এক কাপের বেশি চা দেন না ‘পচা মামা’

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ৩২
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ৪২

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকার নাবিরবহর গ্রামের লন্ডন বাজারে মালাই চা বিক্রি করেন নব্বই বছর বয়সী রহিম উদ্দিন। যিনি পচা মামা হিসেবে পরিচিত। তাঁর চায়ের সুনাম এতটাই ছড়িয়ে গেছে যে অন্য জেলা থেকেও চা পান করতে আসেন চা-প্রেমিকেরা। তবে একজনকে এক কাপের বেশি চা দেন না পচা মামা।

৭০ বছর ধরে চা বিক্রি করছেন পচা মামা। ২২ বছর ঢাকার মহাখালীতে তাঁর ওস্তাদ মহসিন মুন্সির সঙ্গে চা বিক্রি করতেন। এরপর ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চা বিক্রি শেষে ৮ বছর ধরে চলে এসেছেন নিজ গ্রামে। তিনি জানান, আগের ধারণা থেকেই নিজের গ্রামে একই কায়দায় চা বিক্রি শুরু করেছেন।

রহিম উদ্দিন ওরফে পচা মামা বলেন, মাত্র ৫০ টাকা আর কয়েকটি চায়ের কাপ পুঁজি নিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন চায়ের ব্যবসা। প্রথমে এক কাপ চা বিক্রি করতেন ১০ পয়সা। এরপর ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, এক টাকা, এভাবে বাড়তে বাড়তে এখন বিক্রি করেন ২০ টাকায়। তিনি এখন প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা করে চা বিক্রি করেন। খরচ বাদে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় হয়।

পচা মামা বলেন, সকালে দোকান করেন না তিনি। প্রতিদিন দোকান চলে বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। তবে, প্রতি সোমবার সপ্তাহে এক দিন বন্ধ রাখা হয়। বড় সসপ্যানে করে মাটির চুলায় একাধারে ৩ ঘণ্টা প্রতিদিন গরম করা হয় আধা মণ গরুর দুধ। চায়ের পুরো কাপে থাকে গরুর দুধ, অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় চায়ের লিকার ও চিনি।

পচা মামা তাঁর এক ছেলে ও মেয়েকে চা বিক্রি করেই বড় করেছেন। এখন ছেলের ঘরের দুই নাতি চাকরি করেন। তবে জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি চা বিক্রি করে যাবেন বলে জানান।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে আসা আশিক খান বলেন, ‘ফেসবুকে দেখে চা খেতে আমরা ১২ জন বাইক নিয়ে এসেছি। চায়ের স্বাদ অসাধারণ। কিন্তু দুঃখের বিষয় এক কাপের বেশি খেতে পারলাম না।’

এক কাপের বেশি চা বিক্রি করতে না পারার বিষয়ে পচা মামা বলেন, ‘এক কাপের বেশি চা দেওয়া আমার ওস্তাদের নিষেধ। এক কোটি টাকা দিলেও আমি একজনকে এক কাপের বেশি চা দেব না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত