পাবনার চাঞ্চল্যকর বিল্লাল মিশরী হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন করার দাবি করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী নেতা আবুল হোসেন ওরফে আবুসহ (২৫) দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় এক আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং ভিকটিমের চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আবুল ওরফে আবু পাবনা সদর উপজেলার হলুদবাড়িয়া পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে এবং অপর আসামি সুমন আলী (২০) একই এলাকার আলাউদ্দিন মোল্লার ছেলে। নিহত বিল্লাল মিশরী আতাইকুলা থানার চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, চলতি বছরের ২৭ জুন সন্ধ্যায় বিল্লাল মিশরী (৩৫) পাবনা শহরের ভাড়া বাসা থেকে মোটরসাইকেলে নিজবাড়ি আতাইকুলার চরপাড়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে চরপাড়া গ্রামের শহিদুল্লাহর চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিল্লাল মিশরীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর তারা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে সর্বহারার স্লোগান দিয়ে বিল্লাল মিশরীর মৃতদেহ টেনেহিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বারোপাকিয়া ব্রিজের পাশে পাটখেতে ফেলে চলে যায়। পরে ২৮ জুন এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে আতাইকুলা থানায় মামলা হয়।

বিল্লাল মিশরী হত্যার ঘটনায় চরমপন্থী সংশ্লিষ্টতার বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ। থানা-পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একটি দল ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানা এলাকায় গত মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি চরমপন্থী নেতা আবুল হোসেন ওরফে আবুকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ওয়ান শুটারগান ও দুইটি গুলি উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রিভলবারটি অপর অভিযুক্ত সুমন আলীর কাছে রেখেছিলেন। পরে সুমন আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত ব্যক্তির মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।

মাসুদ আলম বলেন, বিল্লাল মিশরী ও আবুল একই চরমপন্থী দলের সদস্য ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বিল্লাল মিশরী দল ত্যাগ করে নতুন দল গঠনের চেষ্টা করছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আবুল তাঁর সহযোগীদের নিয়ে বিল্লালকে পরিকল্পিতভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছেন বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।