Ajker Patrika

পল্লী বিদ্যুতেই লোডশেডিং দেড় হাজার মেগাওয়াট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৩, ১৫: ২৩
পল্লী বিদ্যুতেই লোডশেডিং দেড় হাজার মেগাওয়াট

দাবদাহের এই সময়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না গ্রামে। গ্রামের মানুষের অভিযোগ, রাতবিরাতে যখন-তখন লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকা এখন দেশের অধিকাংশ গ্রামের নিয়মিত চিত্র।

গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের জন্য হাঁসফাঁস হলেও বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১৩ হাজার ৪১৫ মেগাওয়াট। রাত ৯টায় উৎপাদিত হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। আর দেশে মোট ১৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে লোডশেড দেখানো হয়েছে শূন্য। অর্থাৎ গতকাল দেশের কোথাও কোনো লোডশেডিং ছিল না।

বিদ্যুৎ বিভাগ লোডশেড শূন্য দেখালেও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) তিনজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, চার দিন ধরে শুধু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন এলাকায় গড়ে লোডশেডিং করা হয়েছে দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি। তবে সেটা ধীরে ধীরে কমে আসছে। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে লোকজন এখন ঈদ করতে বাড়িতে চলে যাওয়ায় সেখানে এখন লোড কমে গেছে। ওই লোড এখন গ্রামের দিকে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আমজাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুই-তিন দিন আগেও পল্লী বিদ্যুতে লোডশেডিং ছিল ২ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। গতকাল বেলা একটার দিকে পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন এলাকায় লোডশেডিং ছিল ৭৩১ মেগাওয়াট।

পল্লী বিদ্যুতে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে চাইলে মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘গত বছরও আমাদের বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনে দুর্বলতা ছিল। আমরা সেটা এখন কাটিয়ে উঠেছি। এখন লোডশেডিং হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, সরকার আমাদের বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। গ্রামে বিদ্যুতের সমস্যা থাকলেও শহরের মানুষ কিন্তু ভালোই বিদ্যুৎ পাচ্ছে।’ 
সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সেচকাজ স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার তাড়িয়াপাড়া গ্রামের সেচপাম্পের মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, তাঁর সেচপাম্পের অধীনে প্রায় ২৫ বিঘা জমি রয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০-১১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। এ কারণে প্রতিটি জমিতে সেচ দেওয়া যায় না। পানির অভাবে বেশ কয়েক বিঘা জমির ধান নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপ সিংহ বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিতে না পারায় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা আছে।নুরুল ইসলামের অভিযোগ, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। প্রতিদিন লোডশেডিং করা হচ্ছে ১৪-১৫ ঘণ্টা করে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আমজাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় আমরা সেচকাজের জন্য বিদ্যুৎ দিতে পারছি না। নওগাঁ ও ময়মনসিংহ এলাকায় আমরা দেখেছি বিদ্যুতের অভাবে বেশ সমস্যা হচ্ছে।’
ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা পড়ার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে যাঁরা অনলাইনে আউটসোর্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত, তাঁদেরও ভোগান্তির শেষ নেই। দিনের বেশির ভাগ সময়ে বিদ্যুৎ না পাওয়ায় মুরগির খামারিরা পড়েছেন বেকায়দায়।

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, দিনের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ এলেও তাতে মোটর চলে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত