকে মোটেও পানি উঠছে না। অবস্থা প্রকট হয়ে ওঠায় পানির সংকটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন পানির সংকট গত তিন যুগেও দেখা যায়নি বলে জানান তাঁরা। নলকূপে পানি না ওঠায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলার বাসিন্দারা।

গত এক মাস ধরে উপজেলার চরক্লার্ক, পূর্ব চরবাটা, চরবাটা, চরজুবলি এবং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে গভীর নলকূপে পানি শূন্যতার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।

অভিযোগ রয়েছে, সুবর্ণচরে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই চাষাবাদে ব্যবহারের জন্য ২৪৫টি গভীর সেচ পাম্প এবং হাজারখানেক টিউবওয়েল বসায় বিএডিসি। এ পাম্পগুলোর গভীরতা ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ফুট। চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে এসব সুপেয় পানি। যত্রতত্রভাবে এসব গভীর সেচ পাম্প স্থাপন করে পানি তুলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর শুকিয়ে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমন জানান, পানির জন্য মানুষ এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি ছুটছেন। কোথাও গভীর নলকূপে পানি উঠছে সামান্য, আবার কোথাও পানিই উঠছে না।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এ মৌসুমে অন্যান্য ফসল ছাড়া, শুধু ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে খরচ হয়েছে ৪৮ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার কিউসেক পানি। এর মধ্যে মাত্র ৩০ ভাগ পানি ব্যবহার করা হয়েছে উপরিভাগের উৎস থেকে। এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এ অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানি দিয়েই চাষাবাদ করা হয়েছে।’

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহিনুজ্জামান বলেন, ‘এ মাসে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রেকর্ড পরিমাণ নিচে নেমে গেছে। বৃষ্টি না হলে পানির এই সংকট তীব্রতর হবে। ভূগর্ভ থেকে অতিরিক্ত পানি তোলার ফলে পানি কমে গেছে। বৃষ্টি না হলে এই শূন্যতা আরও বাড়বে। এটি দীর্ঘায়িত হলে ভূগর্ভে সমুদ্রের নোনা পানি ঢুকে যেতে পারে। ফলে সুপেয় পানির দীর্ঘমেয়াদি অভাব হতে পারে।’

সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৈতী বিদ্যা এ বিষয়ে বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষায় অপরিকল্পিত গভীর নলকূপের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালানো হবে। কৃষকদের উপরিভাগের পানি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করা হবে।’

অপরিকল্পিত ওই পাম্পগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিএডিসি এবং স্থানীয় প্রশাসন। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বিএডিসি (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন) কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি ক্ষুদ্র সেচ জেলা প্রকৌশলীকে। মোবাইলে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি তাঁকে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সবার সঙ্গে আলোচনা করে, সুপেয় পানি সংকটের সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত