নগরীর মির্জাপুলে প্রকাশ্যে এক যুবককে ছুরিকাঘাত ও পাথর দিয়ে শরীর থেঁতলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর পেছনে চাঁদা নিয়ে বিরোধ ছিল বলে কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে। গত বুধবার বিকেলে আরিফ হোসেন (৩০) নামের ওই যুবক হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় মামলা হলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী ওয়াহিদুল আলমকে (৩১) দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠিয়েছে পাঁচলাইশ থানা-পুলিশ।

আরিফের পরিবারের দাবি, তিনি ঝুট ব্যবসা করতেন। তাঁর কাছে দাবি করা চাঁদা না দেওয়ায় এই হামলা হয়। অপরদিকে পুলিশ জানায়, চাঁদাবাজির বিরোধ নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তারা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন। স্থানীয় সূত্রেও এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

স্থানীয় কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী ওয়াহিদুল আলম সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চুর অনুসারী। অপর দিকে আহত আরিফ হোসেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চকবাজার ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাঁরা দুজনেই পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা।

আহত আরিফের ভাই কামাল থানায় যে মামলা করেছেন এর এজাহারে অভিযোগ করেন, তাঁর ছোট ভাই আরিফ হোসেন ঝুট কাপড়ের ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত আসামিরা বিভিন্ন সময় ঝুট কাপড় ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা আদায় করে আসছিল। আরিফের কাছে চাঁদা দাবি করলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে তাঁকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন আসামিরা। গত বুধবার বিকেলে আরিফকে পেয়ে অভিযুক্তরা তাঁর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে এজাহারনামীয় প্রধান আসামি ওয়াহিদুল ধারালো ছোরা দিয়ে আরিফের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। পরে আরিফের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নেয়া হয়।

তবে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরোধ নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এলাকায় গার্মেন্টে ঝুট ব্যবসা ও ফুটপাতে চাঁদাবাজি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বাকিটা তদন্তের পর বলা যাবে।’

এ ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র আজকের পত্রিকার কাছে সংরক্ষিত আছে। এতে দেখা যায়, ছুরিকাঘাতে আহত আরিফ রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছেন। এ সময় বড় একটি পাথর দিয়ে আরিফের শরীরের নানা স্থানে আঘাত করছেন ওয়াহিদুল। প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটলেও স্থানীয়দের কেউ তাঁকে ও সহযোগীদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসেননি। পরে আরিফকে মুমূর্ষু অবস্থায় রেখেই ঘটনাস্থল থেকে চলে যান তাঁরা।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গুরুতর আহত আরিফ হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার আরিফের ভাই কামাল হোসেন বলেন, আরিফকে আগের রাতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে।